• আসুন ভাবি

    চতুর্থ রাজনীতি

    পুতিনশাসিত রাশিয়ার কথাই ধরি। পরাশক্তি হিসেবে সে আসলে কী চায়, কোনখানে যাইতে চায়, কীভাবে দেশবাসীকে একটা কাঠামোয় রাখতে চায় ইত্যাদি সকলের কাছে বোধগম্য করে তুলতে আমরা পুতিনকে সক্রিয় দেখতেছি। নেপথ্যে যিনি বা যারা আছেন তারা পুতিনের পরামর্শক হিসেবে ভূমিকা রাখতেছেন। ভলাদিমির পুতিনের সমুদয় কাণ্ডকারখানার নেপথ্যে সচল দার্শনিক ভিতের প্রণেতা হিসেবে আমরা যেমন আলেকজান্ডার ডুগিনকে পাইতেছি সেখানে। ডুগিনের ব্যাপারে যদি তল্লাসি করি তাহলে বুঝতে পারব কেন বা কী কারণে আসিফ মাহতাব দার্শনিক ভিত গঠনের আলাপ সামনে নিয়া আসছেন। সময়ের সঙ্গে যা নতুন আঙ্গিকে মোড় নিতে পারে, কিন্তু জাতিরাষ্ট্র গঠনে এর প্রয়োজন আছে বৈকি!

  • আসুন ভাবি

    অনুপল মানবজীবন

    আমাদের এই জীবনটা তখন হবে গাছের জীবন। অর্থ পয়দার ফুরসত গাছের নাই। সে কখনো জানতে চায় না কী কারণে ধরায় তারে আসতে হইতেছে বা কে পাঠাইছে ইত্যাদি। গাছ তার ফুল-ফল-শাখা-প্রশাখা আন্দোলিত করে একটাই উত্তর করে সদা,- ওসব জেনে কি লাভ! আমি আছি। আমারে তোরা পারলে কাজে লাগা। কদিন পরে মাটিতে মিশে যাবো। এই তো জীবন! কেন এখানে আসছি, কে আমারে পাঠাইছে এখানে... কোন দুঃখে এসব নিয়া ভাবতে যাবো আমি! এই-যে মিনিং ছাড়া মিনিংফুল বেঁচে থাকা, পরমাণু যুদ্ধ আমাদেরকে সেই স্বাদ উপহার দিলেও দিতে পারে।

  • আসুন ভাবি

    আমাদের ক্লিকবেট কালচার

    গোড়ার কোয়েশ্চনটা আবার উঠাইতে হয়। কেন শুনতেছি তাহলে? আনসার সোজা,- আমরা গোলাম মাওলা রনিকে শুনতে বসি নাই মোটেও;- শেখ হাসিনার ফেরত আসার সম্ভাবনা নিয়া উনি চটকদার ব্যানার দিছে দেখে মোবাইল স্ক্রিনে ধা করে আঙুল চেপে বসছি। উনি যা বলতেছে তার কিছুই আসলে আমাদের কানে ঢুকতেছে না। ব্যানারটা এখানে রিয়েলিটিক ডিফাইন করতেছে;- গোলাম মাওলা রনি জাস্ট আনরিয়েল। বদ্রিলারের সারার্থ ধার করে বলা যাইতে পারে,- ব্যানার আদতে গণিতের ননরিয়েল বা কাল্পনিক সংখ্যা, কিন্তু সেইটা রিয়েল নাম্বারকে স্থানান্তরিত ও বিচ্যুত করে দিতেছে সেখানে। ক্লিকবেট এ-কারণে দুনিয়াজুড়ে বিলিয়ন ডলার ইন্ডাস্ট্রি।

  • আসুন ভাবি

    বইয়ের জীবন বালের জীবন

    কিতাবের কুতুব মিনার দিয়া জীবনকে আমরা বিলক্ষণ সাজাইছি বটে! এমন একখান জীবন যা কিনা ইচ্ছা করলে এক ফুৎকারে ধ্বংসও করতে পারি। এর থেকে প্রমাণ হয় যিনি আমাদের সৃষ্টি করলেন উনার মনে আমাদের প্রতি দয়ামায়া নাই। আমরা তাঁর ভালোবাসার পাত্র হইতে পারি নাই। আমরা হইতেছি অভিশপ্ত জানোয়ার। খারাপ নজির রাখতে গ্রহে আসছি। আমাদেরকে কেন এভাবে পাঠানো হইছে সে-কেবল উনি জানে আর জানে উনার প্রিয় ইবলিশ।... আমরা নিজেকে সৃষ্টির সেরা জীব বইলা পাম দেই। আমরাই আবার নিজেকে ঝাড়ি। সার্ফ এক্সেল দিয়া কাচতে-কাচতে মনের ঝাল মিটাই। আশাবাদী ও নিরাশাবাদীর মাঝখানে বলদাবাদী ছাড়া দ্বিতীয় কোনো মানুষ আকাশ-পাতাল তালাশ করেও বের করতে পারলাম না!

  • আসুন ভাবি

    গোল্ডফিশ মেমোরি

    মানুষ জন্মদোষে গোল্ডফিশ। তার সভ্যতাযাত্রা মানে হইতেছে মহা বিস্মরণের পানে যাত্রা। বিস্মরণে সহজাত হওয়ার কারণে সে নিষ্পাপ। শত হাজার আউশভিৎস, অগণিত গণকবরকে নিমেষে বিস্মৃত হয়ে কবিতা লিখতে পারে। সকল হত্যা ও নারকীয়তা তার কাছে মমিকরা তুতেনখামেন। তুতুনেখামেনকে সে তাই আদর জানাইতে চুম্বন করে। মৃত ফারাওর মুখচুম্বনের ক্ষণে তার দেহে দ্যুতি দেখা যায়। বড়ো সুন্দর দ্যুতি! যেমন সুন্দর তার এই অনায়াস রোমন্থন,- ওল্ড ইজ অলওয়েজ গুড। এখন যেমন আছি তারচাইতে তখন ভালো ছিলাম;- এই বিস্মরণ ছাড়া তার পক্ষে মানুষ থাকা সুকঠিন।