এখানে আবার দুটি ভাগ দেখতে পাচ্ছি। শওকত ওসমান, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ, আবু জাফর শামসুদ্দীন বা রশীদ করীম উইরোসেন্ট্রিক বয়ানের মধ্য দিয়ে নিজেকে মুসলমানের গৎবাঁধা সংজ্ঞা থেকে বের করে আনতে তৎপর ছিলেন। এর বিপরীতে ফররুখ আহমদ, সৈয়দ আলী আহসান, শামসুদ্দীন আবুল কালামরা ইউরোসেন্ট্রিক বয়ানে গমন করলেও মোডারেট অথবা সেকুলার মুসলিম হওয়ার আকাঙ্ক্ষা তাদের মনে কস্মিনকালে জন্ম নেয়নি। মুসলমান সমাজকে তাঁরা ধারণ করছেন এবং এর উজ্জীবনের নিশান ইসলামি জাতীয়তাবাদে দেখতে পাচ্ছিলেন বেশ। অদ্য যে-বিষয়টিকে মর্মান্তিক পর্যায়ের প্রাসঙ্গিক করে তুলেছেন গত তিন-চার দশকে দেখা দেওয়া কবিলেখকের দল। এই জায়গা থেকে ভাবলে আবু জাফর শাসুদ্দীনের পদ্মা মেঘনা যমুনার বয়ানবিশ্বকে তাঁরা হয়তো প্রত্যাখ্যান করবেন এখন।
-
-
জনপ্রিয় সংগীতে চোখে পড়ার মতো গুণগত ও মৌলিক পার্থক্য না থাকায় এর কোনো কেন্দ্রীয় বার্তা থাকে না। তবে জনপ্রিয় সংগীত যে-দার্শনিক দৃষ্টিকোণ ধারণ করে, এর ভিতর দিয়ে অর্থ-সামাজিক প্রবাহের চিত্রখানা পাওয়া যায়, এবং এ-কারণে তার প্রভাব বাড়তেই থাকে। আধুনিক পুঁজিবাদে বিচ্ছিন্নতাবাদের সমস্যাকে সে প্রকট করে তোলে। জনপ্রিয় সংগীতে নিহিত ক্ষণিক আনন্দ হলো বিচ্ছিন্নতাবাদ থেকে একধরনের মুক্তি। সত্যিকার তৃপ্তি দিতে না পারায় অবিচ্ছিন্ন একটি চক্রে মানুষকে সে বেঁধে ফেলে। ভোগ, বিচ্ছিন্নতা, বিরক্তি ও বিক্ষিপ্ততাকে যেটি কিনা প্রলোভিত করে ।
-
এই-যে আশি-ঊর্ধ্ব জীবনে বেঁচে থাকলেন প্রতুল, আগাগোড়া নিজের বিশ্বাসকে ধারণ করে বাঁচলেন। গাইলেনও চিরঘুমের দেশে পাড়ি দেওয়ার আগে অস্তক। তাঁর সঙ্গে শেষ শুদ্ধ বামপন্থী কি বিদায় নিলো ওপার বাংলায়? যদিও শেষ বয়সে তিনি মমতাপন্থী হয়ে উঠেছিলেন বলে অভিযোগ আছে কমবেশি। গায়কির মতো নিরাভরণ ছিল প্রতুলের দিনযাপন। সেখানে বামপন্থাকে তিনি কীভাবে দেখেছেন, সময়ের সঙ্গে দেখার মধ্যে কী-কী নতুনত্ব যোগ হয়েছিল, আদৌ কতটা কী বিসর্জন দিয়েছিলেন অথবা দেননি... এসব নিয়ে চটজলদি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো আত্মঘাতী হবে। বিশ্বব্যাপী বামপন্থার মরণদশায় তাঁকে আসামি করে কী লাভ, সেও এক প্রশ্ন বটে!
-
হলুদ রংয়ের সূর্য দেখে ভয়ে কেঁপে ওঠে সবুজ পাতার দেশ। কোথাও যাবো না যাবো না করেও দূরে সরে যাচ্ছি বহু বন্ধন থেকে... স্বচ্ছ জলের প্লাবন ছেড়ে ...
-
জেডি ভান্স বোঝাই যাচ্ছে,- এসব মারপ্যাঁচ মাথায় রাখছেন এখানে। পাশাপাশি চীন অথবা ভারতের মতো রাষ্ট্র নৈতিক ও নিরাপদ প্রযুক্তির কথা বলে যেসব বিধান প্রণয়ন করবে বা করতে পারে সেখানে একচ্ছত্রবাদের সম্ভাবনা থাকছে। থাকার সম্ভাবনা অনুমান করা বোধহয় অসংগত নয় এক্ষেত্রে। ভোটের রাজনীতিতে মোদি হিন্দুত্ববাদকে অস্ত্র হিসেবে বরাবর ব্যবহার করে আসছেন। বিরোধীরা যেন বেশি চড়াও না হতে পারে সেজন্য নৈতিকতার ছলে সিকিউরিট অ্যাক্টে ক্ষতিকর নিয়ন্ত্রণ ভারত আরোপ করবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। আর চীন তো সবসময় এই কাজে সিদ্ধহস্ত! সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে নৈতিক, নিরাপদ করার মধ্যে সক্রিয় থাকবে নানান রাজনীতি ও ব্যবসাদারির একশো প্যাঁচ।