‘চা’ শব্দটি আমার প্রিয়। দিনরাতে ভাগ করে নেওয়া টানাগদ্যের জীবন তাকে বাদ দিয়ে শুরু করার কথা আজো ভাবতে পারি না। চায়ের সঙ্গে আমার এই-যে নিঃশব্দ বোঝাপড়া ও মিতালি, লিখতে বসে বুঝতে পারছি,—এর আগে কখনো তাকে এভাবে অনুভব করা হয়নি। প্রতিদিনের ব্যবহৃত জিনিসপত্রকে আমরা অবহেলা করি। পাপোশের মতো ব্যবহার করি বলে হয়তো গুরুত্ব বোঝার মন থাকে না। সকাল-দুপুর-রাতের খাবার খাওয়ার মতো চায়ের কাপে চুমুক দেওয়ার ঘটনাও তাই মনে হচ্ছে এখন!
বিছানা ছেড়ে উঠার পর সারাদিন কেমন যাবে, চা-পানের সঙ্গে তার সম্পর্ক আমি বেশ টের পাই। দিনরাত কাজে-অকাজে ছুটোছুটির প্রেরণা (আমার কাছে ‘মা’) সেখান থেকেই আসে বলে আমার মনে হয়। চায়ের কাপে চুমুক না দিয়ে দিন যে-কারণে ঠিকমতো শুরুই হতে চায় না। সকালে এক কাপ চা ছাড়া গা ম্যাজম্যাজ করে। গায়ে-গতরে বল আসে না। মাথা জ্যাম হয়ে আছে ভাবার ভূত পেয়ে বসে যখন-তখন! কাজে বেরোনোর আগে চা আমার চাই!

মাঝেমধ্যে এমন হয়, কাজে বের হওয়ার তাড়াহুড়ায় চায়ের কাপে চুমুক দেওয়ার সময় থাকে না। ওই দিনটি আমার কাছে অভিশাপ! চায়ের কাপে চুমুক দিতে না পেরে দেহের ইঞ্জিন গড়বড় করে। উলটা-পালটা লাগে সবকিছু। মনে হয়, মাথা আজ কাজ করবে না! খেয়াল করে দেখেছি,—সকালবেলা হচ্ছে সেই মুহূর্ত, যখন ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে চলার পিপাসা আমাকে আউলা-ঝাউলা রাখে। কোনো কারণে সেখানে ছন্দপতন ঘটার মানে হচ্ছে দিনের বাকি সময়টুকু হাজার কাপ চা পান করলেও মেরামত হবে না! চায়ের সঙ্গে আমার এই রসায়ন এতদিন টের পেয়েও পাইনি বলে মনে হচ্ছে। লিখতে বসে ছবিখানা পরিষ্কার ধরা দিচ্ছে এখন!
‘আমি তোমাকে ভালোবাসি!’—ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপকে নিজের এই আবেগ ঢাকঢোল পিটিয়ে আজো বলা হয়নি। ভালোবাসার মানুষকে ভালোবাসার কথা না জানানোর মধ্যে অনুভব তীব্র ও গভীর থাকে বলে আমার ধারণা। মুখ ফুটে ‘ভালোবাসি… ভালোবাসি’ বলতে পারিনি বলেই হয়তো বুঝতেও পারিনি কখনো,—সামান্য এই চা-পাতার লিকারে ফেনিয়ে ওঠা সুগন্ধ ও স্বাদের প্রভাব আমার জীবনে কত নিবিড়! কতই-না গভীর চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে চলার একমুঠো প্রশান্তি!
দেশ ছেড়ে মার্কিন মুল্লুকে পাড়ি জমানোর দিন থেকে অনেক খুঁটিনাটি মনকে নাড়িয়ে যায়। চা তার মধ্যে অন্যতম। দেশে থাকতে তাকে মহার্ঘ মনে হয়নি কখনো। ঘুম থেকে উঠে চুমুক দিয়েছি চায়ের কাপে। সকাল-বিকাল-রাতের চক্করে যখনই তেষ্টা পেয়েছে,—ঘরে অথবা টংয়ের দোকানে বসে চায়ের পেয়ালায় দিয়েছি চুমুক। আলাদা কোনো ফিল টের পাইনি সেইসময়। ঘর থেকে বেরিয়ে চোখের সামনে টিলাজুড়ে ছড়ানো সবুজ চা-বাগানের বাহার দেখে-দেখে বড়ো হয়েছি। বাগান দেখতে যাওয়ার পরিকল্পনা করতে হয়নি কোনোদিন। বাড়ির উঠোন যেমন পরিচিত সকলের, আলাদা করে দেখবার বিষয় নয়,—আমার জীবনে চা-বাগানও সেরকম ছিল! অন্তত যতদিন দেশে ছিলাম পড়ে।
বাড়ি থেকে বের হলে তাকে হাতের নাগালে পাচ্ছি;—আলাদা করে দেখবার কী আছে! দেখেও না দেখার মতো চা ও চা-বাগানকে করেছি যাপন। জমে আছে হাজারো স্মৃতি! লিখতে বসে এখন বরং বিপদে পড়েছি। স্মৃতির কোনোটাই আহামরি ঠেকছে না। চা নিয়ে লিখতে হলে এমন কিছু লিখতে হবে আমাকে, অন্যদের কাছে যা অজানা-অচেনা মনে হবে। সেরকম কিছু খুঁজে পাচ্ছে না মন। চা-বাগানে গিয়েছি ভালো চা-পাতার খোঁজে। পুজো-পরবে ঢুকেছি ধামসা মাদল আর ঝুমুর গান শোনার লোভে। কুলি-কামিনিদের খাটনি দেখেছি আনমনে। অমানুষিক পরিশ্রমের বহর দেখে মন কখনো-সখনো বেদনায় ভরে উঠেছে। কবিতা লেখার বাই চেপেছে তখন। লিখতে পারিনি! কেন পারিনি সেকথা ভেবে এখন অবাক লাগছে!

দেশে থাকতে ছবি তোলার নেশা ছিল। শহরে আলোকচিত্রীদের সঙ্গে উঠবস ও খাতিরানা ছিল ভালোই। তাঁরা মাঝেমধ্যে দলবল মিলে বাগানে ঢুকতেন। ছবি তোলার মহড়া চলত। আমিও তুলেছি তখন। দুটি কুঁড়ি একটি পাতায় লেখা জীবেনের ছবি তুলতে ভুল করিনি। কেন জানি তার কিছুই অমূল্য মনে হচ্ছে না। মন কেবল এই অনুভব দিচ্ছে,—তুচ্ছ ঘটনার মাঝে মূলত লুকিয়ে থাকে জীবনের গভীর অনুভব। সুতরাং আমার চা-পান ও যাপনকে এভাবে ভাবতে বরং অধিক ভালো লাগছে। এভাবেই বলি না-হয় আরো কিছু কথা আপাতত।
চা ও চা বাগান একে অন্যের ভিতরে গলেমিশে থাকে। একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটিকে ভাবা আমার কাছে উদ্ভট লাগছে।। দেশের বাইরে পা দিয়ে বুঝেছি, জন্মভূমির সঙ্গে জড়িত সব চিহ্ন ও ঘটনা, আর পেছনে ফেলে আসা সময় ও মানুষের মুখগুলো কত মূল্যবান! কখনো মুছে ফেলা যাবে না এসব স্মৃতি। চা বাগান ও চা-পানের বয়স যেখানে আমার জীবনের সমান পুরোনো। সব বাদ দিয়ে শুধু চায়ের স্বাদ ও গন্ধের কথা যদি ভাবি,—আলাদা উন্মোচনের আনন্দ মনে জাগে।
চায়ের গন্ধ নির্ভর করছে অবস্থা, সময় ও পরিবেশের ওপর। ভোরবেলায় ঘুম থেকে জেগে ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপে চুমুক, আর নাসিকায় তার সুবাস টেনে নেওয়ার তৃপ্তি দিনের অন্যভাগে পাইনি আজো। একই চা-পাতা একই কারিগরের হাতে জ্বাল হচ্ছে, ফিকা অথবা দুধ-চা ঢালছেন কাপে, তবু কেন যেন ভোরবেলার সুবাস তাতে মিলে না! ফারাক বোঝার জন্য গণক হওয়ার প্রয়োজন নেই। দিন-দুপুরের হিসাব যারা নিতে জানে, তারা কোন বেলার চায়ে কেমন স্বাদ ও সুবাস মিলবে তার সবটা বলে দিতে পারবে একনিমিষে।
চায়ের গন্ধ ও সুবাসের কথা ভাবতেই আমার এখন আব্বার মুখখানা চোখের সামনে ভেসে উঠছে। চা-পান বিষয়ে তার ফর্মুলা মনে পড়ছে। আব্বা প্রায়ই বলতেন,—‘চা খাইতে অইলে পাতায় গন্ধ থাকতে অইবো।’ ভালো মানের চা-পাতা সবসময় ভালো লিকার দিতে পারবে, তার নিশ্চয়তা নেই। দুধ চায়ের ক্ষেত্রে চা-পাতা এমনিতেও বেশি লাগে। আম্মা দুধ-চা পছন্দ করতেন, তবে স্বাদ-গন্ধ ও লিকার নিয়ে তাকে বিপাকে পড়তে দেখেছি তখন। তার এক কথা,—‘ভালা পাতা জ্বাল দিলে সুন্দর গন্ধ নাকো লাগে। শরীলের লাগি খুব ভালা, কিন্তু ভালা পাতা দিয়া দুধ-চায়ে লিকার ভালা অওয়া সোজা নায়। তিতা অই যাইব, যদি বেশি জ্বাল দিলাও ভুলে। কম জ্বালে আবার রং বাইর অইত নায়। গন্ধও মরি যায় লিকারে দুধ দিলে ফরে। ফিকা চায়ে ইতা ঝামেলা নাই।’

আব্বা এখন লাল চায়ের ভক্ত হয়েছেন, আর চিরকাল দুধ-চা ভালোবেসে তার মধ্যে স্বাদ-গন্ধ ও লিকারের তরতাজা অনুভব বজায় রাখতে প্রাণান্ত আম্মাও পান করেন ফিকা চা। বয়সভারে দুধ-চায়ের মায়া তাকে ছাড়তে হয়েছে। বেছে নিতে হয়েছে হালকা জ্বালে তৈরি হতে থাকা লাল রং চা। লেবুর রস আর আদা-এলাচি-তেজপাতা-দারচিনি ইত্যাদি পড়লে বেরিয়ে আসে মন আনচান করা সুগন্ধ! আম্মা এখন ফিকা চায়ে খুঁজে পান জীবনের স্বাদ।
আমিও পাই। দুধ-চায়ের বদলে চিনিছাড়া লাল ওরফে ফিকা চায়ে খুঁজি জীবনের স্বাদ-গন্ধ ও প্রশান্তি। খুঁজে বেড়াই শরীর-মন চাঙ্গা রাখার উপায়। বউয়ের হাতে চা বনতে থাকে। চা জ্বাল হয়। তার সুগন্ধ নাকে এসে ঢোকে। ধোঁয়া ওঠা কাপ হাতে দ্রুত চুমুক দেই। হাতে সময় নেই। বাচ্চাদের স্কুলে পৌঁছে দিয়ে ছুটতে হবে কর্মস্থল। তারিয়ে-তারিয়ে চায়ের স্বাদ-গন্ধ নেওয়ার সময় কই হাতে! হায়রে মানুষের জীবন!
আব্বার কাছে বয়সের ভারে ক্লান্ত এক লোক ব্যাগভরতি চা-পাতা নিয়ে আসতেন। কে তিনি, কোথায় থাকেন, কেন চা-পাতায় ব্যাগ বোঝাই করে হানা দিতে থাকেন বাসায়… এসব প্রশ্ন মনে জাগেনি কখনো। ব্যবসার কাজে লোকজন আব্বার কাছে আসছেন, যাচ্ছেন। বিশিষ্ট না হলে কার ঠেকা পড়েছে তাকে জানার! ভুলটি তখন করেছি। বুঝিনি, যাকে হেলায় খেয়াল করছি না, তাকে একদিন স্মরণ না করে উপায় থাকবে না। যেখানে, কত বিশিষ্টের নামধাম দূরের কথা, মুখটাও ভুলে বসে আছি বেমালুম!
মনে পড়ছে, আব্বা আমাকে একদিন নিয়ে গেলেন লাক্কাতুরা চা-বাগানে। ইংরেজ আমলের সেই বাগানে গিয়ে দেখি ব্যাগ বোঝাই চা-পাতা নিয়ে যে-লোকটি আমাদের বাড়িতে কিছুদিন পরপর আসতেন, তিনি এই বাগানেরই লোক। আব্বা আমাকে বললেন,—‘তাইনোরে আমরার দোকান ও বাসায় আইতে দেখছ। তাইন তোমার চন্দ্রালী কাকা। সম্মান দিও। বড়ো মানুষ। বড়ো কাজ করইন তারা। কষ্ট করি অইলেও তাইনোর কাছ থাকি চা-পাতা নিও। আর কিছু নাই তাইনোর দোকানো।’

চন্দ্রালী কাকা আমাদের দেখে খুব খুশি হলেন। ছোট্ট ঘরে নিয়ে বসালেন। দোকান বলা যাবে না ঘরটিকে, আবার বাসা বলাটাও সম্ভব নয়। দোকান ও বাসার মাঝামাঝি কিছু ছিল তা। তিনি তখন আব্বাকে বলছেন…
বাবু কিতা দিয়া খাওয়াই আপনারে। ছেলেটারে নিয়া আইছইন!
আব্বা না-না করলেও তিনি হাসেন গালভরে : আমার ঘরো আর কিছু নাই। চা-পাতা বেশি দিমু আইজ, বেশির লাগি টাকা লাগতো নায় বাবু।
একবার পাতা আনলে মাস খানেক চলে যায়। পরেরবার বেশ দেরি করে আনতে গিয়েছিলাম চা-পাতা। তিন মাস হবে বোধহয়। মাস খানেকের মধ্যে যদি যেতাম, তাহলে চন্দ্রালী কাকাকে পাওয়া যেত। তিন মাসের মধ্যে ছবি পালটে গেছে। জীবনের পালা সাঙ্গ করে কাকা পাড়ি জমিয়েছেন অজানায়। চা-পাতা বিক্রির ঘরখানাও আর নেই। তার ছেলে মুদি দোকান দিয়েছে ততদিনে, তবে এখানে নয়, বাগানের ভিতরে অন্য কোথাও। পরিচিত এক বাগানিকে পুছতাছ করে সে-দোকানের ঠিকানা পেলাম। আব্বাকে লোকটি ভালোই চিনত। সমাদর করল মন খুলে; আর চন্দ্রালী কাকার ছেলে মাধবের সঙ্গে জমে গেল আমার। বয়সে আমার ছোট ছিল যদিও।
মাধবকে নিয়ে অনেক গল্প জমে আছে। বাগানে ফটোশুট আর পরবের দিনে যুতসই জায়গায় বসে গানবাজনায় কান পাতার সবটাই তাকে ছাড়া সম্ভব ছিল না। শহরের নামকরা ছবিয়াল ফখরুল ভাই ঘনঘন বাগানে ছবি তুলতে যেতেন। তাঁর সঙ্গে আমিও গিয়েছি বেশ নিয়মিত। চোখ বুজলে ফখরুল ভাইয়ের মুখখানা দেখি এখনো! ক্যামেরা ফেলে রেখে হলেন নিরুদ্দেশ! আহা!
লেন্স ও জুম নিয়ে কত কাণ্ডই মনে জাগছে এখন! কোনো একদিন হয়তো লিখব সেসব কথা। ক্যামেরায় চোখ রেখে ফখরুল ভাই অন্য মানুষ হয়ে যেতেন। তুলে আনতেন এমন এক জীবন ও জনপদের গল্প, যার সঙ্গে আমার ভালোবাসা ও দূরত্ব প্রায় সমান-সমান ছিল। মাধবের দোকানে ওই ফুটন্ত চায়ের কেতলি আর মাটির কাপে ধোঁয়া ওঠা চায়ে চুমুক দিতে-দিতে কথা বলে যেতেন। আহা! আর কি ফেরত পাবো তাঁকে! মনের ক্যামেরায় সবটাই অক্ষয় আজো!

দেশ ছাড়ার আগে পর্যন্ত চা-পাতা মাধবের দোকান থেকে কিনেছি। আব্বা ততদিনে রিটায়ার নিয়ে ফেলেছেন। আগের মতো মোটরবাইক চালিয়ে বাগানে যাওয়ার অবস্থা ছিল না। চা ও বাগানিদের সঙ্গে তার সংযোগে ঘটেছিল ইতি। আমার জীবনে চা নামক বস্তুর আবেদন এরকম তুচ্ছ সব দৈনন্দিনে নিবিড় থেকেছে সবসময়। চায়ের সঙ্গে দেখেছি চা-মানুষ। শুষে নিয়েছি গল্প-আড্ডা-গানে সজীব বাগানি-মানুষ। আর, ক্যামেরায় ধরে রাখার চেষ্টা করেছি বাগানি জীবনের টুকরো সব ছবি।
চায়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আরেকটি শব্দ,—সিগারেট। আমি অভ্যাস করতে পারিনি। বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে মাঝেসাঝে টান দিয়েছি, তবে দম রাখতে পারিনি কখনো। শ্বাসকষ্ট শুরু হতো টানলে। মুখ দিয়ে ধোঁয়া বের করার খেলাটির সঙ্গে ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপ মাঝেমধ্যে অভিন্ন লাগে আমার কাছে।
যাইহোক, চা আজো সঙ্গী আমার জীবনে। সকাল তাকে দিয়ে শুরু হয়। সে আমার ভোরের আলো। আগে দুধ-চায়ে চুমুক দিলেও এখন ফিকা চায়ের রং ও সুগন্ধে খুঁজে ফিরি হিম্মতে ভরা প্রেরণার রসদ। প্রেরণা ছাড়া জীবনের ঘানি টানা কঠিন। চায়ের কাপে চুমুক দিতে না পারলে নিজেকে শূন্য ও রিক্ত মনে হয়! আমি চা-খোর নই, তবে চা-প্রেমী তো অবশ্যই। কবীর সুমনের গানের মতো এক কাপ চায়ে খুঁজে বেড়াই পেছনে ফেলে আসা দিনগুলোর ছবি। খুঁজে বেড়াই আজকে যাপন করে চলা দিনের জমাখরচ!
. . .

. . .

লেখক পরিচয় : ওপরে ছবি অথবা এখানে চাপুন
. . .



