দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের মতো মার্কসনিষ্ঠ বস্তুবাদীর হাতে মহিয়ান হওয়ার আগে পর্যন্ত ভারতীয় দর্শনের বিশাল সৌধে চার্বাকপন্থীরা ব্রাত্য ও অপাঙক্তেয় বিবেচিত হয়েছেন সবসময়। দার্শনিক মতবাদটি অফুরন্ত সম্ভাবনা ধারণ করলেও নানামুখী আগ্রাসী চাপে মাথা তুলতে পারেনি। বৈদিক ও অন্যান্য মতবাদ তাকে একপ্রকার জবরদস্তির মাধ্যমে নিস্তেজ হতে বাধ্য করে। আধুনিক যুগপর্বে মার্কসসহ পশ্চিমবিশ্ব থেকে আগত দার্শনিক প্রস্তাবনার প্রভাবে চার্বাক পন্থায় পল্লবিত সারবস্তু পাঠ ও পুনর্বিবেচনার আবহটি তৈরি হয়। দক্ষিণারঞ্জন শাস্ত্রী, দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় এক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেন। প্রাচীন ভারতে বস্তুবাদী চিন্তার অনুসন্ধানে গমন করায় চার্বাক দর্শনকে পুনরায় আলোচনার পাদপ্রদীপে নিয়ে আসেন দেবীপ্রসাদ।
চার্বাক দর্শন বলতে মোটাদাগে আমরা সেই চিন্তাকে বুঝি যেটি জগতকে বস্তুতান্ত্রিক দৃষ্টিকোণ দিয়ে বিচার করছে। বস্তু হচ্ছে একমাত্র সত্তা। প্রাণ, মন, আত্মা ও চৈতন্য স্বয়ং জড় থেকে উদ্ভুত। চার্বাক যে-কারণে বস্তুমুখীন দর্শন। এর পাশাপাশি তাকে লোকায়ত দর্শন হিসেবেও গণ্য করা হয়। যে-জগৎকে আমরা চোখের সামনে সক্রিয় দেখতে পাচ্ছি সেটি অস্তিত্বশীল ও বাস্তব। সুতরাং ইহলোকের বাইরে পরলোক নামে কিছুর অস্তিত্ব নেই। মাধবাচার্য সর্বদর্শনসংগ্রহ গ্রন্থে বলছেন : চার্বাকের অপর নাম হচ্ছে লোকায়ত। সাধারণ লোকজন ইন্দ্রিয়সুখ লাভকে পুরুষার্থ মনে করে এবং পারলৌকিক বিষয়াদিকে কেন্দ্র করে যত ধারণা ও মতবাদ গড়ে উঠেছে, লোকায়তপন্থী চার্বাকগণ তাকে যুক্তিসংগত বিবেচনা করেননি।
চার্বাকপন্থায় সাধারণ মানুষের চিন্তার প্রতিফলন অনেকে স্বীকার করেছেন। প্রখ্যাত ন্যায়শাস্ত্রবিদ জয়ন্তভট্ট (খ্রিস্টীয় নবম শতকে) তাঁর ন্যায়মঞ্জরী গ্রন্থে চরম বস্তুবাদী মতবাদ বোঝাতে একাধিকবার চার্বাক শব্দটি ব্যবহার করেছেন। কৃষ্ণ মিশ্র তাঁর প্রবোধচন্দ্রদয় নাটিকায় চার্বাকদের মতবাদ উল্লেখ করেন :
লোকায়ত একমাত্র শাস্ত্র; প্রত্যক্ষই একমাত্র প্রমাণ; পৃথিবী, জল, বায়ু, তেজ হলো ৪ টি তত্ত্ব; অর্থ ও কাম হলো মানবজীবনের একমাত্র লক্ষ্য বা পুরুষার্থ; ভূতচতুষ্টয় হতে চৈতন্যের উৎপত্তি এবং চৈতন্য বিশিষ্ট দেহ হলো আত্মা; পরলোক বলে কিছু নাই। মৃত্যুতে সবকিছুর পরিসমাপ্তি;—মৃত্যুই মোক্ষ।
ভাববাদের ভিত্তিভূমি ভারতীয় চিন্তায় এটি ছিল মারাত্মক হুমকি স্বরূপ ও বিপর্যয়ের শামিল। সুতরাং এ-ধরনের চিন্তার বিরোধিতা সকল দর্শনশাস্ত্রের মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। চার্বাকপন্থীদের বিরোধিতা করে মূলত অত্র অঞ্চলের মহান ভাবুক-চিন্তক-দার্শনিকগণ নিজ দর্শনের বিস্তার ঘটিয়েছেন। ভারতীয় জ্ঞানতাত্ত্বিক পরিসরে চার্বাকরা সেই হিসেবে অনুঘটকের (catalyst) ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাদের চিন্তন-পদ্ধতির ব্যাপারে যে-কারণে জানাবোঝার ইতিহাসটি সুগঠিত নয়। অনুমান নির্ভর তথ্যের ওপর নির্ভর করে চার্বাক সম্পর্কিত ধারণাগুলো এখানে গড়ে উঠেছে। চার্বাক আসলে কারা? তারা কি কোনো ব্যাক্তিবিশেষ অথবা গোষ্ঠী? তাদের প্রচারিত মতবাদের মূল বক্তব্য কী? এই প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর ইতিহাস থেকে উদ্ধার করা খুবই দুরূহ। চার্বাক মতবাদকে খণ্ডন করতে গিয়ে বিরোধীরা যা বলছেন সেটি সেখানে একমাত্র উৎস, এছাড়া আর কিছু মিলছে না। তাদের ব্যাপারে পরিচ্ছন্ন উপসংহারে পৌঁছানোর সমস্যা তাই যথেষ্ট গুরুতর।
চার্বাক মতবাদের আদিপ্রণেতা হিসেবে বৃহস্পতির নাম শোনা যায়। তত্ত্বোপপ্লবসিংহ কিংবা ষড়দর্শন সমুচ্চয় ইত্যাদি গ্রন্থে চার্বাক দর্শনের সূত্র রচয়িতা রূপে বৃহস্পতির উল্লেখ রয়েছে। বৃহস্পতি এখন কে ছিলেন তার কোনো নিশ্চিত ইতিহাস পাওয়া যায় না। পুরাণশাস্ত্রে বর্ণিত দেবগুরু বৃহস্পতির কথা অনেকে বলেছেন। অসুরকুলকে বিভ্রান্ত ও ভুল পথে পরিচালিত করতে তিনি নাকি চার্বাক মতবাদ সৃষ্টি করেন। অনেকে আবার এই মত মানতে রাজি হননি। বৃহস্পতিকে তারা বেদবিরোধী শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিত হিসেবে ভাবার সপক্ষে বরং মত রেখেছেন।
চার্বাক দর্শনের প্রবক্তাদের ন্যায় এই মতবাদের উৎপত্তিকাল নিয়েও নিরেট তথ্য সুলভ নয়। বিভিন্ন উৎস ও এই বিষয়ে রচিত বইপুস্তকে বিক্ষিপ্তভাবে উদ্ধৃত চার্বাকমত বিষয়ক বিবরণ থেকে তার উৎপত্তির দিনক্ষণ সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানো কঠিন। বৈদিক যুগে চার্বাক নিয়ে বিস্তর আলাপ-আলোচনার কারণে অনেকে এই যুগকে তার সূচনাকাল গণ্য করার পক্ষে মত দিয়ে থাকেন। খৃষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে গৌতম বুদ্ধের আবির্ভাব ঘটার আগে ছান্দোগ্য উপনিষদ ও বৃহদারণ্যক উপনিষদ রচিত হয়েছিল বলে মত প্রচলিত আছে। যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে চার্বাকপন্থার জন্ম এরকম কোনো যুগপর্বে হয়েছিল বলে আমরা ধরে নিতে পারি। দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় তাঁর ভারতে বস্তুবাদ প্রসঙ্গে লিখেছেন :
ঐতিহাসিক দৃষ্টিতে চার্বাক প্রসঙ্গে অবশ্যই অনেক অনিশ্চয়তা আছে। কিন্তু একটা বিষয়ে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। আনুমানিক খ্রিস্টীয় অষ্টম শতক থেকে আমাদের দার্শনিক সাহিত্যে একটি প্রথা প্রায় অবিচল হয়ে দাঁড়ায়। এই প্রথা অনুসারে চার্বাক বলতে আমরা একরকম আপসহীন বা প্রখর বস্তুবাদী দর্শন বা তারই প্রবক্তাদের বুঝতে বাধ্য।
আবারো বলতে হচ্ছে,— চার্বাক দর্শন সম্বন্ধে অধিকাংশ তত্ত্বের উৎস রূপে ভারতীয় দর্শন সংক্রান্ত নানান গ্রন্থ ও সেগুলোর মধ্যে চার্বাকদের যুক্তি খণ্ডন করে প্রণীত ব্যাখ্যাই একমাত্র ভরসা। রামায়ণ–এর অযোধ্যাকাণ্ড-এ বস্তুবাদী চিন্তার নমুনা চোখে পড়ে। বেদ ও ধর্মাচারের বিরোধিতা করে মহর্ষি জাবালি রামকে বলছেন—যজ্ঞ, দান, তপস্যা… বেদে উল্লেখিত এসব ধর্মীয় আচরণের উদ্দেশ্য জনসাধারণকে বশে রাখা। যারা ধর্মাচরণ করে তারা হচ্ছে মূর্খ। ইহলোক ছাড়া পরলোক নেই। যা প্রত্যক্ষ তাকে অনুসরণ করা উচিত।
জাবালির দৃষ্টভঙ্গি এখানে বস্তুবাদীর। রামায়ণ-এ অবশ্য জড়বাদীকে মূর্খ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা নিজেকে জ্ঞানী মনে করে ও মানুষকে ধবংসের দিকে টানতে থাকে। মহাভারত-এ দুর্যোধনের সখা রূপে চার্বাক রাক্ষসের উল্লেখ পাই আমরা। চার্বাককে সেখানে ব্রাহ্মণ বিরোধী ও পাপী নামে অভিহিত করা হয়েছে। ব্রহ্মতেজে তাকে দগ্ধ করার বিবরণও মহাভারতকার দিচ্ছেন। বৌদ্ধ ত্রিপিটক-এ অর্ন্তভূক্ত সূত্রপিটক-এ অজিত কেশকম্বলীর মত অনুসারে মানুষ চারটি বস্তুগত উপাদান দিয়ে গঠিত। মানুষের মৃত্যুতে শরীর মাটিতে, জলীয় উপাদান জলে, তেজের উপাদান তেজে ও বায়বীয় পদার্থ বায়ুতে মিশে যায়। তার ইন্দ্রিয়ও আকাশে বিলীন হয়। দেহ বিনষ্ট হলে পণ্ডিত এবং মূর্খ সকলে ধ্বংস হয়ে থাকেন। ধরায় তাদের অস্তিত্ব থাকে না। অজিত কেশকম্বলীকে অনেকে যে-কারণে চার্বাকমতের প্রথম প্রবর্তক বলেও অনুমান করেন।
চার্বাক দর্শনের উল্লেখ জয়রাশি ভট্টের (খ্রিস্টীয় ৭ম অথবা অষ্টম শতাব্দী) তত্ত্বোপপ্লবসিংহ (অনেকে এটিকে চার্বাক রচনা বলে থাকেন), উদয়নাচার্যের ন্যায়কুসুমাঞ্জলি, ন্যায় দার্শনিক জয়ভট্টের ন্যায়মঞ্জরী, সদানন্দযতির অদ্বৈত-ব্রহ্মসিদ্ধি, বৌদ্ধ পণ্ডিত শান্তরক্ষিতের তত্ত্বসংগ্রহ, জৈন দার্শনিক হরিভদ্র সুরির ষড়দর্শনসমুচ্চয়, চতুর্দশ শতাব্দীতে রচিত মাধবাচার্যের সর্বদর্শনসংগ্রহ ও শঙ্করাচার্যের সর্বদর্শনসিদ্ধান্তসংগ্রহ প্রভৃতি গ্রন্থে পাওয়া যায়। এছাড়াও অন্যান্য ভারতীয় আস্তিক দর্শন বিষয়ক সংস্কৃত ও পালি গ্রন্থসমূহে মূল্যবান তথ্য রয়েছে; এবং সকল গ্রন্থেই চার্বাক মতবাদকে খণ্ডন করে আলোচকরা আলাপ শুরু করেছেন। তার মূল ভাবনা কী ছিল সেগুলো আলাদা করে উল্লেখ ও বিশ্লেষণ করেননি। অনেকের মতে এসব গ্রন্থে চার্বাক দর্শনের দুর্বল দিককে অধিক তুলে আনা হয়েছে, যেখানে এর শক্তিশালী দিকগুলো আলোচকরা সচেতনভাবে এড়িয়ে গেছেন। চার্বাক সম্পর্কিত যে-সকল অভিযোগ তোলা হয় সেগুলোর সত্যতা নিয়ে সুতরাং সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
ন্যায়দর্শনে স্বীকৃত অনুমানের সাহায্যে সৃষ্টির অস্তিত্ব প্রমাণের যুক্তি-পরম্পরা চার্বাকরা মেনে নিতে পারেননি। পরিবর্তনশীল জগতে দেশ-কাল ও পরিবেশের ভিন্নতা অনুযায়ী বস্তুজগত ও তার ধর্ম প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হয়ে থাকে, তাই অনুমান দ্বারা ব্যাপ্তিজ্ঞানকে চিরকালীন ধরে নেওয়া সম্ভব নয়। অনুমান এখানে সম্ভাবনার আভাস দিচ্ছে মাত্র। আন্দাজি মত পরিত্যাগ করে ইন্দ্রিয়জ সুখকে আলিঙ্গন করা যে-কারণে মানুষের কাম্য হওয়া উচিত;—কারণ পার্থিব দুঃখই হচ্ছে নরক। দেহের বিনাশে নরক থেকে মুক্তি ঘটে মানুষের। আত্মা বলে সুতরাং কিছু নেই। আত্মা যেহেতু নেই, পরকাল বা পুনর্জন্ম থাকাটা অযৌক্তিক।
চার্বাকগণ মানুষের দৃষ্টি অসীম থেকে সসীম আয়তনে, আধ্যাত্মিকতা থেকে বাস্তবানুগ এক জগতে ফেরাতে মরিয়া ছিলেন। প্রেম ও কামকে জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য হিসেবে তারা গণ্য করেছেন। ইহজাগতিক জীবনের মধ্যে সকল আনন্দ নিহিত। এই দর্শন কোনা ধর্মীয় বা অতিপ্রাকৃত বিশ্বাসকে যে-কারণে স্বীকার করেনি। চার্বাক দর্শনের অনুসারীরা বিশ্বাস করে, মৃত্যু পরবর্তী জীবনের ধারণা অবৈজ্ঞানিক;—যা কিছু আমাদের উপলব্ধি ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে প্রমাণিত কেবল তারাই সত্য।
চার্বাকরা সংশয়বাদী ছিলেন। সংশয়বাদ ও অজ্ঞেয়বাদ স্বাধীন এবং প্রশ্নশীল মনের পরিচয় তুলে ধরে। এটি কোনো মতবাদকে বিচার বিশ্লেষণ না করে গ্রহণ করে না। চার্বাক দর্শন সংগতিশীল ও নৈতিকতার ওপর জোর দেয়, কিন্তু এটি আরোপিত নৈতিকতাকে অস্বীকার করে। গুরুত্বপূর্ণ এই-যে, এটি আমাদের নিজ অস্তিত্বে সক্রিয় মানবিকতা ও অভিজ্ঞতাকে স্বীকৃতি দিতে কোনো দ্বিধা রাখেনি। চার্বাক বর্তমানকে অনুভব করার আহবান জানায়। অভিজ্ঞতা ও প্রমাণের মাধ্যমে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করার বিষয়ে জোর দেয়। আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সঙ্গে চার্বাকমত এ-কারণে অনেক বেশি সংগতিপূর্ণ। প্রকৃতি ও অভিজ্ঞতার গুরুত্বকে মৌলিক বিবেচনা করায় মুক্ত চিন্তাকে সে পাথেয় করেছিল। মুক্তচিন্তার গুরুত্ব আশা করি বুঝিয়ে বলার কিছু নেই।
চার্বাক দর্শন কেন বিকশিত হতে পারেনি? কিছু কারণ উল্লেখ করা যেতে পারে :
হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্ম প্রভাবিত ভারতীয় ভাববাদী দর্শনের প্রভাব সমাজে প্রবল থাকায় এটি জনপ্রিয় হতে পারেনি। অবিরত আক্রমণের শিকার হতে হয়েছিল তাকে। ধারাবাহিকতার অভাবে এর মৌলতত্ত্ব সংকলিত না হওয়ার কারণে ভারতীয় জনমানসে তার বীজ বপন করা সম্ভব হয়নি। প্রচলিত ধর্মীয় ও ঐতিহ্য প্রসূত রীতিনীতি, নৈতিকতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ার ফলে মতবাদটিকে গৌণ ও অবলুপ্ত হতে বাধ্য করেন সেকালের বৈদিক সমাজ। ভগবান রজনীশ, ওশো নামে যিনি অধিক পরিচিত—অনুভব সৃমদ্ধ দৃষ্টিকোণ থেকে চার্বাক মতবাদের উপযোগ ব্যাখ্যা করেছেন। এর বিলুপ্তিকে ভারতের জন্য দুভার্গ্যজনক বলে মত দিয়েছেন ওশো। তাঁর মতে বস্তুবাদী চার্বাকদের চিন্তাধারা ভারতবর্ষে বিকশিত হলে বিজ্ঞানের জন্ম পশ্চিমের অনেক আগে এখানে ঘটত। নিউটন, আইনস্টাইন, ডারউইনের মতো বিজ্ঞানীরা ভারতবর্ষে হয়তো জন্ম নিতেন।
বৈজ্ঞানিক চিন্তার বিকাশ ঘটানোর সকল অস্ত্র চার্বাকে মজুদ ছিল। ভাববাদে আচ্ছন্ন ভারতীয় দর্শন, ধর্মশাসিত রাষ্ট্র-কাঠামোয় সেটি ঘটেনি, উলটো একে নিশ্চিহ্ন করা হলো! বিপরীতটা ঘটলে খোলামেলা পরিবেশে দার্শনিক চিন্তার বিকাশ ও অগ্রগতির সাক্ষাৎ লাভ করতেন উপমহাদেশের মানুষ। আধ্যাত্ম্যবাদের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত যুক্তিশীল ও পরিচ্ছন্ন জ্ঞানচর্চার বিকাশ ঘটত এখানে। পরমুখাপেক্ষী হয়ে থাকার প্রয়োজন তীব্র হতো না। এটি আমাদের দুর্ভাগ্য যে, চার্বাককে আমরা এখনো মুক্তচিন্তার আধেয় করে তুলতে পারিনি!
. . .
. . .