
অপেক্ষা
ফজলুরহমান বাবুল
ঘুম, তোমার জন্য অপেক্ষা করি…
কে জানে—আজ কেন তুমি উধাও
কে জানে—হারিয়ে গেছ কোন কাননে
নামিয়ে রেখেছি চোখ—
নেমে আসছে আকাশ মেঘের ডানায়
চোখের পাতায় ঝরে পড়ো তুমি
অন্ধকারে ডাকছি তোমায়
নামছে আকাশ মেঘের ডানায়
এসো, শুয়ে পড়ি একই বিছানায়।
. . .
ইটারনাল সানশাইন অব দ্য স্পটলেস মাইন্ড
. . .
মানব-অনুভূতিকে মোটাদাগে অ্যালগরিদমে ধারণ করলেও, অনুভূতির অপার বৈচিত্র্য ও সূক্ষ্মতা রপ্ত করতে যন্ত্রকে আরো লম্বা পথ পাড়ি দিতে হবে। সোনো বা এরকম অ্যাপস দিয়ে, বিশেষ করে বাংলা ভাষায় উমদা গান পয়দা করা কঠিন। ইংরেজি গানের কিছু-কিছু ঘরানায় তা ইদানীং সম্ভব হচ্ছে, তবে বাংলা ভাষায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সৃষ্ট গান এখনো শৈশব অতিক্রম করছে বলা যায়।
থার্ড লেন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বিদেশি গায়ক ও রক ব্যান্ডের কিছু গান বাংলায় ভাষান্তর ও মিউজিক দিয়ে পরীক্ষা করেছি মাঝখানে। সমস্যা হলো,—এসব অ্যাপসে সাজানো অপশন ও মডেল দিয়ে মনমতো গান তৈরি করা সম্ভব নয় এখনো। গানের লিরিকে আপনি যেমন চাইছেন, সেভাবে গায়কি ও বাজনাকে খাপ খাইয়ে নিতে পারবেন না। গানের বিচিত্র সব ঘরানা ও বাদ্যযন্ত্র তারা দিয়ে রেখেছে, কিন্তু সেগুলো অ্যালগরিদমের ছক মেনে ফরমেটেড! পেইড অ্যাপসে বাড়তি সুবিধা মিলে অবশ্য, মানের দিক দিয়েও অপেক্ষাকৃত ভালো শোনায় কানে; তথাপি, ব্যতিক্রম বাদ দিলে মনমতো হয়ে ওঠে না। ফাঁকি থেকে যায় শেষ পর্যন্ত। বলতে পারেন, মন্দের ভালো কিছু একটা দাঁড়ায়! এর বেশি নয়।
বাবুল ভাইয়ের লেখা কবিতাকে গানে রূপান্তরের সময় সুফি সুফিয়ানকেও সুতরাং ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। অপশন যেগুলো দিয়ে রেখেছে, উনি আবার সেগুলোকে ভালো এস্তেমাল করতে পারেননি। কথায় গুঞ্জরিত আবহের সঙ্গে গায়কি ও মিউজিক অসংলগ্ন লাগছে কানে। ফ্লাট গেয়ে যাচ্ছে! বাজনা একদিকে লাউড হচ্ছে, মডেল অন্যদিকে একঘেয়ে গাইছে অনুভূতিহীন! অ্যালগরিদমটা খাপ খায়নি।
এআই দিয়ে গান করানো সহজ মনে হলেও, বেশ খাটনি ও মাথা ঘামানোর বিষয় রয়েছে সেখানে;—এছাড়া ভালো রেজাল্ট দিতে পারে না। তারওপর রয়েছে বাংলা উচ্চারণের প্রতিবন্ধকতা। সময়ের সঙ্গে এসব দূর হবে তা নিশ্চিত। সোনো-র পেইড অপশন উচ্চারণগত ত্রুটি ইতোমধ্যে অনেকখানি কাটিয়ে উঠেছে। অন্যগুলোও বেশ ইমপ্রুভ করেছে। তবে, যুক্তাক্ষর যথাসম্ভব কম হলে ফল ভালো পাওয়া যায়।
বাবুল ভাইয়ের এই কবিতালগ্ন গানটির ভাবার্থে মৌন বিষাদ রয়েছে। রয়েছে ক্লান্তি ও অবসন্নতা। ঘুম পাড়ানিয়া অবহের রেশ পড়তে যেয়ে কানে বাজে। মিউজিকে সেই ফিলটা আসা প্রয়োজন ছিল মনে হয়। সিলেটে গানবাজনা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা অনুমোদন করেন, এরকম মিউজিশিয়ান দুরবিন দিয়ে খুঁজে পাওয়ার নয়। যদি মিলে সেরকম কেউ, এবং তিনি গানের কথায় মর্মরিত আবহ বুঝে মিউজিক করেন, সঠিক গায়ক বেছে নেন,—সোজা-সাপটা কথার চালে অগ্রসর গানকবিতাটি দেখবেন শুনতে ভালো লাগছে।
গানের মতো প্রচণ্ড সৃষ্টিশীল যজ্ঞে মানুষকে টেক্কা দিতে যন্ত্রের অ্যালগরিদম সক্ষমতা অবিশ্বাস্য মাত্রায় পৌঁছাতে হবে। তখনো দেখা যাবে,—মানুষ নতুন আঙ্গিক খুঁজে নিচ্ছে। এমনকি এআই অ্যাপসকে সহায়ক রূপে কাজে লাগিয়ে নতুন মাত্রা নিয়ে আসছে গানে। মানবীয় অনুভূতির বৈচিত্র্য ও নিত্যনতুন পালাবদলের মোকাবিলায় সেরিব্রাল কর্টেক্সের সক্ষমতা এক্ষেত্রে মানুষের আয়ুধ হতে থাকবে।
যাইহোক, কতটা কী করা যায় দেখি;—সে-কথা ভেবে আমিও চেষ্টা করলাম। একাধিক নমুনা তৈরির পর অবশেষে দুটি সংস্করণ এখানে সংযুক্ত করেছি। সংস্করণ দুটি, মনে হলো, গানের ভাবার্থের প্রতি সামান্য হলেও সুবিচার করতে পেরেছে। একটিতে পুরুষ ও অন্যটিতে নারী কণ্ঠ ব্যবহার করেছি। পিয়ানোর সঙ্গে সিন্থেসাইজার, অ্যাকুইস্টিক গিটার, বাঁশি ইত্যদি রেখেছিলাম। টেম্পো লো রেখেছি ইচ্ছে করে। এটি আমার বাছাই। অন্যদের জঘন্য মনে হতেও পারে।
বাবুল ভাইয়ের কথায় সক্রিয় আবেগ ধরতে কোমলতা ও বিষাদকে আমার কাছে সংগত মনে হয়েছে। একটি গান লাইট রক ঘরানায় করা। অন্যটির ক্ষেত্রে ঘরানায় যাইনি। গানটি আসলে কবিতাপাঠের আদলে সুর দিতে পারলে বেশ উমদা শোনাবে। সেক্ষেত্রে গানের ভাব বুঝে মেজর ও মাইনর স্কেলে গিটার, পিয়ানো, ভায়োলিনের যে-কোনোটি বেছে নেওয়া যেতে পারে। দেশি বাদ্যযন্ত্রও বাজতে পারে, এবং তাতে খামতি ঘটার কারণ দেখি না।
যন্ত্র দিয়ে পছন্দমাফিক কিছু করানো, সেইসঙ্গে গলার উঠানামা ইত্যাদি এখনো পুরোপুরি সম্ভব নয়। সুতরাং সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় রেখে শোনা যেতে পারে। ভুলত্রুটি মার্জনীয়।
. . .
. . .




খুব ভালো ভার্সন ওয়ান টা বেশি ভালো লেগেছে