ক্ষমতা দূর হইতে সুন্দর,- নিকটে গেলে ‘প্রকৃত সারস উড়ে যায়।’ অন্যদিকে প্রতিরোধ ভীষণ সুন্দর, কিন্তু সে যখন প্রকৃতির নিয়মে ক্ষমতায় রূপান্তরিত হয়, তখন তারে পুনরায় প্রতিরোধ করা ছাড়া উপায় থাকে না। ভেবে দেখলে ক্ষমতা ও প্রতিরোধ একই সত্তার দুইখান ভিন্ন রূপ। এখন ক্ষমতা হইতে প্রতিরোধ আসে, নাকি প্রতিরোধ হইতে ক্ষমতা জন্ম নেয়, ওইটা অনেকটা ডিম আগে না মুরগি আগের মতো কঠিন প্যারাডক্স।
-
-
গত পনেরো বছর সাহিত্যের ভাষা ও শিল্পকুশলতা কাজে লাগিয়ে সার্কাজমে গমনের সাহস কবিলেখক সমাজে প্রবল হইতে দেখি নাই। উনারা বিস্তর অংবংছং লিখতেছিলেন। তার মধ্যে না ছিল ধার,- না গভীরতা। বিগত ও চলমান সময়কে বিচিত্র মাত্রায় টের পাওয়ার উপায় বাংলাদেশের বিজ্ঞ কবিলেখক বিরচিত সাহিত্যে বড়ো আকারে পাইছি বইলা একিন হয় না। রাডারে ধরা পড়বে এরকম কিছু কি সত্যি তারা পয়দা করতে পারছেন গেণ পনেরা বছর? উনাদের সাহিত্যিক তৎপরতায় না ছিল রস, না মিলতেছে গায়ে জ্বালা ধরানো পরিহাসমাখা হুল,- না পাওয়া যাইতেছে গভীর কোনো সংবেদ। কী মিলতেছে সেকথা ভেবে টাসকি খাইতেছি এখন।
-
আমি ভাই সোজা বুঝি,- বাংলাদেশে আপাতত দুইখান জিনিসের বিকল্প নাই। নাম্বার ওয়ান, যিনি দেশ চালানোর ড্রাইভারি করবেন উনাকে সিচুয়েশন কন্ট্রোলে দক্ষ হইতে হবে। গাড়ি রাস্তায় আছে না খাদে পড়তেছে এই বুঝটা থাকলে কাফি। গাড়ি চালাইতে গিয়া উনার গায়ে যদি লৌহশাসক, একনায়ক, একচ্ছত্রবাদী এবং অদ্য পপুলার লেবেঞ্চুস ফ্যাসিস্ট উপাধিখানা দেশের ছুচিল সমাজের মালপোয়ারা বসাইতে থাকে তো বসাক। হু কেয়ারস! ড্রাইভার সায়েবের ওসব মাথায় নিয়া কাম নাই। উনার গাড়ি লক্করঝক্কর। রোড এমন না যে ট্রাফিক আইন সবটা উনি মানতে পারবেন। আইন থাকবে কাগজে, গাড়ি চালাবে রোডের ভাও বুঝে;- কথা লাউড এন্ড ক্লিয়ার।
-
ফ্যাসিজম আদতে যমরাজ হয়ে মানুষের উপ্রে নিজের কাজবাজ চালাইতে থাকে। কাজেই এখানে ইজম-এ নিহিত প্রতীকী অর্থটারে ভাঙতে ফ্যাসিযম লেখা যাইতে পারে। যম কে বা কী-কারণে তার এহেন নামকরণ, সেইটা হয়তো কলিম খান ও রবি চক্রবর্তী জীবিত থাকলে ঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারতেন, তবে যম শব্দের ক্রিয়াভিত্তিক বুৎপত্তি বাদ দিলেও হিন্দু পুরাণের সুবাদে তার যে-বয়ান আমরা জানি, সেখান থেকে তার কাজের ধারা ভালোই ঠার করা যায়। সুতরাং ফ্যাসিজম নয়, আমরা অনায়াস লিখতে পারি ফ্যাসিযম। জুকারবার্গের অ্যালগরিদমকে এই ব্যাপারে ইনপুট দিলে তখন আবার শব্দটাকে ধরবে সে। অসুবিধা নাই, ফ্যাসিযম-এর মাঝখানে গাণিতিক অথবা অন্য চিহ্ন বসিয়ে নতুন অপিরিচিতকরণে আমরা যাবো তখন।
-
শিকল পাগলা এই চক্কর হইতে মুক্ত। অন্ধ চোখে দিব্যি সব দেখতে আছে সে! চোখের কী ধার! যখন গান করে,- আমাদের সকল জারিজুরি মনে হয় ন্যাংটা করে দিতেছে। জন্মান্ধ এই চক্ষুষ্মানের আঁখিঠারকে ফাঁকি দিবার নাই উপায়।