গণজাগরণ মঞ্চ হইতে ঘোষিত আন্দোলন জাহানারা ইমামকে পুনরায় ফেরত আনতে পারলেও শেখ মুজিবকে ফেরত আনতে পারে নাই। তিন মাসের আন্দোলন মুজিবকে ফ্রেমের বাইরে রেখে করতে হইছে উনাদের! মুজিবকে প্রতিষ্ঠিত ও সর্বজনীন করতে গণজাগরণ মঞ্চ স্বয়ং ব্যর্থ হয়। সেইসঙ্গে জামায়াত নিষিদ্ধ করার সুযোগ মিস করেন হাসিনা। উনি কেন এত বাপের নাম নিতেন, অতিরিক্ত করতেন, এসবের পেছনে কারণ নেই বলা যাবে না। যদিও দেশ চালাইতে গেলে অনেককিছু নতুন করে বিবেচনা করতে হয়। হাসিনার ওই মেজাজ ছিল না।
-
-
ফরহাদ মজহার যেমন ইসলাম সম্পর্কিত ভাবনাকে পাঠ করতে গিয়ে মৌলিক করে তোলেন, তিনি তখন বিবেচনা করেন না চিন্তাপদ্ধতি কখনো দানব হয়ে উঠতে পারে। আমরা দেখেছি সেই দানবকে রুখতে গিয়ে তাকে আবার মাঠে নামতে হয়েছে। সলিমুল্লাহ খানের অসংখ্য বক্তব্য আছে কওমি মাদ্রাসা কেন্দ্রিক, তিনি সেটি গ্লোরিফাই করেন, প্রতিষ্ঠা দিতে গিয়ে তর্ক করেন। এই যে বুদ্ধিজীবীতার বিশৃঙ্গলা, ফলত এইসব প্রভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি দিনে দিনে মাদ্রাসায় পরিণত হয়। নানাবিধ ন্যারোটিভ জন্ম নেয়। কোনটি প্রগতি আর কোনটা পশ্চাদপদ তা আর ঠাহর করা যায় না।
-
গল্পটি ভেবেচিন্তে লেখা হইছে। যে-বাচ্চাটি তার সৈনিক মায়ের সঙ্গে ভিডিওকলে আলাপ করে তার কাছে আম্রিকার পজিটিভ ইমেজ এখানে মায়ের মাধ্যমে ইনোসেন্ট বয়ানে প্রেজেন্ট করা হইতেছে। কী… আম্রিকার কাজ হইতেছে যেখানে অশান্তি ও হানাহানি সেখানে শান্তির দূত হয়ে গমন করা। এইটা গেল ন্যারেটিভের একটা দিক। অন্যদিকে যেইটা গল্পে হাইড করা হইতেছে, সেইটা হলো শান্তি স্থাপনের মিশনে যারা যাইতেছে, বাচ্চটার মায়ের কথাই ধরি, সে কিন্তু মারা যাইতেও পারে। এখন যদি মারা যায়, আম্রিকার মতো দেশ তারে বীরের মর্যাদা দিবে ঠিক, কিন্তু সে তো জানে কী কারণে তারে যাইতে হচ্ছে সেখানে।
-
জামায়াতে ইসলামী যে-ধারায় রাজনীতি করে সেটি কখনো স্বস্তিকির ছিল না। আজকে বা আগামীতেও এই রাজনীতিকে স্বস্তিকর ভাবা সম্ভব নয়। ধর্মীয় উগ্রবাদের চাষাবাদে বহাল থেকে ক্ষমতাচর্চার রাজনীতি শুভ হতে পারে না। জামায়াত গণতন্ত্রের কথা বলে কিন্তু তাদের রাজনৈতিক কনটেক্সেট বিবেচনায় সেটি বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে না। এমন এক শাসন কায়েম করা তাদের মৌল উদ্দেশ্য যেটি যুগানুকূল নয়। ইরানের মতো বিপ্লবী রাষ্ট্র গঠন ও অনুরূপ কোনো শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাই তাদের লক্ষ্য। এখন ইরান কি ইসলামি রাষ্ট্র হিসেবে ভালো অবস্থায় আছে? বিশ্বে এই মুহূর্তে খোমেনিছকে শাসিত রাষ্ট্রের যুগান্তকারী কেনো অবদান কি আমরা দৃশ্যমান দেখছি?
-
নিখাদ মিথ্যা বলতে কি কিছু আছে? মিথ্যা বলার পর বমি বমি, মানসিক যন্ত্রণা, অসম্ভব অস্বস্তি কেন হয়? মিথ্যার অস্ত্রে অনেক মানুষ চোখের পলকে নাই হয়ে গেলে কেন আফসোস হয় অথবা তখনও কেউ কেউ নির্বিকার থাকি? মিথ্যা উদ্ভাবনের পরই তো বলা হলো আমাদেরকে সত্য বলতে হবে। সত্য বই…. যা বলা যাবে না তা আবিষ্কারই বা কেন? তবে কি আমরাই সেই ঈশ্বর- যে সত্যি মিথ্যাকে নিয়ে খেলতে ভালোবাসে? অনেকে বলে স্বর্গ হলো সত্যের আর মিথ্যা হলো নরকের প্রতীক। একবার স্বর্গে, আরেক বার নরকে যাওয়া আসার মানসিক আনন্দের অথবা যন্ত্রণার এই খেলার উদ্ভাবক কে বা কারা?