জনপ্রিয় সংগীতের নন্দন : থিওডোর গ্র্যাসিক
ভাষান্তর : রিফাত মাহবুব
. . .

থিওডোর অ্যাডর্নো : সমালোচনার মানদণ্ড
থিওডোর অ্যাডর্নো (Theodor Adorno) বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় সংগীত নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও পরিশীলিত তত্ত্ব উপস্থাপন করেছেন। জনপ্রিয় সংগীতকে যখন অতিসরল হওয়ার কারণে ক্লান্তিকর ও একঘেয়ে হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, সেখানে অ্যাডর্নোর নাম নেওয়াটা অনিবার্য হয়ে পড়ে। এই সংগীতের মান বাজার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হওয়ার বিষয়টি তাঁর আলোচনায় জোরালভাবে বিদ্যমান। মার্কসবাদী আদর্শে গঠিত অ্যাডর্নোর চিন্তা-ভাবনার প্রভাব প্রায় সকল সংগীত-তাত্ত্বিকের ওপর পড়েছে; তাঁর লিখনশৈলী অবশ্য জটিল,—পুনরাবৃত্তিমূলক ও কঠিন, যার তর্জমা বেশ কষ্টসাধ্য।
বাজারি চাহিদা ও সস্তা বিনোদনের সমন্বয়ে জনপ্রিয় সংগীত জন্ম নিয়েছে;—অ্যাডর্নো সেটা মনে করেন। বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় সংগীত বাজারে উৎপাদিত হয়, কেননা এর লক্ষ্যই হচ্ছে বিপুল সংখ্যক মানুষকে সস্তা আনন্দ দান করা। এই ধাঁচের গানবাজনা যাতে কারো শুনতে ও বুঝতে অসুবিধা না হয় সেজন্য এটা একধাঁচের সুর এবং গঠনের অনুসারী। ভোক্তার চাহিদা অক্ষত রাখতে বাজারে সবসময় নতুন জনপ্রিয় গানের ছড়াছড়ি থাকে। স্থানীয় ও আঞ্চলিক গানের বাজারকে সে ক্রমশ গ্রাস করে নেয়, এবং অ্যাডর্নো এজন্যই মন্তব্য করছেন,—বাজার সংস্কৃতিতে সত্যিকার আঞ্চলিক গান সম্ভব নয়।
জনপ্রিয় সংগীতে চোখে পড়ার মতো গুণগত ও মৌলিক পার্থক্য না থাকায় এর কোনো কেন্দ্রীয় বার্তা থাকে না। তবে জনপ্রিয় সংগীত যে-দার্শনিক দৃষ্টিকোণ ধারণ করে, এর ভিতর দিয়ে অর্থ-সামাজিক প্রবাহের চিত্রখানা পাওয়া যায়, এবং এ-কারণে তার প্রভাব বাড়তেই থাকে। আধুনিক পুঁজিবাদে বিচ্ছিন্নতাবাদের সমস্যাকে সে প্রকট করে তোলে। জনপ্রিয় সংগীতে নিহিত ক্ষণিক আনন্দ হলো বিচ্ছিন্নতাবাদ থেকে একধরনের মুক্তি। সত্যিকার তৃপ্তি দিতে না পারায় অবিচ্ছিন্ন একটি চক্রে মানুষকে সে বেঁধে ফেলে। ভোগ, বিচ্ছিন্নতা, বিরক্তি ও বিক্ষিপ্ততাকে যেটি কিনা প্রলোভিত করে ।
জনপ্রিয় সংগীতের বিচার-বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে অ্যাডর্নোর সমালোচনাকে ‘আর্ট’ বা উচ্চমার্গীয় সংগীতের বিপরীত ধরা যেতে পারে। তাঁর মতে উৎকৃষ্ট বিকল্প যদি না থাকে সেক্ষেত্রে জনপ্রিয় সংগীতের খুঁত ধরা বাহুল্য। এই আলোচনার সূক্ষ্ম দিক হলো জনপ্রিয় বনাম উচ্চমার্গীয় সংগীতে তিনি মোটাদাগে কোনো পার্থক্য টানেননি। অ্যাডর্নোর কথা হচ্ছে, যেসব সংগীতকে উচ্চমার্গের বা শৈল্পিক সংগীত বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, সেগুলো খুব উন্নত কিছু নয়। উচ্চমার্গের সংগীত অনেকসময় সমালোচনার ঊর্ধ্বে থাকে, যেহেতু বেশিরভাগ সময় আমজনতা তা বুঝতে পারে না, সুতরাং তাকে উন্নত বলে চালিয়ে দেওয়া যায়।
আর্নল্ড শোয়েনবার্গের (Arnold Schoenberg) মতো প্রথাবিরোধী সুরকার যে-সুর সৃষ্টি করেন তা সামাজিকভাবে প্রগতিশীল। এ-ধরণের সংগীত ভিন্ন ধাঁচের সত্য উপলব্ধিতে শ্রোতাকে আন্দোলিত করে। অ্যাডর্নোর মতে মৌলিক বা শুদ্ধসংগীতের উদ্দেশ্য কেবল প্রচলিত সত্য তুলে ধরা অথবা স্রোতের বিপরীতে গিয়ে তার সমালোচনা করা নয়। শুদ্ধসংগীত সবসময় নিজের জন্ম নেওয়া ও গৃহীত হওয়ার সময়কালে প্রাসঙ্গিক। এক্ষেত্রে সংগীতের স্বায়ত্তশাসন মানে হচ্ছে সমাজ-অর্থনীতির চাপে সৃষ্টির সততায় আপস না করা। একসময় যেমন নন্দনের সর্বোচ্চ আসন সৌন্দর্যে কেন্দ্রীভূত ছিল। সৌন্দর্যের অন্বেষণ শিল্পের স্বাধিকারকে খর্ব করে। ফলে, সংগীতে শুদ্ধতার একটি মূল্য দিতে হয়;—উৎকৃষ্ট সংগীত সাধারণ সৌন্দর্যকে ধরতে পারে না, বরং নানা বিপরীত প্রত্যাশায় সমন্বয় সাধন করতে যেয়ে গাঠনিক দিক থেকে জটিল হয়ে ওঠে। বিপরীতে সহজ ও চটুল গান কখনো আপন-শাসিত নয়। এ-ধরনের সংগীত সমাজে বিরাজিত আর্থসামাজিক নিয়মের উলটোদিকে গমন করতে পারে না। যার ফলে অল্পসংখ্যক আধুনিক সংগীত শ্রোতামণ্ডলিকে আধুনিকতার স্ববিরোধী বৈশিষ্ট্যের সম্মুখে দাঁড় করাতে পেরেছে। সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার চাপে আধুনিক সংগীত সামাজিক সত্য থেকে দূরবর্তী হয়ে পড়ে। যার ফলে এই ধাঁচের সংগীত সত্যিকার সামাজিক উৎকর্ষ সাধন করে না।
অ্যাডর্নো জনপ্রিয় সংগীতের কোনো অন্তর্গত পার্থক্য সমর্থন করেননি। তাঁর মতে শিল্পের সত্য ও জনপ্রিয়তার সহাবস্থান সম্ভব নয়, কারণ জনপ্রিয় সংগীত বাজারি মুনাফার অনুসারী হলে তার সত্য প্রকাশের ক্ষমতা হ্রাস পায়। এই মতের বিপরীতে অনেকে কিছু জ্যাজ ও রক সংগীতকে দাঁড় করান। চার্লি পার্কার (Charlie Parker) এবং জন কোলট্রেন (John Coltrane) বাণিজ্যসফল গান করেছেন, এবং অ্যাডর্নোর মত অনুসারে তাঁরা ‘জনপ্রিয়’ শিল্পী। স্বাধীন, প্রথাবিরোধী সংগীতের জন্ম দিয়েছিলেন দুজনেই। বিংশ শতাব্দীতে নন্দনের বাণিজ্যিক কাঠামো শিল্পের সৌন্দর্যকে সবসময় অস্বীকার করে না। অ্যাডর্নোকে বাদ দিলে, ১৯৬০ সালের পূর্ব পর্যন্ত জনপ্রিয় সংগীতের প্রতি তাৎপর্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি তেমন একটা চোখে পড়ে না। এরপর দ্য ব্রিটিশ জার্নাল অফ এস্থেটিক্স জনপ্রিয় সংগীতের ওপর কিছু গবেষণাপত্র প্রকাশ করে। কিছুটা অদ্ভুতভাবে লেখাগুলোয় বিটলস-এর উল্লেখ না থাকলেও একই বছর ‘লাভ মি ডু’ এবং ‘প্লিজ প্লিজ মি’সহ বিটলসের প্রথম অ্যালবাম বিশ্ববাজারে মুক্তি পায়। বিটলস পরিবিশত গান এক অবিস্মরণীয় সাংস্কৃতিক শক্তিতে রূপ নেয়, যার মাধ্যমে জনপ্রিয় সংগীতকে নিয়ে নতুন করে ভাবার দিন শুরু হয়। তাকে নিছক চটুল ও অন্তঃসারশূন্য বলে নাকচ করার দিনগুলো প্রাচীনপন্থায় পর্যবসিত হতে থাকে।
. . .
জনপ্রিয় সংগীতের সমর্থনে
সংগীতের আধুনিক মতবাদের সারাংশে বলা যায়, এটি একটি শ্রেণিনির্ভর শিল্প। ‘উচ্চমার্গীয়’ সংগীতকে অনুধাবন উন্নত সংস্কৃতি ও জ্ঞানের নিদর্শন। উচ্চমার্গীয় সংগীতের সমঝদার হতে প্রয়োজন সক্রিয় মনোযোগ ও সেইসঙ্গে সংগীতের বিমূর্ত কাঠামো উপলব্ধির দক্ষতা। শ্রেষ্ঠ সংগীত শাস্ত্রীয় বা উচ্চাঙ্গ সংগীতের ধারায় পাওয়া যায়, যেখানে সংগীতকার সুরের স্বায়ত্তশাসন ও কৌশলপূর্ণ কাঠামোকে ধরে রাখেন। এর বিপরীতে জনপ্রিয় সংগীতের নান্দনিক বৈশিষ্ট সীমিত। সংগীতের স্বাধীনতাকে এখানে আপস করতে হচ্ছে, কারণ তার উদ্দেশ্য হলো সুর-লয়-তালের মাধ্যমে সাময়িক আবেগকে নাড়া দেওয়া। জনপ্রিয় হতে গেলে সার্বজনীন হতে হয়, যার ফলে কাঠামোয় আবদ্ধ অনুশীলন এখানে সম্ভব নয়।
রিচার্ড শুস্টারম্যান (Richard Shusterman) এই শ্রেণিবদ্ধ সংগীত-বিন্যাসের সমালোচনা করে বেশ কিছু রচনা প্রকাশ করেন। পূর্বসূরিদের সোজাসাপটা খারিজ সংস্কৃতির ঊর্ধ্বে ওঠে রচনাগুলো এই মতবাদকে সামনে আনার চেষ্টা করে,—আধুনিকতাবাদে নিহিত মোটাদাগের সংজ্ঞার চেয়ে জনপ্রিয় সংগীত এমনকি দর্শনিক দিক থেকে যথেষ্ট চমকপ্রদ এবং চিন্তার দাবিদার। জনপ্রিয় সংগীতের সপক্ষে ক্ষীণ সুরকে শুস্টারম্যান জোরালো করেন এমতো প্রথাবিরোধী আলোচনার সাহায্যে,—তথাকথিত উচ্চ ও নিম্ন সংগীতের বিভাজন কোনো বৈশিষ্ট্যমূলক পার্থক্যের বিচারক নয়। জনপ্রিয় শিল্প বা জনপ্রিয় সংগীতের কোনো বিশ্লেষণ তিনি হাজির করেননি। এর পরিবর্তে এমন কিছু তথাকথিত জনপ্রিয় সংগীতের বিবরণ পেশ করেন যারা নান্দনিক উৎকর্ষের পরিচয় বহন করছে। উচ্চমান ধারণ করছে এরকম গানের কাতারেই পড়ে সেগুলো। উন্নত জনপ্রিয় সংগীত গুণগতভাবে তথাকথিত গম্ভীর বা উচ্চমান সম্পন্ন সংগীতের সকল গুণ বহন করে। শুস্টারম্যান জনপ্রিয় সংগীতের একচেটিয়া গুণগান করেননি, বরং এই ধারণাটি তিনি মেনে নিয়েছেন,—বেশিরভাগ জনপ্রিয় সংগীত গুণগত দিক থেকে উন্নত নয়, এবং অনেকক্ষেত্রে সমাজে তার নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে; তবে তিনি এই মতবাদ সম্পূর্ণ মানতে রাজি না যে, জনপ্রিয় সংগীত মানেই চটুল ও অসার।
শুস্টারম্যানের আলোচনা সীমিত সংখ্যক রক, হিপ-হপ ও কান্ট্রি সংয়ের সমন্বয়ে গঠিত। তিনি মূলত জনপ্রিয় সংগীতের বিরুদ্ধে গড়পড়তা যে-অভিযোগ তোলা হয় তাকে চিহ্নিত করেছেন। সৃষ্টিশীলতা ও মৌলিকতার অভাব, শৈল্পিক স্বাধীনতার অনুপস্থিতির দিকে দৃকপাত করেছেন শুস্টারম্যান। উন্নত সংগীতকে বাজার থেকে বিতাড়িত করে জনপ্রিয় সংগীত ঢালাওভাবে সংস্কৃতির মানকে নিচু করে অথবা জনপ্রিয় সংগীত মানে চটুল আনন্দরাজ্যে ক্ষণিক উপভোগ,—এই ধরনের সরলীকরণে ভরপুর দৃষ্টিভঙ্গির উত্তর শুস্টারম্যানের লেখায় পাওয়া যায়। এসবের সমালোচনায় তিনি যুক্তি উপস্থাপন করেন। সংগীত সমালোচকরা সচরাচর তথাকথিত আর্ট বা উচ্চমার্গীয় সংগীতের সক্ষমতাকে অতিপ্রশংসায় ভাসিয়ে দেন, যদিও এই সংগীতের আবেশ জনপ্রিয় সংগীতের মতোই ক্ষণস্থায়ী হতে পারে। এবং সবসময় এ-ধরনের গানের সমঝদার হতে জ্ঞানবৃত্তির প্রয়োজন পড়ছে না। শুস্টারম্যানের মতে জনপ্রিয় সংগীতের ঢালাও সমালোচনা রোমান্টিক যুগের মাপকাঠি, যার ফলে এই মাপকাঠি শিল্পের ক্ষেত্রে সীমিত দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় তোলে ধরে।
অ্যাডর্নোর আলোচনাকে সরাসরি আমলে নিয়ে শুস্টারম্যান ‘শিল্প’ ও ‘জীবনের’ আধুনিকতাবাদী (মডার্নিস্ট) বিপরীত মতবাদ প্রত্যাখ্যান করেছেন। নন্দনের বৃহৎ, প্রশস্ত মানদণ্ডের প্রতি তাঁর পক্ষপাত; যেখানে শিল্পের সব ধরনের কার্যকরী দিকের প্রতিফলন ঘটছে। জনপ্রিয় সংগীত মানে একঘেয়েমি এবং একই সুরের বহুল ব্যবহার;—এই ধরনের সমালোচনার জবাবে শুস্টারম্যান উক্ত মতবাদ হাজির করেন। কাঠামো ও জ্ঞানের ঐতিহ্যগত সম্পর্ককে প্রশ্ন করে তিনি জানাচ্ছেন,—সংগীতের কাঠামোকে আমাদের স্বভাবসুলভ শারীরিক তালের মতো হতে হবে। জনপ্রিয় সংগীতে নৃত্যের তাল পশ্চিমের সংগীতকে তার স্বাভাবিক শিকড়ে ফিরিয়ে এনেছে। জনপ্রিয় সংগীতের তাল-লয় দৈহিক লয়ের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, যে-কারণে জনপ্রিয় সংগীতের মর্ম উপলব্ধির ক্ষেত্রে দেহের প্রাধান্য থাকে। কেননা এই শারীরিক চলনের অর্থ রয়েছে, এবং এই অর্থ উপলব্ধি করতে শরীর ও জ্ঞান দুটোই ব্যবহার করা প্রয়োজন। গানের কথা এই ধরনের সুরের সহায়ক, কারণ জনপ্রিয় সংগীতে গানের বাণী শ্রোতাকে তাড়িত করে। সুর ও ভাষা যখন এক হয়ে গানের জন্ম দেয়, তার অভিজ্ঞতা যে-কোনো ‘উচ্চমার্গীয়’ সংগীতের মহিমার চেয়ে কম কিছুনয়।
শুস্টারম্যানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রচনা হলো ফর্ম এন্ড ফাঙ্ক : দা এস্থেটিক চ্যালেঞ্জ অব পপুলার আর্ট এবং দ্য ফাইন আর্ট অব র্যাপ (দুটোই ২০০০ সনে প্রকাশিত)। দ্বিতীয় রচনা হিপ-হপ সংগীতের মধ্যে যেগুলো ভাষাগতভাবে জটিল, দার্শনিক অর্থ বহন করছে কিন্তু সুরের ব্যবহারে চলতি কেতা ধারণ করে… সেগুলোকে বিবেচনায় নিয়ে রচিত। এই ধরনের গানের নান্দনিক আবেদন দেহবৃত্তি ও বুদ্ধিবৃত্তির মিলন ঘটায়। সর্বোৎকৃষ্ট হিপ-হপ জীবনদর্শন বহন করে। বলাবাহুল্য, হাতেগোনা কয়েকটা গানের উদাহরণ এই সত্য রচনা করে না যে জনপ্রিয় সংগীত স্বভাবগতভাবে জটিল ভাব প্রকাশক। এ-কারণে শুস্টারম্যানের আলোচনাকে বিচিত্র ধারার জনপ্রিয় সংগীতকে নিয়ে যেসব বিস্তারিত ও তাৎপর্যপূর্ণ বই-পুস্তক সম্প্রতি বেরুচ্ছে, সেগুলোর অংশ হিসেবে পাঠ করতে হবে। দ্য বিটলস, দ্য গ্রেটফুল ডেড, মেটালিকা, এবং ইউ টু ধাঁচের দলভিত্তিক পরিবেশনায় নিহিত গানদর্শনকে তারা তুলে আনে। এটা প্রমাণ করে,—শুস্টারম্যানের মতবাদকে হাতেগোনা কয়েকটি গানের ওপর ভিত্তি করে অমূলক ভাবা যাবে না। পুরাতন একটি ধারণা শুধরে নিতেও ভূমিকা রাখছে সে। সংগীতের সনাতন দর্শনে সংগীত পরিবেশনার কলাকৌশলের কাছে কথার মূল্য গৌণ বা উপেক্ষিত ছিল। জনপ্রিয় সংগীতের নতুন আলোচনায় দেখা যায় অনেক গানের কথা গভীর, এবং গান অনেকসময় সংকটপূর্ণ বিষয়বস্তুও শ্রোতার কাছে পৌঁছে দেয়।
. . .
. . .