বিবিধ ও বিচিত্র

বিসর্জনে প্রতিরোধ

Reading time 6 minute

সন ১৯৬৩। ভিয়েতনামের রাজধানী সাইগনে জুন মাসের ক্যালেন্ডার ১১ তারিখের ঘরে সবে পা দিয়েছে। সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পুরোহিত হো চি মিনের নামে পরিচিত পেতে সাইগনের তখনো ম্যালা বাকি। দেশ জুড়ে গোলযোগ তখন তুঙ্গে উঠেছে। ভিয়েতনামের উত্তর অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে হো চি মিনের ওয়ার্কার্স পার্টি পুরোদমে সক্রিয় রেখেছে নিজেকে। কট্টরপন্থী রোমান ক্যাথলিক শাসক নো জিন ডিয়েম (Ngô Đình Diệm) আবার দক্ষিণ অঞ্চলে নিজের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে মরিয়া ছিলেন।

দেশের দুটি অঞ্চলকে ঘিরে চলমান সংঘাতে দুই পরাশক্তি সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুপ্রেবশ ততদিনে ঘটে গেছে। প্রবল পরাক্রান্ত দুই দানব ভিয়েতনামকে তখন দশকব্যাপী গৃহযুদ্ধের বলি হতে বাধ্য করছে। সমাজতন্ত্রী গেরিলাদের হাত থেকে দেশকে উদ্ধারের বাহানায় কাতারে-কাতারে মার্কিন সেনা ঢুকছিল সেখানে। নাপাম বোমা ফেলে ক্ষান্ত হওয়ার বান্দা তারা নয়। দশকওয়ারি সংঘাতে দেশের এক ইঞ্চি মাটি অবশিষ্ট রাখব না;—এই পণ নিয়ে লাগাতার উড়ছিল বোমাবহনকারী যুদ্ধবিমান।

সকলের জানা,—ভিয়েতনাম যুদ্ধকে কেন্দ্র করেই ঘটে বিট জেনারেশন হিপি উত্থান। বদলে যায় রকগানের পুরোনো চেহারা। মার্কিনী লোকসংগীত গেয়ে সকলের মন কাড়তে থাকা বব ডিলানের সংগীতসত্তায় ঘটে আমূল রূপান্তর। টেলিভিশন স্টুডিওতে হাজির কবি অ্যালেন গিন্সবার্গ প্রকাশ্যে পাঠ করেন তাঁর সেই বিখ্যাত পঙক্তিচরণ :

America when will we end the human war?
Go fuck yourself with your atom bomb.

Allen Ginsberg reads America; Source – awetblackbough YTC

তার মধ্যেই নিউ ইয়র্কের হার্লেমকে কেন্দ্র করে দানা বাঁধছিল বর্ণবাদী আচরণের প্রতিবাদে কৃষ্ণাঙ্গদের একজোট হওয়ার ঘটনাগুলো। ম্যালকম এক্স আর মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র হয়ে উঠেন কালো মানুষের অধিকার আদায়ের প্রতীক। হার্লেমকে ঘিরে রকগানের পিঠে জন্ম নিচ্ছিল হিপহপ কালচার। গ্রাফিতি ও Rap গানের বিস্ফার ঘটার অপেক্ষায় মুহ্যমান কৃষাঙ্গপাড়া। এবং, তার মধ্যেই মার্কিন জীবনে বীতশ্রদ্ধ শ্বেতাঙ্গ যুবা-যুবতীর দল ছেঁড়াফাটা জিন্স আর হাসিস ও এলএসডিতে দম দিয়ে বুঁদ হচ্ছিল নির্বেদঘন হতাশায়। একফালি প্রশান্তির খোঁজে চলে আসছিল তাদের চোখে রহসময় ও মরমি ভারত, চীন কিংবা জাপান। কলকাতা আর গোয়া শহর তখন হিপিদের মিছিল। হিমালয় জমাট তাদের পদচারণায়।

যে-দেশটিতে আমেরিকার অনুপ্রবেশকে নিয়ে এত হট্টগোল বিশ্বকে সইতে হয়েছে প্রায় দুই দশক, সেই ভিয়েতনামের দক্ষিণাঞ্চলে কর্তৃত্ব ধরে রাখতে মরিয়া নো জিন ডিয়েমের জন্য জুন মাসের ১১ তারিখ ছিল সবচেয়ে খারাপ দিন। তার পাপের ভার পূর্ণ করতে সূর্য উঠেছিল সেদিন। হো চি মিন অনুসারীদের শায়েস্তা করতে জেরবার খ্রিস্টান শাসক স্নায়ুচাপে ভুগতে শুরু করেছেন ততদিনে। সামাল দিতে বুদ্ধ অনুসারীদের ওপর চড়াও হলেন এবার।

গোঁড়া ক্যাথলিক হিসেবে তাঁর কুখ্যাতি ভিয়েতনাম জুড়ে মশহুর ছিল। রাজধানী সাইগনসহ গোটা দেশে ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের একচ্ছত্র রাজত্ব কায়েমের ভূত চেপেছিল মাথায়। ভিয়েতনাম বৌদ্ধ অধ্যুষিত দেশ। তা-সত্ত্বেও গৌতম বুদ্ধের অনুসারীদের ধর্মপালনে গায়ে পড়ে বিঘ্ন তৈরিতে মাতলেন শাসক। আজব সব সরকারি ফরমান আসতেই থাকল একের-পর-এক।

Ngo Dinh Diem; Photo: Records of the U.S Information Agency; Source – thevietnamese.org

সরকারি চাকুরি, সেনাবাহিনি ও বিদ্যালয়ে ক্যথলিকদের প্রাধান্য দেওয়ার বিধি-বিধান খাড়া করলেন জনাব। গৌতম বুদ্ধের জন্মদিনে পতাকা উড়ানোর চিরাচরিত প্রথা পালনে জারি করা হলো নিষেধাজ্ঞা। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা অনেকে প্রতিবাদে রাস্তায় নামলে তাদের পিছনে পেটোয়া বাহিনি লেলিয়ে দিলেন তিনি। শিশুসহ একাধিক তাজা প্রাণ গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েছিল সেদিন।

দক্ষিণ ভিয়েতনামের ওপর একচ্ছত্র স্বেচ্ছাচারিতা কায়েমে সফল রাষ্ট্রপ্রধানের উদভুট্টি কাণ্ডের বিরুদ্ধে বাদ-প্রতিবাদের সবটাই ১৯৬৩ সনে জুন মাসে দেখা দেওয়া দিনটির আগে ঘটছিল। সরকারি নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণের ভয়ে বৌদ্ধরা চুপসে গেছে বলে ধরেই নিয়েছিলেন জনাবেআলা নো জিন ডিয়েম। আর, তখন এলো সেই দিন…

ডেটলাই জুন ১১, ১৯৬৩। মঠ থেকে বেরিয়ে এলেন এক বৃদ্ধ ভিক্ষু। কর্মব্যস্ত রাজধানীকে চমকে দিয়ে বসে পড়লেন রাস্তায়। পদ্মাসনে ধ্যানস্থ ভিক্ষু গায়ে আগুন ধরালেন, এবং দেহ পুড়ে ছাই হওয়া পর্যন্ত থাকলেন স্থবিরজাতক! সকলকে চমকিত ও আতঙ্কিত করে তিনি পুড়ছিলেন। আগুনের লেলিহান শিখা তাঁকে গ্রাস করছিল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে হাড়মাসচামড়া পোড়ার উৎকট গন্ধ। কারো সাহস হচ্ছে না আগুন নেভায়। ভিক্ষু যথারীতি সমাহিত ও নিশ্চল। মুখ দিয়ে উফ আওয়াজ অবধি বের হচ্ছে না! না তার দেহে পরিলক্ষিত হচ্ছিল কোনো বিকার!

The Burning Monk by Malcolm Browne; Image Source – Google Image

পাটকাঠি যেমন করে জ্বলে, বৃদ্ধ ভিক্ষু অনেকটা সেরকম পুড়ে অঙ্গার হলেন জুনের ১১ তারিখ। এসোসিয়েটেড প্রেসের আলোকচিত্রী ম্যালকম ব্রাউনির ক্যামেরা কেবল ধরে রাখল এই অগ্নিবিসর্জন। তাঁর সুবাদে বিশ্বের প্রতি কোণায় ছড়িয়ে পড়ল থিক কুয়াং ডুক (Thích Quảng Đức) নামে পরিচিত বৌদ্ধ ভিক্ষুর শান্ত-অচঞ্চল অগ্নিহুতির সংবাদ।

আন্তর্জাতিক বিশ্ব নড়েচড়ে বসলেন। বিচলিত মার্কিন রাষ্ট্রপতি জন এফ কেনেডি বলতে বাধ্য হলেন,—বিশ্বের ইতিহাসে আর কোনো ছবি মানুষকে এভাবে এতটা আবেগতাড়িত করেনি। ঘটনার পরবর্তী ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সহজে অনুমেয়। ক্ষোভের পারদ আপনা থেকে নো জিন ডিয়েমের মেয়াদে ইতি টেনে দিয়েছিল। এমনকি হারিয়েছিলেন মার্কিন সমর্থন।

বৌদ্ধ ভিক্ষুর আগুনে জীবন বিসর্জনের ছবিটি নেট ঘাঁটতে যেয়ে একদিন চোখে পড়েছিল। প্রথমে ভেবেছিলাম, কোনো মুভির দৃশ্য দেখছি বোধহয়! পরে বিস্তারিত জানতে পেরে শরীর অসাড় ছিল ক্ষণিক! জানি না কেন আজ সেকথা মনে পড়ছে খুব!

একথা বিদিত জগতে, একজন সত্যিকারের ভিক্ষু নামেই কেবল জগতে বেঁচে থাকেন। গৌতম বুদ্ধের সবক তাকে এতটাই স্থবির করে তোলে, দমদেওয়া কলের পুতুল হয়ে দিনের কাজগুলো সারেন বেচারা! আর, অপেক্ষা করেন কখন দেহের খাঁচায় শেষ টোকা পড়বে মরণের।

মরণ, যেটি এই দেহকে কেবল নিভিয়ে দেবে তা নয়, অন্য স্বরূপ ধরে ধরায় পুনরায় ফেরত আসার পথ রুদ্ধ করবে চিরতরে। থিক কোয়াং ডুক সেই স্তরে ততদিনে উপনীত হয়েছিলেন বোঝা যায়। যে-কারণে পদ্মাসনে ধ্যানীযোগীর প্রতিচ্ছবি হয়ে নিজেকে অবলীলায় আগুনে আত্মাহুতি দিতে জানে একটুও কাঁপন ধরেনি তাঁর! না করেছেন আর্তচিৎকার। না তার দেহ ক্ষণিকের জন্য হলেও হুতাশনে হয়েছিল চঞ্চল! ছবিটির দিকে তাকালে দেহে শিহরন বয়ে যায়। বিসর্জনে প্রতিরোধের নজির হয়ে নেট দুনিয়ায় আজো যেন-বা জীবিত বুদ্ধং শরণাং গচ্ছামির মন্ত্রসিদ্ধ সাধক!

Why Has Bodhi-Dharma Left for the East? by Bae Yong-kyun; Source – Peter Kien’in Dram Atölyesi YTC

বৌদ্ধ বা জেনমার্গে দেহযাপন ও তার অবক্ষয়কে সাধক কীভাবে মোকাবিলা করেন, তার নিখাদ বিবরণ বে ইয়ং-কিয়ুন নির্মিত চলচ্চিত্র হোয়াই হ্যাজ বোধিধর্মা লেফ্ট ফর দ্য ইস্ট-এ (Why Has Bodhi-Dharma Left for the East? (1989) দেখেছি একদা। থাই নির্মাতা অ্যাপিচ্যাটপঙ বিরাসেতাকুলের একাধিক ছবিতেও শান্তমার্গে বিচরণের মধ্য দিয়ে কর্মচক্রের দায় মিটানো আর দেহকে নিভতে বলার বিবরণ দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছে বৈকি!

সারকথা একটাই সবখানে,—যতদিন বেঁচে আছো, দেহের প্রয়োজন মিটানোর কাজগুলো শান্তমনে করে যাও;—আর প্রস্তুত হও বিসর্জনের জন্য। প্রস্তুত করো নিজেকে;—যেন পুনরায় কর্মচক্রে প্রবেশ করতে না হয়। নিরোধ করো সকল বিকার ও অস্থিরতা। যতদিন আছো ধরায়, বৃক্ষের মতো বাঁচো। তার মতো ফুল-ফল-কাঠ সবটা দিতে থাকো অভিযোগহীন।

তার মানে কি তুমি মরাকাঠ? তা-যে নয় সেটি থিক কোয়াং ডুক সেদিন আগুনে নিজের দেহ বিসর্জন করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। হুতাশনে নিজেকে দাহ করার আগে শেষ ইচ্ছাপত্র লিখেছিলেন ভিক্ষু, যেখানে গাঁথা ছিল বিশ্ববাসীর প্রতি তাঁর আর্তবাণী। কী লিখেছিলেন থিক কোয়াং ডুক। তিনি লিখেছিলেন :

আমি থিক কোয়াং ডুক স্বেচ্ছায় এই আত্মাহুতি দিচ্ছি। বৌদ্ধ সন্ন্যাসী হিসেবে আমি গভীরভাবে ব্যথিত, কারণ আমাদের ধর্ম পালনের স্বাধীনতা বিঘ্নিত হচ্ছে ভীষণ।

রাষ্ট্রপতি নো জিন ডিয়েমকে বলছি, আপনার বৌদ্ধবিরোধী নীতিগুলো পালটান। সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা রাখুন। আমি আমার জীবন উৎসর্গ করছি, যেন দেশবাসী আবারো এক হতে পারেন, যেন শান্তির পথে ফেরত আসেন সবাই। গৌতম বুদ্ধের পথ অনুসরণ করুন। ঘৃণা ও প্রতিশোধের কোনো স্থান যেন কারো হৃদয়ে না থাকে।

Thích Quảng Đức; Image Source – Wikipedia

থিক কোয়াং ডুককে মহিমান্বিত বা গিনেস বুক অব রেকর্ডস-এ নথিবদ্ধ হওয়ার মতো আশ্চর্য ঘটনা রূপে হাজির করার খায়েশে আজকের পোস্ট নয়। ভিক্ষুকে স্মরণ করছি একথা ভেবে,—দেহমনের সকল চাওয়া-পাওয়ার উদগ্র ক্ষুধাকে ধীরে-ধীরে হিমাঙ্কের নিচে কবর দিতে থাকা কোনো অচঞ্চল সন্ন্যাসী ঠিক কখন এরকম কাণ্ড ঘটাতে বাধ্য বোধ করেন? যেখানে তাঁর অচঞ্চল মনে এই খেদ জাগে,—আর সহ্য করা যাচ্ছে না, প্রতিবাদ করতেই হবে এর।

থিক কোয়াং ডুকের মতো মানুষ বাধ্য হয়েছিলেন রাষ্ট্রকে এই বার্তা দিতে,—নিখিল প্রকৃতিতে কেউ কারো দেহের মালিক নয়। না-কারো হক আছে এটি বলার,—এখন থেকে তার ইচ্ছা ও ফরমানে সব চলবে। এখানে এসে তিউনিসিয়ার ফলবিক্রেতা মোহাম্মেদ বুয়াজিজি কিংবা ভারতে দলিত সম্প্রদায়ের রোহিত ভেমুলারা অভিন্ন হতে থাকেন।

মোহাম্মেদ বুয়াজিজি তো একজন ছাপোষা গরিব ফলবিক্রেতা ছিল। পুলিশি উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে গায়ে আগুন লাগিয়ে জীবন বিসর্জন দিয়েছিল দুইহাজার দশ সনে। ছোট্ট সে-ঘটনা থেকে জন্ম নিলো বারুদ। সরকারের বিরুদ্ধে জনরোষ তিউনিসিয়ায় আটকে থাকেনি। বুয়াজিজির আগুনেপোড়া দেহ থেকে জন্ম নিলো আরব বসন্ত। মিশরে যার অকল্পনীয় উত্থান বিশ্বকে স্তম্ভিত করে তখন!

দলিত সম্প্রদায়ের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া যুবক রোহিত ভেমুলা আগুনে প্রাণ বিসর্জন দেননি। তার ওপর ঘটা অবিচারের প্রতিবাদে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন। থিক কোয়াং ডুকের মতো রোহিতও ছোট্ট চিরকুটে বার্তাটি নাকি দিয়েছিলেন,—রাষ্ট্র ও সমাজের অধিকার নেই তার দেহকে জিম্মি করে। এই দেহ একান্ত রোহিত ভেমুলার, এবং এর ওপর খবরদারির দায়িত্ব তিনি কাউকে দেননি। কেলেঙ্কারি ঢাকতে ভারত পুলিশ রোহিত দলিত নন ও চিরকুট-ফিরকুট কিছু লিখে যাননি বলে নাটক করেছিল বিস্তর।

Remembering Mohamed Bouazizi: The man who sparked the Arab Spring; Source – Al Jazeera English YTC

মানুষ সে ওই থিক কোয়াং ডুক হোক অথবা মোহাম্মেদ বুয়াজিজি, সে হতে পারে রোহিত ভেমুলা বা স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণের অপরাধে হেনস্থার শিকার কোনো মুক্তিযোদ্ধা… সকলে তারা অভিন্ন। শাহবাগ আন্দোলনের সময় প্রেসক্লাবের সামনে গায়ে আগুন দিতে গিয়েছিলেন এক মুক্তিযোদ্ধা। পুলিশ তাকে নিরস্ত করে তখন। কিন্তু তাতে কি তার মনের জ্বালা প্রশমিত হয়েছিল? না, হয়নি। কিছু খবরদারি এমন হয়,—অচঞ্চল মানুষকেও প্রতিবাদে নামতে বাধ্য করে।

থিক কোয়াং ডুক, মোহাম্মেদ বুয়াজিজি, রোহিত ভেমুলা অথবা সেই মুক্তিযোদ্ধা… তাঁরা প্রত্যেকে আসলে আমাদের দেহের ভিতরে সক্রিয় এক-এক খণ্ড প্রতিরোধ। এই বার্তা জানাতে ফিরে-ফিরে নিজেকে বিসর্জন দিয়ে চলেছেন :—মানুষের দেহমনের ওপর নিখিল প্রকৃতি ছাড়া অন্য কারো চাপানো অবরোধ কাম্য নয়।

যে-মানুষটি ধরায় আগমন করে, এখন নিজের এই আগমনের ওপর তার কোনো হাত নেই। বিদায়ের দিনক্ষণও সে জানে না সঠিক। না এর ওপর থাকে কর্তৃত্ব। তাই যদি হয়, তাহলে তার ওপর জুলুম ও অবরোধ চাপানোর অধিকার কারো থাকতে পারে না। থাকা উচিত নয়। পরিস্থিতি অবশ্য ভিন্ন কথা বলেছে সবসময়। মানবপ্রাণের সূচনা থেকে আজোবধি ক্ষমতার যথেচ্ছাচার সবখানে একযোগে চলছে! কেউ তা আজো থামাতে পারেনি!

থিক কোয়াং ডুকের ছবিটি চ্যাটজিপিটিকে দেখিয়ে জানতে চেয়েছিলাম তার প্রতিক্রিয়া। অ্যালগরিদমের সাহায্যে পরিচালিত যান্ত্রিক মন উত্তর দিয়েছিল :—এটি এমন এক দৃশ্য যা রাষ্ট্রকে ব্যথিত করতে পারে, কিন্তু পরাস্ত করে না! যান্ত্রিক মনও বুঝে গেছে, মানুষের হাতে গড়া বিশ্বে মানুষ নিজে কতটা অসহায় আর বিপন্ন পক্ষীশাবক! 
. . .

The Burning Monk by Devamitra; Source – London Buddhist Centre YTC

. . .

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 5 / 5. Vote count: 32

No votes so far! Be the first to rate this post.

Contributor@thirdlanespace.com কর্তৃক স্বত্ব সংরক্ষিত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *