সাহিত্যবাসর

যুগল কবিতা

যুগল কবিতা
আহমেদ বেলাল

 টানাপোড়েন 

ভাঙা সম্পর্কগুলি জানে - কেন আয়নাতে নদীদের এতো বেশি মুমূর্ষু লাগে। 

গভীর রাতে মেঘনীল আকাশের নীচে বাঁশিওয়ালা খুব  চুপচাপ, 
যেন সুর ভাসালে বাতাসের ঘুম ভেঙে যাবে। অথচ - 
মিলনপিপাসু বুনো মনের অসীম দুটি ডানা 
অর্থহীন পড়ে আছে অর্ধচরাচরে।

দৈববাণীর মতো এই জল - তাকেও স্পর্শ করতে গেলে 
দ্বিধায় পড়ে যাই। 
হাত বাড়ালেই শঙ্খস্নান, অশ্রুলগ্ন গীতিপথ - 
তবু কেন বারবার বাকরুদ্ধ  হই! 

দূরের উজ্জ্বলতার দিকে চেয়ে চেয়ে সকল স্তব্ধতা  পূর্ণ হয়ে ওঠে। 

কাছের রক্তাক্ত পথ আবার তা অপূর্ণ করে দেয় ... 

. . .


বৃষ্টি

আমি এবাদত করি বৃষ্টির। অনেকে যেমন করে মন্দির, মসজিদের। বছরে ছয়মাস কাজ করি আর
অপেক্ষা করি বৃষ্টির। মন ভালো হলে কাগজ দিয়ে ছোট ছোট ঘর বানাই যেন বৃষ্টিজলে তা বহুদূর যেতে
পারে আমার কল্পনাকে সঙ্গী করে। গুনগুন করে রাতবিরেতে তসবি পড়ার মতো গান গাই বৃষ্টির জন্য।

নরকের আগুন শান্ত হয়ে যায় বৃষ্টির ছোঁয়ায়।

মানুষের মতোই বৃষ্টির জীবন। এই কিছুদিন মৃত্তিকায় তো পর মুহূর্তেই ঐ আকাশের দূর সীমানায়।
বৃষ্টির আলিঙ্গনে ডুবে গেলে পরম ঈশ্বরকেও বলি
একটু অপেক্ষায় থাকুন পাশের বারান্দায়।

আমি এবাদত করি বৃষ্টির
আমাকে কেউ কোনোদিন কান্নারত দেখেনি
কারণ, আমি অপেক্ষা করতে জানি বৃষ্টির জন্য

ছয়মাস কাজ করি আর আনমনা থাকি। যেন অর্ধমৃত। আহত আর হতবাক পিপীলিকার মতো।
ছয়মাস কিছুই, কিছুই করিনা শুধু বৃষ্টিভ্রমণ। চিরকালের অনদি অতৃপ্তি নিয়ে চেয়ে থাকি নিষ্পলক শুধু
বৃষ্টির দিকেই।

স্বর্গ অথবা নরকের এবাদত নাই আমার অন্তরে
লৌকিক অলৌকিক সব দিনযাপন
এই বৃষ্টিকে ঘিরে।
. . .

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 5 / 5. Vote count: 1

No votes so far! Be the first to rate this post.

Contributor@thirdlanespace.com কর্তৃক স্বত্ব সংরক্ষিত

One comment on “যুগল কবিতা

  1. “মানুষের মতোই বৃষ্টির জীবন। এই কিছুদিন মৃত্তিকায় তো পর মুহূর্তেই ঐ আকাশের দূর সীমানায়।
    বৃষ্টির আলিঙ্গনে ডুবে গেলে পরম ঈশ্বরকেও বলি
    একটু অপেক্ষায় থাকুন পাশের বারান্দায়।”
    দুইটো কবিতাই ভালো লাগল বেলাল ভাই। তবে বৃষ্টি নিয়ে এমন ভাবনা… আমিও বলব “অপেক্ষায় থাকুন পাশের বারান্দায়”। সুন্দর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *