
. . .

এমন বন্ধুত্ব করতে পারে কজন!
. . .

শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে যায়!
অনুকরণীয়, শিক্ষণীয়।
. . .

এই দুই বন্ধুর প্রেক্ষাপট আমেরিকায় বা ওরকম লিবারেল মনোভাবাপন্ন কোনো দেশে হলে এতদিনে তারা বিয়ে করেই একসাথে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে থাকত…
. . .

এই ধরনের বন্ধুত্ব আসলেও বিরল ঘটনা! দুজনেই স্যাক্রিফাইস করেছেন একে অন্যের জন্য। এমনকি দূর বা নিকট অতীতে, যখন জীবন এতটা যান্ত্রিক ছিল না, তখনো এরকম বন্ধুত্বের নজির মনে হয় না বেশি পাওয়া যাবে। তবে, হিন্দু-মুসলমানে বন্ধুত্ব আমাদের বেড়ে ওঠার সময়ও কমন ব্যাপার ছিল। আমি-আপনি কে কোন্ ধর্মের, সেটি কি দেখেছি তখন? ওটা কোনো হিসাবে আসত না, আর আসত না বলেই দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রতিবেশী ও পারিবারিক সংযোগে আন্তরিকতা ছিল সুনিবিড়। ধর্ম দেখে বন্ধুত্ব বাছাইয়ের আজব কাণ্ড সাম্প্রতিক। বিগত পনেরো-কুড়ি বছর ধরে এই খবিসি সমাজে ডেভোলাপ করেছে। তার মানে আমরা ওই সাতচল্লিশের আগেকার সময়ে ফেরত গিয়েছি।
প্রসঙ্গত, সাদত হাসান মান্টো ও অশোক কুমারের বন্ধুত্ব ও সেখানে ভাঙনের ঘটনা মনে পড়ে যাচ্ছে। স্মৃতি যদি প্রতারণা না করে তাহলে মান্টোকে নিয়ে নন্দিতা দাস নেটফ্লিক্সে যে-ছবি রিলিজ করলেন কয়েক বছর আগে, সেখানে ঘটনাটি পাবেন। হিন্দি ছবির জগতে চিত্রনাট্যকার হিসেবে মান্টো ও অ্যান্টি হিরোর রোলে অশোক কুমার অপরিহার্য ছিলেন। দুজনের মধ্যে দোস্তি, সে তাঁরা বলিউডে ঢোকার আগে থেকে জমজমাট ছিল। অশোক কুমার হিন্দি ছবিতে নাম কামালেন। হয়ে উঠলেন বড়ো তারকা। ওদিকে মান্টো জীবিকার তাগিদে সিনেমায় স্ক্রিপ্ট লিখছেন তখন। দুজনের বন্ধুত্ব আগের মতো চলছিল বেশ। ছিলেন উর্দু সাহিত্যের আরেক দিকপাল ইসমত চুগতাই। তিনিও স্ক্রিপ্ট লিখছেন তখন। এর মধ্যে দেশ ভাগ-বাটোয়ারার হাওয়া প্রবল হলো।
মান্টো নিজের চোখে দেখছেন,—পরিচিতজনরা অনিবার্য হতে থাকা পাকিস্তানে যাওয়ার তোড়জোর করছে। তাঁর ইচ্ছা নেই যাওয়ার। কেনই-বা যাবেন! এখানে তাঁর বাপ-দাদা চৌদ্দগোষ্ঠীর স্মৃতি সঞ্চিত রয়েছে। পরিস্থিতি তখন ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। এমন সময় কী একটা বিষয় নিয়ে অশোক কুমারের সঙ্গে তাঁর ঝগড়া হলো। রাগের মাথায় অশোক তাঁকে পাকিস্তানে চলে যেতে বলেন। সিনেমায় নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকী এই জায়গায় দারুণ এক্সপ্রেশন দিয়েছিলেন মনে পড়ে। অশোক পরে তাৎক্ষণিক দুঃখ প্রকাশ করলেও, মান্টোর মনোবল বালির বাঁধের মতো ধসে পড়েছিল সেদিন! পরবর্তী কাহিনি সকলের জানা। মান্টো লাহোরে পাড়ি দিলেন সপরিবার। পেছনে পড়ে রইল ইসমত চুগতাইয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও খুনসুটি। পড়ে রইল হিন্দি ছবিপাড়ায় কাটানো দিনগুলো।

লাহোরে মান্টোকে সাদরে বরণ করে নেওয়া লোকের অভাব হয়নি। দেশভাগের দগদগে ক্ষত নিয়ে ততদিনে কালজয়ী সব গল্প তিনি লিখে ফেলেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে চওড়া হয়েছে সাহিত্যে অশ্লীলতা আমদানির অভিযোগ। কোর্টে কেস চলছিল, আর হতাশ মান্টো ক্রমশ ডুবে গেলেন মদের নেশায়। নিজেকে ধ্বংস ও ফতুর করলেন আধুনিক উর্দু সাহিত্যের স্তম্ভ।
দেশভাগের পর অশোক কুমার এলেন লাহোরে। মান্টো দেখা করেছিলেন তাঁর সঙ্গে। অশোক তাঁকে মুম্বাই ফেরত আসার জন্য অনুরোধ ও জোরাজুরি করতে কিছু বাকি রাখেননি। মান্টো নীরবে হেসে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বন্ধুকে। কারণ, ততদিনে তাঁর লেখা গল্পের টোবাটেক সিংয়ের মতো নিজেকে স্টেটলেস ভাবছেন তিনি।!
বন্ধুত্ব বলুন, আর সামাজিক বন্ধন,—বৈষয়িক নানা চাপ থাকেই; তার মধ্যে যদি আবার ধর্ম ও রাজনীতির মতো মানুষকে ভাগ করতে ওস্তাদ দুইখান জিনিস গিয়ে ঢোকে,—একলা সব শেষ করে দিতে পারে তারা! এনারা দুজন-যে এর মধ্যে বন্ধুত্ব টিকিয়ে রেখেছেন, এটি অবাক করার মতো ঘটনা বটে!
. . .

একদম। আমাদের এখানে তা সম্ভব নয়। মানুষ-যে শেষপর্যন্ত এলাউ করেছে দুজনের বন্ধুত্ব,—সেটা বিরাট ঘটনা! তবে, বিয়ে করলে মনে হয় সম্পর্ক এতদিন টিকত না। গতকাল কালোসির (TR_Kalausi) একটি ফানি রিল চোখে পড়ল। সেখানে বান্ধবী তাকে জিজ্ঞেস করছে,—বিয়ের জন্য কোন বয়সটা পারফেক্ট। মজারু কালোসির ঝটপট উত্তর : বায়োলজিক্যাল এজ যদি হিসাবে নাও, তাহলে ১৪ বছর। আইনে গেলে ১৮। সাংস্কৃতিক রীতি মানলে ২৪। অর্থনৈতিকভাবে খাড়া হওয়ার কথা ভাবলে ত্রিশের পর। আর, যুক্তি দিয়ে ভাবো, তাহলে ছাদনাতলায় না যাওয়াই ভালো।😄এরা ওদিকে যাওয়ার কথা ভাবেননি বলে হয়তো সম্পর্ক টিকে আছে। একধরনের স্পিরিচুয়াল ক্যাথারসিস ঘটেছে দুজনের। যা মন্দ হয়নি বলে আমরা ধরে নিতে পারি।
. . .

আহা আহা আহা… কত সত্যি, কতটাই যে সত্যি… হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছি আমিও…
চলেন অঙ্ক করি একটু… এখন এই দুই ছেলেবন্ধুর জায়গায় যদি এমন হতো যে, একজন ছেলে আর একজন মেয়ে; যারা কিনা শুধু মাত্র বন্ধুত্বের খাতিরে নিজেদের জীবন ভুলে গিয়ে শুধু একসাথে থাকার উদ্দেশ্যে চিরকুমার ও চিরকুমারী হয়ে থাকল… তাহলে সে-প্রেক্ষিতে সামাজিক ব্যবস্থার ভঙ্গিতে কে কাকে কতটা কোন দৃষ্টি দিয়ে দেখত…?
. . .

কালোসি (নাকি টম্পি এনখি হবে?) মারাত্মক চিজ! আরেকখানা রিলে দেখি, এক মেয়ে তাকে জিজ্ঞেস করছে,—তার কোনো গার্লফ্রেন্ড আছে কি-না! উত্তর : হ্যাঁ, আছে। সে অন্য Nation থেকে এসেছে। কোন Nation ? উত্তর : Imagination!😁
. . .

এরা পুরুষ বলে আমাদের এখানে তাও পার পেয়ে গেছে। বিপরীত লিঙ্গ হলে মনে হয় না সম্ভব হতো। ঢাকার মতো বড়ো শহরেও টাফ। ধরেন, গুলশান-বনানীর-বারিধারার মতো এলাকায়ও যদি থাকে, নির্বিঘ্নে থাকাটা মনে হয় না সম্ভব সেখানে। বিয়ে এখনো এমন এক টাবু এখানে, সেটি ধর্মীয় ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক উভয় অর্থে,—সমাজ এলাউ করবে না তাহসিন ভাই।
আপনি বাঁচলেন না মরলেন, তার খবর ভুলেও নেবে না একদিন, কিন্তু তাদের নাকের ডগায় জলজ্যান্ত দুটি নারী-পুরুষ একসঙ্গে থাকছে, তাও আবার বন্ধুত্বের দোহাই দিয়ে,—কিছুতে মানবে না। স্বামী-স্ত্রীর মিথ্যে পরিচয় একসময় দেওয়া লাগবে। দেশের অন্যত্র প্রশ্নই উঠছে না। মেয়েরা দেখবেন আগে পিছে লাগবে। এমনকি দুটি মেয়ে যদি থাকতে চায় এরকম,—জীবন নরক করে দেবে। এখানে বিয়ে (এবং ছেলে ও মেয়ের মধ্যে অবশ্যই) সম্পর্কের লাইসেন্স। আর, ইউনূসের জামানায় পাবলিক অবধি যাওয়া লাগবে না, মোল্লারা মব ক্রিয়েট করে খতম করবে মুহূর্তেই। যদিও তারা আবার বিয়ে নামক লাইসেন্স ব্যবহার করে চারটা নয়, এখন তো হাদিস ঘেঁটে দশ-বারো টাইপের বিয়ের হিসাব বের করে ফেলেছে। নামও আছে ওসবের কী-কী যেন!
নামকরা এক হুজুর সম্প্রতি এই কাজ করতে গিয়ে কট খেয়েছে। তার স্ত্রী আর জে নীরবের শোয়ে এসে দিয়েছে সব ফাঁস করে। ব্যাটা একটি মেয়েকে বিয়ে করে প্রথমে। কিছুদিন সংসার ও যৌনসম্ভোগের পর তালাক দিয়ে অন্য লোকের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে দেয়। এভাবে মেয়েটি এক্সচেঞ্জ হতে থাকে, বাজারি বেশ্যার মতো। অসহায় মেয়ের হিল্লে করছে, এই হলো তার যুক্তি!
তেরো বছরের এক মেয়েকে সে বিয়ে করেছে কিছুদিন আগে। তার দৃষ্টিতে এটা জায়েজ,—কারণ নবি আয়েশাকে নয় বছর বয়সে বিয়ে করেছিলেন। সোজা কথায়, বিয়ের নগদানগদি লাইসেন্স দিয়ে যাবতীয় আকাম এখানে করতে পারবেন, কারো কিছু যাবে আসবে না। কিন্তু, আপনি যেটি মিন করছেন, তা করতে গেলে দেখবেন, সবার ইমানি দণ্ড খাড়া হয়ে গেছে। হিপোক্রেসি আমাদের শিরায়-শিরায়! যে-কারণে বড়ো কিছু করার এলেম হয় না।
. . .

ইমানি দণ্ড খাড়া হয়ে যাওয়া! ভাই, আসলে আমাদের আরো-আরো অনেক সময় লাগবে একটা ব্যালান্সড ইমানি দণ্ড প্রতিষ্ঠা করার জন্য…
. . .



