দেখা-শোনা-পাঠ - পোস্ট শোকেস

পাঠ-অনুভবে অগ্নিশিখা ও মনোজ

Reading time 6 minute
5
(31)
Little Magazine Agnishikha and Manoj; Image Source – Collected; @thirdlanespace.com

ছোটকাগজের নিয়মিত প্রকাশনা ও হঠাৎ অবলুপ্তির চেয়ে পাঠকের মনে স্থায়ী ছাপ তৈরি করাটা বরং অধিক গুরুত্ব রাখে। যেমন ধরা যাক, ঢাকা থেকে নববই দশকে প্রকাশিত প্রান্ত বা গাণ্ডীব, আর চট্টগ্রামের লিরিক লম্বা সময় ধরে ধারাবাহিক থাকতে পারেনি। সংখ্যাগুলো তথাপি মনে ছাপ ফেলার মতো সমৃদ্ধ ছিল। অন্যদিকে, একবিংশ বা নিসর্গ-র ধারাবাহিক প্রকাশ পাঠককে মনে রাখার মতো একাধিক সংখ্যা উপহার দিয়েছে।

অগ্নিশিখা ও মনোজ-র সম্প্রতি প্রকাশিত সংখ্যা এই জায়গা থেকে দেখলে বেশ উমদা লেগেছে পাঠ করে। অগ্নিশিখা সম্ভবত সিলেট থেকে প্রকাশিত প্রথম ছোটকাগজ, ক্রোড়পত্র প্রকাশের জনপ্রিয় ধারা থেকে বেরিয়ে নিখাদ বিষয় ভিত্তিক সংখ্যায় করেছে মনোনিবেশ। বাউল গান ও বাউলপদ রচয়িতা মহাজনদেরকে নিয়ে ছোটকাগজে লেখালেখির প্রথা অনেক পুরোনো; তবে ধারাবাহিক কাজের সংখ্যা এখনো বেশি বলা যাবে না। পরপর তিনটি সংখ্যায় অগ্নিশিখা সেই ঘাটতি পুষিয়ে নিতে চেষ্টা করেছে।

সাম্প্রতিক বাউল ফকিরের তত্ত্বতালাশ ও এর আগের সংখ্যায় হাওরপারের লোকগান মূলত এখানে এসে পাঠগুরুত্ব দাবি করে। সিলেট অঞ্চলে বাউল গানের বিকাশ ও প্রভাবসূত্রকে ধরার চেষ্টা উভয় সংখ্যায় পরিলক্ষিত। সূচিপত্র এদিক থেকে বৈচিত্র্যময় মানতে হবে। দুই বাংলা মিলে যাঁরা লিখলেন, তাঁরা পরিচিতজন। অত্র অঞ্চলের বাউল গানের সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার কমবেশি দেহমনে বহন করছেন। লেখার মধ্যে সংগতকারণে অন্তরঙ্গ অবলোকনের প্রয়াস পাঠকের পাওয়ার কথা।

বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের মধ্যে হাওরবেষ্টিত সুনামগঞ্জ কেবল বাউল মহাজনদের তীর্থভূমি নয়, লোকসংস্কৃতির খনিও বটে! হাওরপারের লোকগান সংখ্যায় চোখ রাখলে তার একটি ছবি ক্রমশ চোখের সামনে সবাক হয়ে ওঠে। উরি গান, ঘাটু গান, ধামাইল, মালজোড়া, বাঘাই সিন্নি, পদ্মপুরাণ, এবং মঙ্গলকাব্যের সঙ্গে অত্র অঞ্চলের সংযুক্তির চালচিত্র অগ্নিশিখার এই সংখ্যায় পাঠক পাচ্ছেন। বেশিরভাগ লেখা তথ্য সরবরাহে ঝুঁকে থাকলেও তাদের মূল্য তাতে তুচ্ছ হয়ে যাচ্ছে না। হাওর অঞ্চলের জীবনধারাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত বিচিত্র আচার-অনুষ্ঠান, গান ও নৃত্যের সঙ্গে পাঠকের পরিচয় ঘটাতে লেখাগুলো কাজের।

Publications: Little Magazine Agnishikha; Image Source – Collected; @thirdlanespace.com

ঘাটু, মালজোড়া ও ধামাইলের মতো গানের আঙ্গিক ও গায়নকৌশল কিন্তু সময়ের সঙ্গে অবলুপ্ত অথবা সীমিত হওয়ার পথে। গানের নাগরিক আবহের যে-বিবর্তন এখন ঘটছে, সেখানে এই লোকফর্মগুলোকে মানুষ একপ্রকার ভুলতে বসেছেন। এগুলোর সাংস্কৃতিক ও দর্শনগত ভিত্তি অন্বেষণের প্রয়াস উপেক্ষিত। নিভে আসা সলতেটি সম্পাদক সুমন বনিক উসকে দিতে পেরেছেন। এ-কারণে হলেও হাওরপারের লোকগানে সাজানো সংখ্যাটি পাঠকমনে আগ্রহ জাগিয়ে রাখে।

অত্র অঞ্চলে যেটি ঘাটুগান,—রাজশাহীসহ ওপারবাংলার একাংশ জুড়ে সেটি আবার আলকাপ থিয়েটারের ভিত্তি। প্রখ্যাত লেখক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ লম্বা সময় আলকাপে যুক্ত ছিলেন। আলকাপের মঞ্চে শেকসপিয়ারের মার্চেন্ট অব ভেনিস মঞ্চায়নের নিরীক্ষায় হাত দিয়েছিলেন সিরাজ। তাঁর অলীক মানুষ অনেকে পড়েছেন, কিন্তু আলকাপ ওরফে ঘাটু নিয়ে লেখা মায়ামৃদঙ্গ সে-তুলনায় কম পঠিত।

আলকাপ বা ঘাটু গানে ছেলেকে মেয়ে সাজিয়ে পার্ট করানোর ভিতরে কেবল সামাজিক বাধানিষেধ ও সংস্কার কাজ করত,—ঘটনা এতটা সহজ-সরল নয়। এর ভিতরে প্রবহমান থেকেছে মরমি যৌনানুভূতি। সিরাজ তাঁর মায়ামৃদঙ্গ উপন্যাসে যেটি তুলে ধরেছিলেন। মনোহর বিবরণের মধ্য দিয়ে তিনি সেই জায়গায় পৌঁছান, যার কল্যাণে আলকাপকে বিষামৃত গণ্য করলেও গ্রামীণ কৌম সমাজ তা পান করতে দ্বিধা করেনি। আলকাপ ছোকরা শান্তির রূপবর্ণনার কিয়দংশের উদ্ধৃতি আশা করি অবান্তর হবে না। সিরাজ লিখেছেন :

জামা পাজামা সব খুলে আন্ডারপ্যান্ট পরে ঠাণ্ডা কালো জলে নেমেছে শান্তিচরণ। আলকাপদলের মানুষেরা বড়ো নিলাজ হয়। গঙ্গা দেখেছে। শান্তি পুরো ন্যাংটা হয়ে জলে নামলেও অবাক হত না সে। কিন্তু কী ফরসা দুধের মতো ঝকঝকে শরীর শান্তির। কী নিটোল। সবসময় শরীরটা মেয়েদের মতো ঢাকা থাকার ফলে এইরকম হয়েছে। তেমনি নরম আর অপুটও। বিকৃতি ঘটবার ভয়ে ওস্তাদ ওকে এতটুকু খাটতে দেয় না। কাপড় কাচাও বারণ। ওস্তাদ বলে, এ নামতা ভুলো না—চলনে বলনে শয়নে স্বপনে তুমি নারী—সর্বদা নারী তুমি ভাবনায় ইচ্ছায় আহারে বিহারে। তবে না আলকাপের সার্থক ছোকরার জন্ম!

প্রথম-প্রথম গঙ্গা সকৌতুকে বলত, তা এত হাঙ্গামার দরকার কী বাপু? মেয়ে রাখলেই পারো দলে। ছাগল দিয়ে গরুর কাজ কেন? ঝাঁকসা ওস্তাদ হেসে উঠত।—কেন? তোমার সাধ যাচ্ছে নাকি? কিন্তু ছোটকি, কথাটা কী জানো? তাতে মায়া জমে না। [মায়ামৃদঙ্গ : সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ]

Maya Mridanga by Syed Mostafa Siraj Movie Scene; Director – Raja Sen; Source – Echo Bengali Movie YTC

এই মায়া আলকাপের প্রাণ;—ঘাটুরও তাই। আলকাপ ছোকরার রূপ বর্ণনার ছলে মায়াটি ওস্তাদ ঝাঁকসাকে দিয়ে সিরজ তৈরি করেন এখানে। নওল কিশোরের নারীভাবিক দেহকে ঘিরে সৃষ্ট সমকামী যৌন-উপাচার ছাপিয়ে আলকাপ যেখানে স্পিরিচুয়াল সেক্সিজম বা যৌন-আধ্যাত্মিকতায় উন্নীত হয়। ওস্তাদ ঝাঁকসা আলকাপ ছোকরাকে দৈহিক আবেদনের জায়গা থেকে রমণের পরিবর্তে ভাবিক আবেশে সম্ভোগ করে। শান্তির মধ্যে শিব-পাবর্তীর অর্ধনারীশ্বর যুগলবন্দি রূপকে মনে-মনে তালাশ করে সে। শান্তি হলো দ্বৈততার উপমা;—একই অঙ্গে নারী ও পুরুষ তার দেহে বিহার করছে, এবং মিলন-মৈথুন সারবার ক্ষণে সৃষ্টিকে বারবার সুফলা করে যাচ্ছে এই দেহ।

সিরাজের কাহিনি বর্ণনার গিমিক হলো,—ওস্তাদ ঝাঁকসা শান্তিকে শেষতক ধরে রাখতে পারে না! শান্তির ঝাঁকসাকে ছেড়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে আলকাপের মতো নাট্যউপাদানে ভরপুর ব্যঙ্গরসাত্মক লোকায়ত গানের মরণ ঘনায়। আধ্যাত্মিক ও মরমিরসে রূপান্তরিত হওয়ার মায়াময় সম্ভাবনা তামাদি হয় অবশেষে। ঘাটু গান এদিক থেকে আলাকাপের যমজ;—সারার্থ অভিন্ন। হুমায়ূন আহমেদের ঘেটুপুত্র কমলা, আর জফির সেতুর বক্ষ্যমাণ রচনায় এদিকটা মিসিং মনে হয়েছে।

যাইহোক, হাওরপারের লোকগান সংখ্যার প্রলম্বন আমরা পাচ্ছি অগ্নিশিখার বাউল ফকিরের তত্ত্বতালাশ সংখ্যায়। নিজে এই সংখ্যায় যেহেতু লিখেছি, বিস্তারে যাবো না। বাউল মহাজনদেরকে নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে আমাদের মৌলিক কিছু অন্তরায়ের কথা সেখানে বলার চেষ্টা ছিল, এবং সেটি অগ্নিশিখার গোছানো ও বেশ সমৃদ্ধ সংখ্যার পক্ষে অতিক্রম করা সম্ভব হয়নি। সুতরাং, আপাতত কথা আর না বাড়াই।

সিলেট তথা সমগ্র দেশে বাউল ঐতিহ্য বিপন্ন হওয়ার আলাপ অগ্নিশিখার তিনটি সংখ্যায় বিস্তারিত পরিসরে উঠে আসেনি, এটি হলো ঘাটতি। একুশ শতকের আবহ ও পটভূমিকায় বাউল গান ও মহাজন রচিত পদের সময়-প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণেও খামতি রয়েই গেছে। এর পেছনে পরিকল্পনা মাফিক লেখা পাওয়ার সঙ্কট সম্পাদককে ভুগিয়েছিল বোঝা যায়।

সীমাবদ্ধতা থাকছে, তবে বাউল নিয়ে সম্পাদকের ধারাবাহিক কাজ করার আগ্রহ পাঠকের টের পেতে অসুবিধে হয় না। সুতরাং, অগ্নিশিখার সর্বশেষ সংখ্যাকে পাঠগুরুত্বে স্থান দিতে কার্পণ্য থাকা উচিত নয়।

. . .

Little Magazine Manoj Publications; Image Source – Collected; @thirdlanespace.com

মনোজ-র সদ্য ভূমিষ্ট সংখ্যা গল্প-কবিতা ও গদ্য দিয়ে সাজানো। সিলেটে এই আঙ্গিকে ছোটকাগজ বের করার চল বহুদিনের। প্রথাটি মনোজ সম্পাদক ফয়জুর রহমান ফয়েজ ধরে রেখেছেন। সাম্প্রতিক সংখ্যাটি পাঠগুরুত্ব তৈরি করছে, যেহেতু,—পরিচিতমুখ লেখকের পাশাপাশি কতিপয় নতুন (হতে পারে আমার পাঠরেখায় তাঁরা অপিরিচিত) কবি, গল্পকার ও গদ্যকার এখানে নিজের ছাপ রেখেছেন সরবে।

দেশে ছোটকাগজ প্রকাশনায় অপরিচিত অথবা নতুন লেখকের পদচারণা পড়তির দিকে। ফেসবুক ও অনলাইন সাহিত্যপত্রে তাঁরা হয়তো লেখেন, যেখানে ছোটকাগজের সঙ্গে বনিবনা অতীতের মতো নিবিড় নেই। পরিচিত প্রবীণ একদল কবি-লেখককে ঘুরেফিরে লিখতে দেখার একঘেয়েমি থেকে মনোজ কিছুটা হলেও মুক্ত করেছে নিজেকে। বিগত দুটি সংখ্যায় তুলনামূলক অপরিচিত লেখকের সংখ্যা কম চোখে পড়েছিল। সম্প্রতি ভূমিষ্ট সংখ্যাটি প্রতিকূলতা অনেকখানি অতিক্রম করেছে। পাঠগুরুত্ব সুতরাং আপনা থেকে তৈরি হয় এখানে।

হতে পারে, মনোজ যাঁদের লেখা ছেপেছেন, তাঁরা অনেকে দীর্ঘদিন ধরে লিখছেন, কিন্তু সিলেটের কোনো ছোটকাগজে তাঁদের লেখা পড়েছি বলে মনে করতে পারছি না। পরিচিত লেখকের পাশাপাশি নতুন/ অপরিচিত লেখককে জায়গা দেওয়া এই সংখ্যার বড়ো অর্জন।

লেখার মান নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলতে পারেন। কুঁচকাতে পারেন ভুরু। মান একটি আপেক্ষিক বিষয়। পাঠকভেদে তা ডিফার করাটাই স্বাভাবিক। মনোজ-এ প্রকাশিত কবিতা ও গল্পপাঠের অভিজ্ঞতাকে ব্যক্তিপাঠক আমি অম্লমধুর অভিজ্ঞতা হিসেবে দেখছি। প্রতিষ্ঠিত ও সে-তুলনায় নবীন অনেকের কবিতার স্বরব্যঞ্জনায় সময়-প্রাসঙ্গিক পঙক্তিচরণ বেশ আনন্দ দিয়েছে। গদ্য ও গল্প সেই তুলনায় অতটা টানেনি। সাগর রহমানের নিরীক্ষামূলক গল্পভাষার পোয়েটিক টোন পড়তে মন্দ নয়, কিন্তু গল্পের এসেন্স বা সারবস্তু এখানে এতটাই সামান্য,—বিবরণে সংযম টানা দরকারি ছিল। এই ধাঁচের গল্পবয়ন যত কম পরিসর নেবে, উমদা হবে তা। অন্যথায় পাঠক্লান্তি চলে আসে দ্রুত।

নব্বই ও নব্বই পরবর্তী দশকি কবিদের একটি বিন্যাস মনোজ করেছেন। ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো, নব্বই পরবর্তী (আশা করি আমার অনুমান ভ্রান্ত নয়) সাইম খন্দকার, নাইমুল করিম, মোহাম্মদ ইকবাল প্রমুখরা ভিন্নস্বরে লিখছেন মনে হলো। নব্বই দশকি কবিতা বৈচিত্র্য ও কবিতা হয়ে ওঠার অঙ্গীকারে স্থির থাকতে যেয়ে ব্যাপ্তি লাভ করেছিল একসময়। বৈচিত্র্যের জায়গাটুকু বাদ দিলে সিংহভাগ কবিতার সঙ্গে সময় ও পরিপার্শ্বের বিচ্ছেদ কিন্তু সেখানে মারাত্মক ছিল। এমন এক বিমূর্ত কাব্যরীতি ক্রমশ শিকড় ছাড়িয়েছে নব্বইয়ে বাড়ন্ত কবিদের কবিতায়,—যেটি বিগত দশকি কবিতার সঙ্গেও সংযোগ রাখেনি।

Writers contributed Manoj Current Issue; Image Source – Collected; @thirdlanespace.com

দুইহাজার পঁচিশ সনে পা দিয়ে নব্বইয়ের অল্প কবিতাই যে-কারণে অমোঘ প্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে। বাকিগুলো কি তাহলে মণীন্দ্র গুপ্তের শর্ত মেনে কালের অপেক্ষায়? হতে পারে। তবে আমিপাঠকের কাছে নব্বইকে মনে হয় বাংলা কবিতার সবচেয়ে সম্ভাবনাময় একঘেয়ে দশক। যেখানে কবিতা গভীরে শিকড় ছাড়তে যেয়ে অগভীর কিছু বাকপ্রতিমা আর মেকি আত্মমগ্নতায় নিঃস্ব করেছে নিজেকে। এর প্রভবে হবে হয়তো, মনোজ-এ বেশ কিছু কবিতা নব্বইকে এড়িয়ে পুরাতন দশকিসীমায় ফের ঢুকছে বলে টের পেলাম যেন! আমার অনুমান ভ্রান্তও হতে পারে। কবিতার শক্তিতে গরিয়ান না হলেও নিরন্তর অনুশীলনের ভিতর দিয়ে এটি নতুন ভাষার জন্ম দিতেও পারে সামনে।

বলে নেওয়া ভালো, মনোজ-র এই সংখ্যায় কবিতার আধিক্য একদিক থেকে মন্দ নয়। প্রায় সকল ছোটকাগজে গদ্যের বাড়াবাড়ি চাপে কবিতা হাঁসফাঁস করছে মনে হয়। মনোজ-এ উলটো ঘটনা ঘটল, তাও দীর্ঘদিন পর। এটি ভালো লেগেছে। প্রথাকে পরিপোষকতা করা ছোটকাগজের কাজ নয়। তার জন্মই হয় প্রতিষ্ঠিত ও স্বীকৃত রীতিকে ভেঙে নতুন পথ দেখানোর তাগিদ থেকে। মনোজ এখানে প্রথা ভাঙার ঝুঁকি নিয়েছেন।

সিলেটে অগ্নিশিখা ও মনোজ-র মতো কাগজের প্রয়োজনীয়তা আছে বৈকি। সমকালীন পরিস্থিতির নিরিখেও সাহিত্যিক তৎপরতায় বৈচিত্র্যমুখী হওয়াতে নেই ক্ষতি। সেইসঙ্গে ধারাবাহিকতাও গড়ে ওঠা দরকার। ছাপাসংখ্যার পাশাপাশি তারা যদি অনলাইনে সক্রিয় হতে পারেন, সেক্ষেত্রে ছোটকাগজের সম্প্রসারণে নতুন মাত্রা যোগ হবে। সময়-উপযোগী হয়ে উঠবে অধিক। আমরা পুরাতনদের পাশাপাশি বেশি করে নবীন লেখকদের পড়তে চাই

কাজটি যদি তারা করতে পারেন, সেটি হবে ছোটকাগজের বড়ো সার্থকতা। বুদ্ধদেব বসু তো কবে বলে গেছেন : কারো মন যোগানো ছোটকাগজের কাজ নয়, তার কাজ মনকে জাগিয়ে তোলা। সিলেটি কাগজিয়ারা তা ধারণ ও স্মরণে রাখবেন আশা করি। 
. . .

Little Magazine Voices; Source – Soumya Chakravarti YTC

. . .

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 5 / 5. Vote count: 31

No votes so far! Be the first to rate this post.

Contributor@thirdlanespace.com কর্তৃক স্বত্ব সংরক্ষিত

One comment on “পাঠ-অনুভবে অগ্নিশিখা ও মনোজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *