কোনো জাতিকে স্মৃতিহীন করার পয়লা কদম হচ্ছে স্মৃতি মুছে ফেলা। বইগুলো ধ্বংস করো, তার সংস্কৃতি ও ইতিহাস গুঁড়িয়ে দাও। তারপর নতুন কেউ নতুন বই লিখবে। নতুন সংস্কৃতি পয়দা করবে, নয়া ইতিহাস লিখবে। জাতি ভুলে যেতে বসবে সে কে ছিল বা অতীতে কী ছিল পরিচয়। ক্ষমতার বিরুদ্ধে মানুষের সংগ্রামের অর্থই হচ্ছে বিস্মৃত হওয়ার বিরুদ্ধে সংগ্রাম।
-
-
এখানে পৌঁছে জাহেদ স্বয়ং হয়ে উঠছেন বেমানান। একরোখা ও নিঃসঙ্গ হতে হচ্ছে তাঁকে। একে এখন বেঁচে থাকার পন্থা হিসেবে পোষ মানাতে হচ্ছে। লেডি গাগার বর্ন দিস ওয়ে গানের সারবস্তু ধার করেই বলি না-হয় : দিস ওয়াজ মাই ওয়ে। আই লিভ দিস ওয়ে, বিকজ গড মেইকস নো মিসটেক। লিভ দিস ওয়ে-র ইশতেহার হয়তো গ্রাসরুটসের পরিহাসমুখর কবিতা সিরিজে রেখে দিয়েছেন জাহেদ। তার একটি নমুনা এখানে তুলে রাখছি। বেমানান বিশ্বে যারা বেমানান,—তাদের করকমলে কবিতাটি নিবেদন করেছেন কবি;—যে-দলে তিনি রয়েছেন সগৌরব!
-
কবি ফজলুররহমান বাবুলের তুমি তেমনই বৃক্ষ জ্বর ও জ্বরবিহীন… দুরকম পরিস্থিতিতে বসে পড়া যায়। পড়তে-পড়তে এর সহজতাকে আলিঙ্গন করতে ইচ্ছা করে। কোনো কবিই সম্ভবত ইচ্ছে করে কঠিন লিখতে চায় না। লেখেও না। সে কেবল তার সত্তার মর্মরধ্বনি শব্দজালে ধরতে উতলা বোধ করে। অজান্তে তা কখনো-কখনো জটিল ও দুরারোহ হয়ে পড়ে!
-
আমাদের কাজবাজে স্থানিকতার বিচিত্র রং প্রায়শ অনুপস্থিত থাকে। যে-কারণে এগুলো প্রাণের জিনিস হয়ে ওঠে না। বিশ্বযোগ সারতে হলে ওটা কিন্তু লাগবে। স্থানিকতা হচ্ছে সেখানে কাঁচামাল। বিশ্ব থেকে যা কুড়িয়ে-বাড়িয়ে পেলেন,—সেগুলোর সঙ্গে এই কাঁচামাল ঠিকঠাক জুড়তে পারলে সত্যিকার বিশ্বযোগ ঘটে। সাধ্য থাকলে আমীনুর রশীদের মতো আরো যাঁরা ছিলেন বা এখনো রয়েছেন, তাঁদের নিয়ে কাজে নামাটা বোধহয় জরুরি হয়ে উঠছে ক্রমশ।
-
অনুকরণের এই-যে খেলা, এবং তার থেকে স্বরযন্ত্রের আদিভাগে যেসব ধ্বনিগত ব্যঞ্জনা মানুষ ধরার কসরত করে আসছে যুগের-পর-যুগ,—থ্রোট সিংগিং হচ্ছে এর প্রাথমিক ধাপ বা কাঁচামাল। স্বরযন্ত্রের পরবর্তী ধাপগুলোর মধ্য দিয়ে গমনের সময় যা সুষম আর মসৃণ হয়ে ওঠে। তৈরি হয় সুরেলা আবেশ ও গায়কি ইত্যাদি। সুতরাং একথা বলা যায়,—আন্তঃনাদ হচ্ছে মানবকণ্ঠে গীত সংগীতকলার অকৃত্রিম শিকড়। প্রকৃতিবক্ষ ও মানব-সভ্যতায় বিরচিত আওয়াজকে এর মধ্য দিয়ে কোনোপ্রকার ফিল্টারিং ছাড়া রেজোনেট বা প্রতিধ্বনিত করছে শিল্পী।