জল সেতো অনন্তেই গেছে পাশে কেউ নেই চিরদিন দেখা নেই চিরদিন দূরে দূরে চিরদিন সন্ন্যাস
-
-
প্রাচ্যে এই গুরুবাদী পন্থা মানুষকে ক্রমে যুক্তিবিরহিত মিথপূজারী করে তুলেছে। জাগতিক সংকটকে যে-কারণে সুফি ও মাজারপন্থীরা এখন আর মোকাবিলার শক্তি রাখেন না। সময় যত যাবে, তাদের এই জীবনধারা তাদেরকে মেরুদণ্ডহীন সরীসৃপে রূপান্তরের সম্ভাবনা তৈরি করবে। সুফিকেও জীবনবাদী হতে হয়। তার মধ্যে সৃষ্ট ইশকের লহর যদি সমাজকে প্রভাবিত করতে না পারে, ভালোবাসার প্রয়োজনকে অমোঘ করে তোলার শক্তি না ধরে, প্রেমের প্রচারে শহিদ হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে অগ্রসর হতে না পারেন, অন্যায়ে জড়োসড়ো থাকেন, ভক্তিরস ও কাওয়ালে নিরাময় খোঁজেন কেবল... এগুলো তাকে প্রকারান্তরে পলায়নবাদী করে তোলে।
-
কটি গানকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে লম্বা সময় ধরে গাইতে থাকেন উম্মে কুলসুম। একটাই গান এভাবে ফিরে-ফিরে গেয়ে চলার সময় গানের মেজাজ খুব-যে পালটায় তা নয়, কিন্তু শ্রোতা তথাপি নিবিষ্ট হয়ে শুনে চলে। নির্দিষ্ট কোনো স্তবক অথবা চরণ ঘুরেফিরের বারবার গাইবার সময় শ্রোতার এরকম মনে হয়,—ধ্বনিব্যঞ্জনা এখানে অন্তহীন সময় ধরে বইছে, এবং এই প্রবাহন বন্ধ না হলে ক্ষতি নেই। গলার খাঁজভাঁজ থেকে বেরিয়ে আসা গানকে এভাবে অপূর্ব সম্মোহন বিস্তারের মাধ্যমে গাওয়ার ক্ষমতা সত্যিই বিরল!
-
ড. জাফর ইকবালের মধ্যে যেটি সবসময় ছিল ও আজোবধি রয়েছে, সেটি ওই বহুচর্চিত বাক্যটি মনে করায় : ল্যাঞ্জা ইজ ডিফিকাল্ট টু হাইড। হাসিনা পতনের তুঙ্গ মুহূর্তে যে-কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে তিনি অচেনা বলে সাব্যস্ত করেছিলেন। যেহেতু, তাঁর হিসাব অনেক আগে থেকে জানাচ্ছিল,— বিশ্ববিদ্যালয়টি রাজাকারপন্থীতে ভরে গেছে।
-
আমাদের কাছে আকরাম খান বিশিষ্ট মূলত দেশ-এর কোরিওগ্রাফির জন্য। প্রায় সাত-আট বছর আগে এই পরিবেশনায় আমরা এমন এক শিল্পীকে দেখি,—যিনি বাংলাদেশের সংক্ষুব্ধ যাতনা ও লড়াইয়ের মধ্যে মিশিয়ে দিচ্ছেন শিকড়ের প্রতি দরদ ও টান। অনেকদিন পর দেশ দেখতে বসে মনে হলো, প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির হাতে দেশকে স্বেচ্ছায় তুলে দিতে থাকা আমাদের মতো মেরুদণ্ডহীন হতভাগাদের জন্য আকরাম খানের এই পরিবেশনা এখন আরো বেশি প্রাসঙ্গিক।