পথের সারার্থ সময়ের সঙ্গে রং পালটায়। আমরা যেমন নিশ্চিত নই এখন,—বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডের কোথায় দাঁড়িয়ে ঠিকঠাক! আমরা কি তাহলে রবার্ট ফ্রস্টের মতো দুই পথের মিলনস্থলে দাঁড়িয়ে? নাকি, জেমসের লেখা ও রককণ্ঠে ধ্বনিত একমুখী কোনো পথের সামনে আছি দাঁড়ানো? কেবল মনে হচ্ছে,—যে-পথেই দাঁড়িয়ে থাকি-না-কেন, সেই পথটি হতে চলেছে অন্তহীন কষ্ট ও হতাশার! ঈশ্বর জানেন,—অন্তবিহীন কি আছে/ এই পথের শেষে...।
-
-
জিহাদ হচ্ছে সকল প্রকার বিকার থেকে আত্মশুদ্ধির লড়াই;—সুফিপন্থী এই ব্যাখ্যা বা তার চর্চা মুসলমান-সমাজে হালে পানি পায়নি কোনোদিন। ইসলামকে নমনীয়, সহিষ্ণু ও পরিশিলীত রূপে বিশ্বে হাজির করার তাগিদ থেকে এ-পর্যন্ত যত ব্যাখ্যা জন্ম নিয়েছে, তার একটিও মুসলমান সমাজে অগ্রাধিকার পায়নি। ডমিনেট হওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না! অ্যাজ অ্যা গুড মুসলিম হিসেবে যারা নিজেকে ভাবছেন,—দুশো কোটি মুসলমানের মধ্যে তারা সংখ্যায় এখনো নগণ্য। যার ফলে মুসলমান মানসে ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠার খোয়াব ভীষণ তীব্র দেখি আমরা।
-
তাহলে কী লিখবে সে? সে লিখবে গাঢ় অন্ধকারে হায়নার চিৎকার! তার কলম ফেটে বের হবে একটি জনপদ ও জনগণের হাবা হওয়ার আজিব তামাশা! তামাশাটি তাকে কষ্ট দেবে। বেদনায় নীল হবে সে। তার হয়তো মনে হবে, জাগো বাহে কোনঠে সবাই লেখার মতো আওয়াজ চব্বিশে নেই। গাঢ় অমাবস্যা ছাড়া কোনো বাক্য লেখা শক্ত।
-
সৌমিত্রর মধ্যে বিপ্লবী বিকার গেড়ে বসতে পারেনি। পল্টি নেওয়ার মতলব সেখানে ছিল না। তার নিজস্ব রাজনৈতিক বোধ তাতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। বাঙালি জাতিসত্তাকে সে এতদিন যেভাবে জেনেবুঝে এসেছে, হৃদয়ে লালন-পালন ও আশাকারা দিয়ে গেছে সমানে, এবং এভাবে একটি সমীকরণে অকাট্য হয়েছে এতদিনে,—এখন সেটি ঝেড়ে ফেলতে যেসব যুক্তি ও বয়ান হাজির করা হচ্ছিল, সেগুলোকে ভ্যালিড ধরে নেওয়া সৌমিত্রর পোষায়নি। সুতরাং লাল বিপ্লবে সক্রিয় মতলবি ফ্যাসিবাদের চাষাবাদে যোগ দেওয়ার পরিবর্তে নিজের বিশ্বাসে অটল থেকেছে কবি।
-
বাংলাদেশের সীমানা ও সার্বভৌমত্ব অটুট থাকুক, এটি আমাদের একমাত্র চাওয়া। আমাদের বিদেশনীতির মধ্যে ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটুক, কোনো ব্লকের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে কৌশলী হয়ে উঠুক এই নীতি;—ছোট্ট দেশটির জন্য এটুকু যথেষ্ট। কিন্তু পরিস্থিতি সেরকম কি? শেখ হাসিনার ওপর অতিমাত্রায় ভারত নির্ভরতার অভিযোগ ছিল। ইউনূস কার ওপর নির্ভর করছেন সে এক খোদা জানে! কমলা হ্যারিস ইলেকশনে ডাব্বা মেরে তাঁকে বড়ো বিপাকে ফেলে দিয়েছেন। মার্কিন সরকার আর জর্জ সোরসের পোষা খেলনাটি বোধহয় নিজের গন্তব্য ঠার করতে পারছেন না। এসব কার্যকারণে ভারত যদি হাসিনাকে বংলাদেশে পুনর্বাসিত করার ছক কষে থাকে, যাকে আমরা গুজব ধরে নিচ্ছি আপাতত,—আখেরে সেটি ঘটলে অবাক হওয়ার কারণ থাকবে না।