কালে অকালে চলে যাওয়া বন্ধুদের নিশ্চিত দীর্ঘশ্বাস, প্রতিবেশীদের জমানো সমস্ত আত্মবিশ্বাস - সবকিছু নিয়ে বসে আছে নরক এক - (অন্তরের অলিন্দে করে সে অনেক আলাপ) কেউ তাকে স্পর্শ করতে পারে না - না কোনো স্বর্গ অথবা প্রশান্তির পরম কোনো প্রলাপ...
-
-
সিডাকশন বা প্রলোভন বস্তুটি আসলে কেমন? আমরা কেন প্রলোভিত হই? মানবজীবনে প্রলোভনের ইতিবাচক কোনো ভূমিকা আছে কি? যদি থাকে তাহলে কীভাবে বুঝব কোনটি ভালো আর কোনটি পরিহার করা উচিত? বিচিত্র সব প্রলোভন রপ্ত করার কৌশল কেমন হতে পারে,- যেগুলো কিনা একজন মানুষকে সমাজে গুরুত্বপূর্ণ, আকর্ষণীয় ও সফল করতে ভূমিকা রাখে? ... প্রলোভন মানে খারাপ বা ক্ষতিকর এরকম ধারণা থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন। রবার্ট গ্রিন সেই ছকে বইটি লিখেছেন। বাস্তবজীবনে মানুষ তার নিজের ভিতরে প্রলোভনকে যেভাবে সক্রিয় হতে দেখে, তার সঙ্গে ছকটি মিলে যাওয়ার কারণে গ্রিনকে তারা লুফে নিয়েছিল। বইটির তুলকালাম সাফল্যের এটি মনে হচ্ছে বড়ো কারণ।
-
লেখক বলতে পারেন, আমার কিছু বলার আছে বলেই লিখি। বলার মানে তো অব্যক্ততাকে ব্যক্ত করা। যদি আমরা মনে করি লেখার কাজটা আসলে অব্যক্ততার বেদনা থেকে নিজেকে মুক্ত করার একটা প্রণালি, কিংবা আমরা যদি বলি—লেখকের নিঃসঙ্গতার মধ্যে লেখা একটা সঙ্গ, তবে কি শেষ কথা বলা হয়? নিশ্চয় না। লেখক লেখার মাধ্যমে অব্যক্ততাকে প্রকাশ করেন। এই প্রকাশটা হতে পারে নিজের সঙ্গে কিংবা পাঠকের সঙ্গে কথা বলা। লেখক কি তাঁর লেখার মাধ্যমে কথা বলতে পারেন না নিজের সঙ্গে, পাঠকের সঙ্গে? লেখা-পাঠে বোধ করি লেখকের মুখটা দেখা যায়। সবসময় দেখা না-গেলেও মাঝে মাঝে দেখা যায়।
-
LGBTQ-র ছাতার নিচে থাকা কুইয়ার হইতেছে এমন লোক যে কিনা নিজের যৌনঅস্তিত্বের ব্যাপারে ঘোরতর সন্দিহান। এখান থেকে একজন কুইয়ারের ঝামেলা শুরু হয়। উভকামী, নারী বা পুরুষ সমকামী অথবা হিজড়ার মতো দ্বৈত যৌনসত্তায় নিজের আত্মপরিচয় নিয়া সে পেরেশান হইতে থাকে। তার মনে তখন এমনসব ফ্যান্টাসি প্রকট হয়, বাস্তবতাকে ইগনোর যাইতে সেগুলাকে সে প্রয়োগ করে। সৌরভ রায় তাঁর রচনায় যেসব আর্টপিস সংযুক্ত করছেন, সেগুলোকে এখন যদি আমলে নেই তাহলে বিষয়টি আমরা ধরতে পারব। আমার ধারণা,- সামনে যে-যুগ আসতেছে সেখানে LGBTQ বইলা কোনো ছাতার অস্তিত্ব থাকবে না। পুরোটাকে কুইয়ার নামক ছাতার নিচে সমাজবিজ্ঞানীরা গোনায় ধরতে বাধ্য হবেন। উনাদের বর্গীকরণে অনেককিছু এখনো মিসিং।
-
ওই-যে স্ল্যাবের চিপায় পা হড়কাচ্ছেন কবিবর, গোঁসাইকে বলতেছেন হাতটা ধরে তারে পুরীষস্তূপে পতিত হওয়ার হাত থেকে পরিত্রাণ করতে, কায়সারের কবিসত্তার এইটা হইতেছে মূল সুর। এবং আমাদের সকলের ক্ষেত্রে সুরটা প্রযোজ্য। আমরা তো আদতে টাবুলা রাসা ছিলাম বাহে। প্লেটোর গুহায় বন্দি ছিলাম। গুহার মধ্যে যা দেখছি সেইটা ছিল চেনা। তার বাইরে যা ছিল তার সবটা অচেনা। আমাদের মধ্যে প্রথম যে-পামর ঘটনাচক্রে গুহা থেকে বাহির হয় ও পরম বিস্ময়ে দেখতে পায় গুহার বাইরে আশ্চর্য এক জগৎ বহমান, সেইটা ছিল আমাদের জন্য সবচেয়ে বড়ো বিস্ময়! দাসত্বের শিকল কেটে মুক্ত হওয়ার প্রথম আলোসুর। অবিষ্কারটা পরে একইসঙ্গে সম্ভাবনা ও বিপর্যয় নিয়া আসে আমাদের জীবনে।