আসুন ভাবি - পোস্ট শোকেস

বৃক্ষনাথ কমল চক্রবর্তী

Reading time 6 minute
5
(66)

প্রকৃতির সন্তান মানুষের পক্ষে মাটি ও বৃক্ষের মতো অন্যের হিত সাধনে নিষ্কাম থাকা কঠিন। এনারা সকলে ইমানুয়েল কান্টের নোমেনা কী-কারণে ধরায় এসেছেন অথবা কে পাঠিয়েছেন, ইত্যাদির পরোয়া না করে পাশাপাশি বিরাজ করেন তারা। নিযুত কণাবিশ্বে সক্রিয় নিয়মফেরে ধরায় তাদের বিচরণ ও অবক্ষয় ঘটে থাকে। পরিশেষে অজানায় বিলীন হতে হয়। অন্যরূপ ধারণ করে হয়তো ফেরত আসেন পুনরায়! দুর্বোধ্য! ধরায় নোমেনাদের যাওয়া-আসার সবটাই দুর্বোধ্য!

নোমেনারা প্রত্যেকে একে অন্যের থেকে আলাদা। জড়বস্তু নামধারী যেসব নোমেনাকে জানি, তারা আমাদের থেকে পৃথক। আমাদের দেহে জড়বস্তুর উপাদান সক্রিয়, তা-বলে আমরা জড়বস্তু নই। অ-জড় সত্তা রূপে আমাদের মধ্যে আবার শতেক বিভাজন দেখতে পাই। পশুর অগুন্তি স্বভাব আমরা দেহে ধরেছি। এদিক থেকে আমরাও মানবপশু, তবে অন্য পশুদের থেকে আলাদা করেছি নিজেকে। সরীসৃপ, উভচর, স্তন্যপায়ী যত প্রাণী ধরায় বিরাজ করেছেন বা এখনো করছেন, তাদের কিছু-না-কিছু গুণাবলী আমাদের দেহে সক্রিয়, তথাপি বিষধর সর্প অথবা ল্যাগব্যাগ পায়ে চলাফেরায় অভ্যস্ত মজারু পেঙ্গুইন আমরা নই। বাজপাখিও নই, যদিও বাজপাখির মতো শিকারি হওয়ার গুণ দেহে ধরেছি বেশ! বিচিত্র অভিন্নতা ও ভিন্নতা মিলে আমরা তাই নোমেনা

সকল নোমেনার পরিণতি এই ধরায় অভিন্ন। তারা ভূমিষ্ট হচ্ছেন; সতেজ চারাগাছের মতো তরতর বেড়ে ওঠেন; এবং একদিন ঝরে যেতে হয় শেফালিকার মতো। ঝরে যাওয়ার পরে আবার রূপান্তর ঘটে সবিরাম। গতকাল পরিচিত এক লোক মারা গেছেন। তাৎক্ষণিক মনে হলো,—কালপরশুর মধ্যে তিনি হয়তো নক্ষত্রলোকে গিয়ে মিশবেন। অনতিদিন পরে উঠানের জবা গাছে তাকে ফুটতে দেখলে অবাক হওয়ার কারণ থাকছে না! আকার হতে নিরাকার, নিরাকার থেকে আকার, সেখান থেকে পুনরায় নিরাকার,—জগতের সকল নোমেনার পরিণতি একই কাহিনি বলে চলেছে আজো! আমরা মহাজাগিতক ধূলি;—সেখানে অসীম অজানা ঈশ্বর বিরাজ করেন।

Masanobu Fukuoka; Image Source – Collected; Google Iamge

রূপান্তরের খেলায় যেটুকু আয়ু আমাদের, সেখানে ইচ্ছে করলেই কেউ বৃক্ষ হতে পারবে না। মন চাইল আর মাটির স্বভাব-প্রকৃতি শোষণ করে সর্বংসহা হওয়া অতটা সহজ নয়। ধরায় যত মানুষ এ-পর্যন্ত এসেছেন বা ভবিষ্যতে আসতে থাকবেন… তারা ওই মানুষরূপে লীলাখেলা সেরে অস্ত যাবেন ধরায়। খাপছাড়া কিছু মানুষ তবু সেখানে থেকেই যাবে। তারা নামে মানুষ হলেও, কাজেকর্মে বৃক্ষস্বভাব ধরে দেহে। মাসানোবু ফুকুওকার কথা যেমন মনে পড়ছে তাৎক্ষণিক। জেনভাবে মাথা কামানো কৃষিবিদ প্রাকৃতিক পদ্ধতি অনুসারে ফসলি জমি আবাদে বিশ্বাস করতেন। কাজটি যে-সম্ভব তা তিনি প্রমাণ করেছিলেন।

জাপান দেশের জনর্নিজন পাহাড়ি অঞ্চলে ফুকুওকা গড়ে তুলছিলেন প্রাকৃতিক খামার। এখনো আছে সে-খামার। প্রাকৃতিক চাষাবাদের ট্রেনিং নিতে মানুষ সেখানে ঘুরতে যায়। কোন পদ্ধতির চাষাবাদে মন দিলে মাুনষের পক্ষে প্রকৃতি মায়ের কোলে ফেরত যাওয়া সম্ভব, তার বিস্তারিত ওয়ান স্ট্র রেভিলিউশন শিরোনামে আস্ত একখানা বই লিখে বলে গেছেন ফুকুওকা। পণ্যসভ্যতায় মুনাফালোভী চাষাবাদের বৈনাশিক প্রবৃত্তি থেকে প্রকৃতিবান্ধব আবাদে ফেরত যাওয়ার গুরুত্ব যারা বোঝেন, তাদের জন্য বইটি বৈপ্লবিক। ফসলি জমি আবাদে হাজার বছরের পুরাতন প্রথাগুলার সঙ্গে আধুনিক পদ্ধতির মিলন ও বিচ্ছেদের জায়গা স্পষ্ট পাচ্ছি সেখানে।

ফুকুওকার রচিত বই ও কৃষি খামারের সারকথা হলো,—মানুষকে তার জননীর কাছে ফেরত যেতে হবে। দৃঢ় মুঠোয় তাকে আঁকড়ে ধরতে হবে মায়ের দুধের বাঁট। আঁকড়ে যদি ধরতে পারে, তবে তার মধ্যে মাটির গুণ সঞ্চরিত হওয়া ব্যাপার থাকবে না। মাটির মানুষ হয়ে উঠতে আমরা দেখব তাকে। মাটির গুণাগুণ ও বৃক্ষের স্বভাব সে ধারণ করতে পারবে না এমন নয়, তবে তার আগে তাকে প্রকৃতির মাহাত্ম্য উপলব্ধি করতে হবে। ফুকুওকা তা পেরেছিলেন বলেই হয়তো আর মানুষ থাকেননি;—বৃক্ষস্বভাবে ঘটেছিল দেহের রূপান্তর। এই রূপান্তরের মাহাত্ম্য জগতে অল্প লোক বোঝে।

এরকম আরো আছেন। দেশে-বিদেশে বৃক্ষস্বভাব ও মাটির গুণধারী মানুষের খবর মাঝেমধ্যে কাগজে ছাপা হয়। আমরা বেশ কৌতূহল নিয়ে সেগুলো পাঠ করি। দৈনন্দিন হুতাশুনে জ্বলেপুড়ে শেষ হওয়ার কারণে ভুলে যাই একটু পরে। রক্তারক্তি ও প্রতিশোধের ডিজে পার্টি তো ধরায় সমানে চলছে। কঠিন বাহে, বড়ো কঠিন এই শয়তানী। আমরা গোলকধাঁধায় ঘুরছি। নবাবি আমলে তৈরি ভুলভুলাইয়ার এক-একটি কামরায় পাক খাচ্ছি দেদার! আজব সেই প্রাসাদে কোঠার অন্ত নাই। এক কামরায় টাকা উড়ছে। আরেক কামরা মদ্য-মাংসের হল্লায় গুলজার। এক কামরায় কারা জানি কাদের লাশ নামাচ্ছে। খুনি ঢুকে পড়ছে সাধুর কামরায়। সাধু গিয়ে ঢুকছে খুনির ছেড়ে যাওয়া কামরায়! বোঝা দায় তারা কে কার!

বোঝা দায়! বের হওয়া দায়! গোলকধাঁধায় জন্ম মানুষের;—সেখানে মরণ। জয় গোস্বামীর কবিতাচরণের মতো যেন-বা এই চক্কর : পিদিম জ্বলে, পিদিম চলে, পিদ্দিমে চক্কর/ গুটগুটিয়ে ঘুরে বেড়াই ছোট্ট দিগম্বর। আমরা, ইমানুয়েল কান্টের নোমেনা;—নিরুপায় ঘুরছি গোলকধাঁধায়! বাহির হবো বলে যাত্রা শুরু হয়েছিল একদিন। দিনের শেষে দেখা যাচ্ছে, যেখান থেকে যাত্রা শুরু করেছি, সেখানে ফেরত আসছি বারবার!

Masanobo Fukuoka by Kafil Ahmed; Source – Kafil Ahmed – Topic YTC

গোলকাধাঁধার চক্কর থেকে সংখ্যালঘু যেসব মানুষ বের হতে পারছেন,—তারা আর মানুষ থাকেননি। রূপান্তরিত নোমেনা রূপে ধরায় যাপন করেছেন বা এখনো করছেন অনেকে। ফুকুওকা যেমন আর মানুষ থাকেননি;—ফেরত গিয়েছিলেন ধরিত্রীর এমন এক কোণে, যেখানে রাতের আকাশ স্বচ্ছ কাচের মতো দেখা যায়। ঝিঁঝিপোকার গুঞ্জনের সঙ্গে তাল দিয়া উড়ে জোনাকি। আকাশে অযুত তারা ঝিকিমিকি আলো বিলায়।

মনে পড়ছে, কাচের মতো স্বচ্ছতোয়া রাতের আকাশ দেখার জন্য সকাতর ছিলেন কবি মণীন্দ্র গুপ্ত। জীবন ছিল তাঁর কাছে অক্ষয় মালবেরি। মালবেরি মানে হচ্ছে তুঁতফল। আহা তুঁতফল। পাকা টসটসা ডালিমদানার মতো লাল তুঁতফল! মণীন্দ্র গুপ্ত তুঁতফলে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। এরকম আরো তুঁতফল আমাদের চারপাশে আছেন। গোলকধাঁধায় ঘুরপাক খাওয়ার চক্করে আমরা তাদেরকে দেখেও দেখতে পাই না। যদি দেখতে পেতাম, তাহলে কমল চক্রবর্তীকে ঠিক মনে পড়ত আমাদের।

কমল চক্রবর্তী কবি। ভিন্ন স্বাদের গদ্য ও গল্প-উপন্যাস বিরচনে এক কুশলী নাবিক। লিটল ম্যাগাজিনে দুহাত খুলে লিখতে থাকা কবি। কৌরব লিটলম্যাগে আগাগোড়া সংযুক্তদের একজন। এই-যে তাঁর কথা মনে আসেনি চট করে, বেমালুম ভুল মেরে বসেছিলাম ফুটবলঈশ্বর দিয়েগো মারাদোনাকে বাংলা ভাষায় সবাক করে তোলা কারিগরের নামখানা!—নিজের এই বিস্মরণের জন্য মনস্তাপ জাগছে এখন! গত বছর দেহ রেখেছিলেন কমল চক্রবর্তী। বাংলাদেশে সরকার পতনের টালমাটাল সময়ে ধরাকে বিদায় বলেছিলেন কমল। সংবাদটি কানে আসা সত্ত্বেও কেন জানি ভিতরটা তাৎক্ষণিক মোচড় দিয়ে ওঠেনি! কারণ ওই রক্তারক্তির উৎসবে নিহিত ছিল। দেশজুড়ে প্রতিহিংসার ডিজে পার্টি সেই-যে শুরু হলো, এখনো তার রেশ কাটেনি! কমল চক্রবর্তীকে সুতরাং নিরলে বসে ইয়াদ করার মেজাজ ছিল না।

আরো বড়ো কারণ যদি বলি, সেটি কমল চক্রবর্তী স্বয়ং। তিনি তো ভাই অনেকদিন ধরে আর মানুষ ছিলেন না! হিজড়াদের নিয়ে ব্রহ্মভার্গব পুরাণ শিরোনামে গ্র্যান্ড ন্যারেটিভ লিখেছেন। তাঁর হাত দিয়ে গল্প-কবিতা বের হয়েছে নিরবচ্ছিন্ন স্রোতের মতো। আরো কত বিচিত্র কাজে হাত লাগিয়েছেন জীবনভোর। লিটমলম্যাগ কৌরবকে অনন্যতা দিতে রেখেছেন ভূমিকা। প্রিয় সেই মানুষটি আস্তে-আস্তে মানুষ থেকে বৃক্ষে পরিণত হলেন! তাঁর ঈশ্বর ছিল বৃক্ষ, আর তিনি বৃক্ষনাথ। বৃক্ষনাদও বলা যেতে পারে। জগতের সূচনাধ্বনিকে ব্রহ্মনাদ বলে আমরা জানি। কমল চক্রবর্তী বিগত ত্রিশ বছর ক্রমাগত ওই নাদকে ধরতে মরিয়া ছিলেন। এমন মানুষকে আমাদের পক্ষে স্মরণে রাখা অসুবিধার।

Kamal Chakraborty; Image Source – Collected; Google Image

কমল চক্রবর্তীর মধ্যে মানুষ যতটা বা যে-পরিমাণে ছিল, তার অধিক মূর্ত হয়েছিল অরণ্যে রূপান্তরের বাসনা। সেই বাসনার চক্করে বিরানপ্রায় পাহাড়ি ভূমিতে গড়ে তুললেন নিবিড় এক বনভূমি। ভাবা যায়! জগতে বৃক্ষপ্রেমী মানুষের অভাব নেই। শখের বৃক্ষপ্রেমী বিস্তর রয়েছেন ধরায়। টাকা কামানোর মতলবে বনায়নে হাত দেওয়া বৃক্ষপ্রেমী হরেদরে চোখে পড়বে। পরিবেশ বাঁচাতে রাস্তার ধারে সারি-সারি বৃক্ষ জন্ম দিতে একরোখার সংখ্যাও কম নয়। তারা সকলে যে-যার জায়গা থেকে অর্ধেক মানব অর্ধেক বৃক্ষ। কমলের পুরো দেহই ছিল বৃক্ষ। তিনি বৃক্ষমানব। না ভুল বলছি,—কমল চক্রবর্তী ছিলেন অরণ্যমানব।

কৌরবসেনা কমলের দেহখানা আস্তেধীরে অরণ্যে পরিণত হয়েছিল। পাহাড়ঘেরা যে-অঞ্চলে তিনি ও কৌরববন্ধুরা মিলে জমি খরিদ করেছিলেন, সেটি ছিল ধূসর বিরান এক প্রান্তর। সেখানে না ছিল বৃক্ষ, না পাখাপালি। ঊষর মরু। তার ছা্য়াতলে কয়েকশো ঘর সাঁওতালরা থাকত পতিতপ্রায়। মারাং বুরুকে তালাশ করছিল তারা। বন নাই, ভগবানও নিরুদ্দেশ তাদের। কমল মতলব আঁটলেন, তিনি অরণ্য গড়বেন এখানে। যেটুকু জমি খরিদ করা হয়েছে, তার পুরোটা জুড়ে রচনা করবেন এক বনভূমি। লোকজন শুনে হাসে। কেউ-বা থ্রেট করে। কেউ আবার সন্দেহ নিয়ে যাচাই করে মতলব। হয়রানি চলে রাতদিন। প্রকৌশলী থেকে অরণ্যচারী হওয়ার জেদে অটল কমল ওসবের পরোয়া না করে গাছ বুনতে থাকেন… বুনতেই থাকেন। সমরেশ বসুর আখ্যানে পাঠ-যাওয়া বাক্যের প্রতীক হয়ে উঠেন আমাদের কুরুসেনাপতি;—এ-জীবন বুনা হইছে। টানাভরনায় বুনা হইছে। জীবন বোনা কর।

তাঁতিদের মাকু চালানোর মতো টানাভরনায় গাছ বুনে যেতে থাকেন কমল। বুনতে থাকেন বছরের-পর-বছর। রোদের তেজ সইতে না পরে সেগুলা পটল তোলে। বৃষ্টির অভাবে মরে হুটহাট। গরুছাগল সাবড়ে দেয়। মানুষ এসে আগুনে পোড়ায়। কমল তবু গাছ বোনা করে চলেন। টানাভরনায় বোনা হতে থাকে সারি-সারি কচি চারাগাছ। মরতে-মরতে এবং বাঁচতে-বাঁচতে একটি-দুটি থেকে দশ লক্ষ বৃক্ষের অতিকায় অরণ্য প্রকৃতির নিয়মে তৈরি করে ফেলেন কুরুসেনাপতি কমল!

Kamal Chakraborty; Image Source – Collected; Google Image

তাঁর তরিকা এখানে জাপানি জেনভাবিক কৃষিবিদ ফুকুওকার অবিকল। ফুকুওকাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল : দেশ যিনি চালাবেন, তাঁর কীরকম হলে ভালো হয়? উত্তরে জেনদার্শনিক মৃদু হেসে বলছিলেন : একটা কাঠের গুঁড়ি হয়ে থাকাটা তাঁর জন্য ভালো। এর বেশি তৎপর না হলে আমরা নিরাপদ। কমল চক্রবর্তীও গাছ বোনা ও সেগুলো দিয়ে অরণ্য রচনায় মা-প্রকৃতির দ্বারস্থ থাকেন আগাগোড়া। প্রকৃতি তাঁকে নিরাশ করেনি। অরণ্য যবে হয়ে গেল, কমল আর কৌরবসেনা কমল চক্রবর্তী নেই। আপাদমস্তক একখানা গর্জন গাছে রূপান্তরিত হয়েছেন। তিনি এক শাল গাছ। অর্জুন ও কাঠালিচাঁপা। আমি তাঁকে ডাকি অরণ্যকমল।

অরণ্যকমলে পা দিলে মানুষ দেখে সেখানে ডোবানালা আছে। খোদাই করা পুকুর আছে। সাপ, বেজি, খরগোশ, বন্য শূকর আর পাখপাখালির কলতানে মুখর গোটা বন। আছে সবজি খেত। তার সঙ্গে আছে মারাং বুরু;—সাঁওতালদের দেবতা। অরণ্যকমলে সাঁওতালদের পড়ালেখা চলছে বেশ। চিকিৎসার বন্দোবস্তও করেছেন কমল।

বন এক জিনিস আর একটি অরণ্য… পুরোপুরি আলাদা ব্যাপার। সময় যত অতিক্রান্ত হয়েছে, কমল আর কমল থাকেননি। বৃক্ষ থেকে অরণ্যে পরিণত হয়েছিলেন। তাঁর দেহে কান্টের সমুদয় নোমেনারা ছিল ক্রিয়াশীল। তারা তরঙ্গিত সেখানে। মানুষ কমল চোখ বুজেছেন, কিন্তু বৃক্ষনাথ কমল এখনো জীবিত। শুনতে পাই, ভালোপাহাড়ের চূড়ায় অরণ্যকমলে পরিণত আমাদের কবি উপনিষদের শান্তিবাণী জপ করছেন :

ওম! আমাদের রক্ষা ও প্রতিপাল করো
তুমি আর আমি মিলে যেন নিয়োজিত থাকি কর্মে
আমরা যেন সফল হই, শত্রু না ভাবি নিজেদের
আমাদের দেহ সুস্থির থাকুক
বাক্য, নিঃশ্বাস ও শ্রবণে অনুভবের শক্তি আসুক
হে উপনিষদ, আমাকে ছেড়ে যেও না
আমি যেন তোমাকে ত্যাগ না করি
জ্ঞানের লঙ্ঘন করব না কখনো
জ্ঞানে থাকবে মতি
ধর্ম পথ দেখাক আমাদের, শুভ প্রেষণায় আমরা চলি
ওম! পৃথিবীতে শান্তি নামুক
শান্তি বিরাজি করুক…
ওম! শান্তি…শান্তি…শান্তি।

. . .

Honest Kamal Chakravarty in his Thinking and Philosophy; Source – Passionate Jeet YTC

. . .

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 5 / 5. Vote count: 66

No votes so far! Be the first to rate this post.

Contributor@thirdlanespace.com কর্তৃক স্বত্ব সংরক্ষিত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *