বাংলাদেশ তথা সমগ্র উপমহাদেশ মাইকেল জ্যাকসনের গায়কি ও তার গানে নিহিত বারুদমাখা ভালোবাসার আবেদন লোকজনের ভিতরে আদৌ পৌঁছায়নি। বিদেশি গানবাজনা শুনতে ভালোবাসেন এমন শ্রোতা-দর্শক-সমালোচক তাঁর গানের ব্যবচ্ছেদে কখনো উৎসাহও বোধ করেননি। এমনকি মিউজিশিয়ানরা জ্যাকসনগানে উচ্ছলিত জীবনবেদকে পাখির চোখ করে দেখার তাড়না বোধ করেননি কোনোদিন। যার ফলে অন্যান্য গায়কদের তুলনায় উপমহাদেশে জ্যাকসনের প্রভাব বিশেষ নেই।
-
-
সেলেবদের বুক ক্লাব, অস্বীকার করা যাবে না, তথাপি একটি পণ্যমূল্য ও বাজার তৈরির ভাবনা মাথায় রেখে জন্ম নিয়েছে। এটি একজন সেলিব্রিটিকে বাকিদের চোখের সামনে রাখছে সবসময়। ডুয়া লিপার বুক ক্লাবটিও ব্রান্ডিংয়ের প্রয়োজন মেটাচ্ছে সেখানে, তবে বাকি সেলেবদের থেকে সম্পূর্ণ পৃথক এর চরিত্র।
-
নিজের লেখা কবিতায় এক বন্ধুর কথা স্মরণ করছেন কবি। তার নাম ছিল শত্রুজিৎ। কার এখন ঠেকা পড়েছে তাকে শত্রুজিৎ নামে ডাকার! শত্রুজিৎ না ডেকে সবাই তাকে সংক্ষেপে শত্রু নামে ডাকা শুরু করেছিল। কাউকে বোঝানোর উপায় থাকল না,—শত্রুকে জয় করার বাসনায় বাপমা তার নাম শত্রুজিৎ রেখেছিল। আদিনাম বেচারা নিজেও ভুলে গেল বেমালুম। জীবন হচ্ছে এরকম তামাশার নাম। তাকে জয় করতে নেমে উলটো নিজেই শত্রু বনে যেতে হয়! সহজসরল প্রবচনঘন আবেশ মিশিয়ে জীবন নামের তামাশাকে নিরন্তর লিখে গেছেন তারাপদ রায়। সহজ কথা যায় না লেখা সহজে;—রবি ঠাকুরের কথাকে তিনি মিথ্যা প্রমাণ করেছেন। গভীর কথাকে সহজ করে লিখেছেন আজীবন।
-
নৈরাশ্যের অন্তিম পরিণতি নিস্পৃহতায়। নিস্পৃহতার পরিণতি তাহলে কী? নির্বিকার কোনো অবশ অভ্যাসে মন্দিরে পৌঁছানো? নাকি নির্বেদে সমাধি গ্রহণ? কবি এর কোনোটাই বেছে নিচ্ছেন না এখানে। তিনি বেঁচে আছেন স্মৃতিমধ্যে। দেহটা সক্রিয় রোমন্থনের ভিতর। যদিও সেই রোমন্থনের ব্যাপারে আবেগ ফিকে হয়ে এসেছে। কোনো বক্তব্য রাখার প্রয়োজন নেই, তথাপি অভীপ্সা রয়েছে। কেন রয়েছে? উত্তর কি জানে মানুষ? পাঠকরা কি জানে? না,—কেউ তা জানে না।
-
নিজের জীবনকে বিপন্ন করে মেরিনা আব্রামোভিচ এই-যে রিদম জিরোর পরীক্ষাটি নিয়েছিলেন, তার মধ্য দিয়ে আমরা মানব প্রজাতি চিরন্তন বিষবৃক্ষের নিকট ফেরত যাচ্ছি। আমরা ফলভক্ষণ করেছিলাম এই পরিণাম না জেনে,—এখন থেকে আমরা হয়ে উঠব এমন এক অভিশাপ, যার দিকে তাকালে মন ভালোবাসায় ভরে উঠবে তাৎক্ষণিক, এবং ভালোবাসা অচিরে মোড় নেবে ঘৃণায়। মানুষ তার নিজেকে ঘৃণা করে, যেখানে তার নিজের ও অন্যের প্রতি ভালোবাসা হচ্ছে নিছক অভিনয়। সে অবিনয়ী ও দুর্বিনীতি;—যেখানে পাশবতা হচ্ছে তার আদি চালিকাশক্তি। বাকিটা সমাজের বুকে বিচরণের সুবাদে সৃষ্ট, এবং সে-কারণে তারা মুহূর্তে বিপন্ন হয়ে পড়ে। মানুষকে কাজেই আইন ও শঙ্খলা দিয়ে বাঁধা ছাড়া স্ববশ রাখা কঠিন।