চেতনসত্তা হচ্ছে সেই অনুভূতি যে তুমি নিজে আছো। মন নামক পদ্ধতি যাকে ধারণ ও অনুমোদন করছে। মার্ভিন মিনস্কি বলেছিলেন,—মন তো আসলে একটি মেশিনের মতো! যদি আমরা এর সমস্ত নিয়ম বুঝতে পারি, তাহলে যন্ত্রের মধ্যেও মন তৈরি করা সম্ভব! তাঁর প্রস্তাবনা উড়িয়ে দেওয়া কঠিন। কারণ অনেক বিজ্ঞানী এখনো বিশ্বাস করেন,—মানুষের মস্তিষ্ক জটিল গণনাব্যবস্থা ছাড়া কিছু নয়। তাই যদি হয়, তাহলে ভবিষ্যতে যন্ত্রে তা তৈরি করা সম্ভব। রজার পেনরোজ যেখানে বাগাড়া দিয়ে বলছেন,—চেতনসত্তা নিছক কম্পিউটেশন নয়, এখানে ভিন্ন কিছুর অস্তিত্ব রয়েছে! এখান থেকে প্রশ্নটি আমরা ভাবতে পারি : যন্ত্রে কি চেতনা এনকোড করে সংরক্ষণ করা সম্ভব?
-
-
বিজ্ঞানীরা বলছেন, আগামী দুই দশকের মধ্যে এই প্রযুক্তিকে তারা মানুষের হাতের নাগালে এনে দিতে পারবেন। তার মানে সাকুল্যে বছর কুড়ি। বছর কুড়ি পরে যখন হবে তার সাথে দেখা, মন কি ধ্রুপদি কম্পিউটারের কথা ভেবে স্মৃতিকাতর হবে? মনে কি পড়বে তাকে? নাকি জীবনাননন্দের কবিতাচরণ আওরে বলবে কেউ : কুড়ি বছরের পরে তখন তোমারে নাই মনে! / সোনালি-সোনালি চিল— শিশির শিকার ক’রে নিয়ে গেছে তারে—/ কুড়ি বছরের পরে সেই কুয়াশায় পাই যদি হঠাৎ তোমারে! মনে হচ্ছে না তারে তখন পাওয়া যাবে! আমরা ততদিনে পা রাখব আলোসমান গতিতে চলা অর্থনীতির প্রথম ধাপে। রোমন্থনের সময় কোথা হে কবি!
-
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, যার কোনো মন নাই বইলা আমরা বুঝতেছি এবং গাধার মতো খাটানো যাইতেছে ভেবে খুশি আছি,- মার্ভিন মিনস্কি তাতে জল ঢেলে নিদান হাঁকছেন,- মনহীন উপাদান যদি মানবমস্তিষ্কে মনকে সক্রিয় করতে পারে, তাহলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে অনুরূপ আইডিয়ার সাহায্যে মন উপহার দেওয়া সম্ভব।... মানুষ মাত্রই ভুল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অবশ্য এখনো যথেষ্ট নির্ভুল। আগামীতে এই ছবিখানা থাকবে না। আমাদের মতো ফট করে বলে বসবে : টু এরর ইজ এআই ম্যান। ভুল তোমার হয়, আমিও করছি নাহয়। এর জন্য চেতো ক্যান। খামোশ থাকো। কারেক্ট করতেছি নিজেকে।