কোন সময়? আমরা বলতে পারি, বলা বোধহয় যায় এখন,—পাতাবাহার রচনার নেপথ্যে সক্রিয় সময় আমরা যাপন করছি অদ্য। একপাল হায়েনা মিলে চেটেপুটে খাচ্ছে দেশ ও মানচিত্র। পাতাবাহার সুতরাং প্রাকৃতিক জীবনচক্রে জন্ম নেওয়া উদ্ভিদ থেকে আরম্ভ করে কবি ও স্বদেশে রূপান্তরিত হয়েছে। আবছা হ্যালুসিনেশন বা স্বপ্নবিভ্রম কি আছে টানা গদ্যতালে লিখিত এ-বয়ানের ভিতর? হয়তো আছে। জওয়াহের হোসেন নাতিদীর্ঘ কবিতাগুচ্ছে যেমন হ্যালুসিনেশন গোপন নেই মনে হচ্ছে।
-
-
পৃথিবীতে একদিন আমি বালিশে মাথা রেখে আরামে ঘুমিয়েছি আবার জেগে উঠব বলে, কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। দীর্ঘ ঘুমের পর জেগেছি মিল্কিওয়ের বাইরে। মনে রেখো, পৃথিবীতে একবার ঘুমিয়ে পড়লে ফের জেগে ওঠার কোনও গ্যারান্টি নাই। তবে প্রকৃত ঘুম কোনও গ্যারান্টির পরোয়াও করে না। দীর্ঘ ঘুমের পর, আমার শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা। ব্যথার টুকরোগুলো লাল, পৃথিবীর রক্তজবায় মোড়া। পৃথিবীর আকাশ তাকাচ্ছে আমার দিকে আর মিটিমিটি হাসছে। আমি ছুঁয়ে দিতে চাইছি তার মুখ। পারছি না। তোমরা মানুষ! ঘুমানোর আগে কোনও মানুষকে শিকার করো না।
-
অনেকদিন বাদ একটা ওক গাছে তিরটা উনি খুঁজে পায়। গাছে গেঁথে আছে তখনো। তাঁর মনে হইতে থাকে এইটা এখন এমন এক সংগীত যার আদিঅন্ত কোনো একদিন তিনি গাইছিলেন, আর এখন অনামা দোস্তের হৃদয়ে গানটা গীত হইতেছে। ওক গাছে তিরটার দেখা মিলবে, কবি কখনো সেকথা ভাবেন নাই। গান যখন গাইছিলেন তার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। অন্য কাউকে এখন গাইতে দেখবেন ভেবে গান নাই তখন।
-
ভেবে দেখলে, মানুষ বয়ানবন্দি প্রাণী। সে স্বয়ং অথবা তার হয়ে অন্যরা বয়ান তৈরি করে, এর ওপর ভিত্তি করে ঠিক-বেঠিকের মীমাংসায় পৌঁছায়। মানুষ যে-কারণে ঈশ্বরতুল্য নয়। আবার ঈগল অথবা শূকরও নয়। সে হচ্ছে এমন জীব, ধরায় টিকে থাকার ক্ষেত্রে সকলের ওপর তাকে নির্ভর করতে হয়, কিন্তু তার ওপর কেউ নির্ভর করে না।