দ্য রোড নট টেকেন কবিতায় কবি রবার্ট ফ্রস্ট ঘন বনের মধ্যে হাঁটতে-হাঁটতে দুটি পথের মিলনস্থলে পা দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন। দুটি পথে ছড়ানো ছিল জানা-অজানা বিস্ময়! তার মধ্যে কোন পথ বেছে নেবেন সে-কথা ভেবে কবি পতিত ছিলেন দ্বিধায়। দুটি পথ ধরে যাওয়া তো সম্ভব নয়। যে-কোনো একটি বেছে নিতে হবে তাঁকে। একটি বেছে নেওয়ার কারণে অন্য পথে হয়তো আর কখনো যাওয়া হবে না তাঁর! অজানা রোমাঞ্চে সে কবির কাছে অধরা থেকে যাবে চিরদিন! হায় মানবজীবন! অনিশ্চয়তার ঝুঁকি এড়াতে লোক-চলাচলে মুখর পথটি বেছে নিয়েছিলেন কবি রবার্ট ফ্রস্ট!
রকগানের শিল্পী ফারুক মাহফুজ আনাম জেমসের সমস্যাটি ভিন্ন। রবার্ট ফ্রস্টের মতো দুটি পথের মিলনমোহনায় তিনি দাঁড়িয়ে নেই। একখানা পথ কেবল সামনে তাঁর। একমুখী রাস্তা। রাস্তাটি এখন কোথায় গিয়ে থেমেছে,—গায়ক তা জানে না! অন্তবিহীন কী কী বিস্ময় সেখানে অপেক্ষায়,—এই ব্যাপারে তাঁর কোনো ধারণা নেই। কতখানি দুঃখ ও পীড়ন সইতে হবে, তার কিছু জানে না সে। গায়ক জেমসের এই একমুখী যাত্রা পরিশেষে তাঁকে আনন্দে ভাসাবে অথবা অঝোর কাঁদাবে;—এই দ্বন্দ্বে ইতি টানা কাজেই দুরূহ! হায় মানবজীবন! হায় তার এই পথচলা!
পথের সারার্থ সময়ের সঙ্গে রং পালটায়। আমরা যেমন নিশ্চিত নই এখন,—বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডের কোথায় দাঁড়িয়ে ঠিকঠাক! আমরা কি তাহলে রবার্ট ফ্রস্টের মতো দুই পথের মিলনস্থলে দাঁড়িয়ে? নাকি, জেমসের লেখা ও রককণ্ঠে ধ্বনিত একমুখী কোনো পথের সামনে আছি দাঁড়ানো? কেবল মনে হচ্ছে,—যে-পথেই দাঁড়িয়ে থাকি-না-কেন, সেই পথটি হতে চলেছে অন্তহীন কষ্ট ও হতাশার! ঈশ্বর জানেন,—অন্তবিহীন কি আছে/ এই পথের শেষে…।
. . .
একমুখী রাস্তা
কন্ঠ : জেমস
কথা ও সুর : জেমস
অ্যালবাম : তুফান
ঘরানা : ব্লুজ/ জ্যাজ/ রেগে/ রক ফিউশন
. . .
বলো তুমি কোন পথে যাবে
একমুখী এই রাস্তা
একবার রও’না হলে
আর ফেরা যায় না
এই পথ গেছে চলে
এঁকেবেঁকে বহু দূরে
অন্তবিহীন কী আছে
এই পথের শেষে…।
হেসে উঠি হো হো হো
দুচোখ কাঁদি না
হায়রে অবুঝ নিয়ম
বুঝেও বুঝলি না
গেয়ে উঠি মন টানে
মনও জানে না
হায়রে অবুঝ এই মন
চিনেও চিনলি না
বলো তুমি কোন পথে যাবে
একমুখী এই রাস্তা
একবার রও’না হলে
আর ফেরা যায় না
এই পথ গেছে চলে
এঁকেবেঁকে বহুদূরে
অন্তবিহীন কী আছে
এই পথের শেষে…।
. . .

. . .



