এখন দুইহাজার পঁচিশ চলে। রাহমান তাঁর কবিতাটি ইরাকে উৎসর্গ করবেন বলে মনস্থির করেছেন। ঘুরছেন ঢাকা শহর।... কবি দেখলেন,—রাজু ভাস্কর্যে ইরা ঝুলছে। ধর্ষিতা ব্যালেরিনা আসাদের রক্তমাখা শার্টের মতো হাওয়ায় পতপত করে উড়ছে যেন! সব অবিকল ঊনসত্তর! প্রতিটি দরজা কাউন্টার কনুইবিহীন! তবু তা ঊনসত্তর নয়। না তাকে দুইহাজার বাইশ বলা যায়! ইরা সেদিন মুক্তির আনন্দে শরীর ভাসিয়ে দিয়েছিল হাওয়ায়।
-
-
ভয়েজার সময়ের সঙ্গে বিকল হয়ে যাবে। থেমে যাবে পথচলা। কিন্তু সোনালি চাকতিতে করে মানবধরার যেসব বার্তা সে মহাকাশে ছড়িয়ে দিলো, সেটি থামবার নয়। হতেও পারে ভিনগ্রহী কোনো প্রাণীর কাছে আচমকা পৌঁছে যাবে সেগুলো। পৌঁছাবে পাখির কূজন আর সাগরের গর্জন। আচমকা বেজে উঠবেন বিথোভেন নয়তো বাখ। চাক বেরির জনি বি গুড শুনে কি চমকে যাবে তারা? ৫৫টি ভাষায় পাঠানো শুভেচ্ছাবার্তার কোনো একটির অর্থ হয়তো ধরে ফেলবে, আর মানবধরায় পাঠাবে ফিরতি সংকেত।
-
ফিরে এসো চাকার পুরোটা আমি পাঠকের কাছে এক সাইকিজার্নি। বিনয়ের অবচেতন থেকে উঠে আসা প্রত্যাখ্যানের মর্মর উচ্চারণ ছিল এসব কবিতা। তার কতটা বাস্তবের কোনো গায়ত্রীকে ভেবে তিনি লিখেছেন, আর কতটা কল্পনায় গরিয়ান গায়ত্রীর জন্য নিবেদন, তার বিন্দুবিসর্গ অনুমানের সাধ্য আমার নেই। সে-আগ্রহ কখনো ভিতরে তীব্র হয়নি। তবু কেন মনে হচ্ছে,—এর সবটাই হে দেবী, কেবল তোমারে লক্ষ করে! বিনয়ের পক্ষে প্যাথলজিক্যাল লায়ার হওয়া সম্ভব নয় বলে পাগল হয়েছিলেন। বলা ভালো, ফিরে এসো চাকায় পাগলামির বীজ আগেভাগে বপন করেছেন কবি। কলম ফেটে বেরিয়ে এসেছিল এরকম স্তবকগুচ্ছ...
-
নতুন শ্রমবিন্যাস কাজেই সামনে অনিবার্য বলে মত ঠুকছেন তাঁরা। ম্যানাসের মধ্য দিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজেকে হালনাগাদ করতে সক্ষম প্রযুক্তি, অর্থাৎ সেল্ফ অটোমেশনের নয়া দিগন্তে পা রাখবে বিশ্ব। মানব প্রজাতির জন্য যেটি প্রতিদ্বন্দ্বীতায় পূর্ণ এক বিশ্বের ছবি তুলে ধরছে। যন্ত্রে সচেতন মন সৃষ্টির যে-নিদান মার্ভিন মিনস্কি তাঁর The Society of Mind বইয়ে দিয়েছিলেন, আগামী বিশ্ব কি তাহলে সেদিকে পা বাড়াচ্ছে? প্রশ্নটি উঠতে শুরু করেছে ইতোমধ্যে।
-
নিজের লেখা কবিতায় এক বন্ধুর কথা স্মরণ করছেন কবি। তার নাম ছিল শত্রুজিৎ। কার এখন ঠেকা পড়েছে তাকে শত্রুজিৎ নামে ডাকার! শত্রুজিৎ না ডেকে সবাই তাকে সংক্ষেপে শত্রু নামে ডাকা শুরু করেছিল। কাউকে বোঝানোর উপায় থাকল না,—শত্রুকে জয় করার বাসনায় বাপমা তার নাম শত্রুজিৎ রেখেছিল। আদিনাম বেচারা নিজেও ভুলে গেল বেমালুম। জীবন হচ্ছে এরকম তামাশার নাম। তাকে জয় করতে নেমে উলটো নিজেই শত্রু বনে যেতে হয়! সহজসরল প্রবচনঘন আবেশ মিশিয়ে জীবন নামের তামাশাকে নিরন্তর লিখে গেছেন তারাপদ রায়। সহজ কথা যায় না লেখা সহজে;—রবি ঠাকুরের কথাকে তিনি মিথ্যা প্রমাণ করেছেন। গভীর কথাকে সহজ করে লিখেছেন আজীবন।