প্রাচ্যে এই গুরুবাদী পন্থা মানুষকে ক্রমে যুক্তিবিরহিত মিথপূজারী করে তুলেছে। জাগতিক সংকটকে যে-কারণে সুফি ও মাজারপন্থীরা এখন আর মোকাবিলার শক্তি রাখেন না। সময় যত যাবে, তাদের এই জীবনধারা তাদেরকে মেরুদণ্ডহীন সরীসৃপে রূপান্তরের সম্ভাবনা তৈরি করবে। সুফিকেও জীবনবাদী হতে হয়। তার মধ্যে সৃষ্ট ইশকের লহর যদি সমাজকে প্রভাবিত করতে না পারে, ভালোবাসার প্রয়োজনকে অমোঘ করে তোলার শক্তি না ধরে, প্রেমের প্রচারে শহিদ হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে অগ্রসর হতে না পারেন, অন্যায়ে জড়োসড়ো থাকেন, ভক্তিরস ও কাওয়ালে নিরাময় খোঁজেন কেবল... এগুলো তাকে প্রকারান্তরে পলায়নবাদী করে তোলে।
-
-
প্রতিকূল সমাজবিশ্বে নিজেকে অবরুদ্ধ দেখার আতঙ্ক থেকে আত্মরক্ষার উপায় হলো অসীম অনন্ত কিছুতে অবগাহন। আমির উদ্দিন কাজেই তাঁর ওপর ভরসা করে আত্মরক্ষার পথ খুঁজছেন। দেহতত্ত্ব আর বিচ্ছেদী গানের বুলিতে গুম রাখার মধ্য দিয়ে নিজের পাওয়া-না-পাওয়ার সকল জ্বালা জুড়াচ্ছেন ক্বারী সায়েব। সুতরাং ভারতবর্ষে জন্ম নেওয়া ভাববাদের লোকায়ত স্বরূপের সবটাই অবরুদ্ধতাভীতি ওরফে ক্লাস্ট্রোফোবিয়াকে চিনিয়ে দিয়ে যায়।
-
সংস্কৃতির স্বাভাবিক বিনিময়ের প্রথাকে আমলে না নিয়ে আকিদার প্রশ্নটিকে খেলাফতওয়ালারা সামনে নিয়ে এসেছেন। এমনভাবে নিয়ে এসেছেন, শুনে মনে হবে,- কেবল উনারা সঠিক আর বাকিরা ভ্রান্ত। দল-উপদলে ভাগাভাগি ও কামড়া-কামড়ি সমগ্র মুসলিম বিশ্বে কমন ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। খেলাফতের ছাতায় সবাইকে নিয়ে আসা গেলেই কি এসব মিটে যাবে? খেলাফতের কারণে ধর্মের প্রসার হয়তো দ্রুত ঘটবে, কিন্তু মূল লক্ষ্য থেকে সে আরো দূরে সরে যেতে থাকবে। এই হিসাবে প্রতিটি ধর্ম তার কোর ফিলোসফির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।