নেটলাইনে খুন্তি নাড়ানাড়ির পর আতকা খেয়াল হইল, কাম সারছে, ইংরেজিতে ফ্যাসিস্ট শব্দখানার পয়লা অক্ষর এফ (F) দিয়া শুরু। ইংরেজি ভাষায় খারাপ শব্দ ফাক/ ফাকারও এফ (F) দিয়া শুরুয়াত। তার মানে ফ্যাসিস্ট হইতে গেলে আপনাকে মারাত্মক পর্যায়ের ফাকার হইতে হবে। ফ্যাসিস্ট হইতেছেন এমন একখানা অনুপম চরিত্র যার সবটাই অতিমানবীয়। তার গুণ অতিমানবীয়, দোষগুলাও অতিমানবীয়। এমন একজন ফাকার, যে নিজ-ভাবাদর্শের আদলে একটা সিস্টেম জন্ম দিতে থাকে, এবং একসময় সিস্টেমটা তার হয়ে একটা জাতি, এমনকি বিশ্বজাতিকে ফাক করার শক্তি অর্জন করে বসে। বাপরে! ভাবতেই মাথা ঘোরায়!
-
-
গত পনেরো বছর সাহিত্য মারানোর নামে যত কাগজ খর্চা হইছে তার পুরাটাই ছিল অপচয়। ফি বচ্ছর একুশের বারোয়ারি বইমেলায় উৎপাদিত টন-টন কিতাবের সিংহভাগকে গার্বেজ হিসেবে ভাগাড়ে নিক্ষেপ করা যাইতে পারে।... এখন তাহলে থাকতেছে কী? থাকতেছে অতিকায় দেখতে এক উত্তেজনা। উত্তেজনার আবেশে ফ্যাসিবাদ বা ফ্যাসিস্ট আদতে কী জিনিস… ইত্যাদি গভীরচোখে বীক্ষণের পরিবর্তে বেহুদা লম্পজম্প সার হইতেছে কেবল। থাকতেছে গেলো পনেরো বছরে নেতিয়ে যাওয়া শিশ্নকে খাড়া করার কসরত। ... হাসিনা আমলে যেমন তাদের ভূমিকা শিশ্নপরায়ণ ছিল, ইউনূস আমলেও তাই। যারপরনাই ওই ড. ইউনূসকে নিয়া রোদ্দুর রায়ের খিস্তিভরা সার্কাজমে উগড়ে দেওয়া সংক্ষোভটাই প্রকট হইতে থাকে। যেইটা প্রকারান্তরে আমাদের কবিলেখকদের গালে চপেটাঘাতই বটে।
-
ওরিয়ানা ফাল্লাচির কাছে মুজিবকে মনে হইছিল ফ্যাসিস্ট। হওয়া স্বাভাবিক। উনার মানসগঠন ও সাক্ষাৎকার নেওয়ার ধরন কদাপি বিতর্কমুক্ত ছিল না। মুজিবের ব্যাপারে উনি যেসব তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন তখন, যাদের সঙ্গে উনার সংযোগ ও আলাপ, এবং উনার উগ্র নারীবাদ ও ফ্যাসিবাদ বিষয়ে বদ্ধমূল ধারণা... এসব বিবেচনায় নিলে মুজিব সম্পর্কে উনার পর্যবেক্ষণ তীক্ষ্ম হলেও এর কতটা সত্য আর কতটা সেকালের ক্লিবেইট এইটা নিয়া সন্দেহের অবকাশ থেকেই যাইতেছে। মুজিব ক্যান উনার সামনে আমিই বাংলাদেশ বইলা জাঁক করছিলেন সেইটা ফাল্লাচির বোঝার কথা নয়।
-
মানুষের চেয়ে ভয়ংকর প্রাণী পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। নিজেকে মারতে গিয়ে অন্যকে অবলীলায় সাবাড় করে। এখন এই জায়গা থেকে যদি একাত্তরকে বিচার করি তাহলে এর ভয়াবহতা আমরা বুঝতে পারব। প্রথম কথা, সাত কোটি মানুষ টানা নয় মাস অনিশ্চিত আতংকে রাতদিন পার করেছেন। আকাশ থেকে যুদ্ধবিমান বোমা ফেলছে, মাটিতে দফায়-দফায় বন্দুকবাজি চলছে, প্রাণভয়ে লুকাতে গিয়ে অনেকে মারা পড়েছে তাৎক্ষণিক। নির্যাতন কক্ষে বন্দি করে মেরেছে শত-শত। ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রেল-সেতু-সড়কের কিছু অক্ষত থাকেনি। সোজা কথায় সার্বক্ষণিক যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যে প্রাণের মূল্য থাকে না। প্রাণ তখন স্রেফ গাণিতিক সংখ্যায় পরিণত হয়।
-
জামায়াতে ইসলামী যে-ধারায় রাজনীতি করে সেটি কখনো স্বস্তিকির ছিল না। আজকে বা আগামীতেও এই রাজনীতিকে স্বস্তিকর ভাবা সম্ভব নয়। ধর্মীয় উগ্রবাদের চাষাবাদে বহাল থেকে ক্ষমতাচর্চার রাজনীতি শুভ হতে পারে না। জামায়াত গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু তাদের রাজনৈতিক কনটেক্সেট বিবেচনায় সেটি বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে না। এমন এক শাসন কায়েম করা তাদের মৌল উদ্দেশ্য যেটি যুগানুকূল নয়। ইরানের মতো বিপ্লবী রাষ্ট্র গঠন ও অনুরূপ কোনো শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাই তাদের লক্ষ্য। এখন ইরান কি ইসলামি রাষ্ট্র হিসেবে ভালো অবস্থায় আছে? বিশ্বে এই মুহূর্তে খোমেনিছকে শাসিত রাষ্ট্রের যুগান্তকারী কেনো অবদান কি আমরা দৃশ্যমান দেখছি?