মার্কস কাজেই এমন এক নাইটমেয়ার, ইচ্ছা না থাকলেও তাকে আমরা ঘুমঘোর দেখে ফেলি। দুঃস্বপ্ন হয়ে লোকটি বেঁচে থাকে ধরায়। আচমকা হানা দেয়। দরোজার সামনে দাঁড়িয়ে কড়া নাড়ে। আমরা তাকে দরোজা খুলে দিতে বাধ্য হই। এক ডেলিভারিম্যানকে তখন দেখি সেখানে। তার হাতে বাক্সে মোড়ানো বই। আমরা তা হাতে নেই। মোড়ক উপড়ে ফেলি। এবং দেখি,—লালরক্ত মেশানো বইয়ের মলাটে কুখ্যাত শব্দটি লেখা রয়েছে! শব্দটিকে ভুলে থাকার জন্যই তো প্রাণপণ খাটছি সবাই! এখন ডেলিভারি ম্যান বাধ্য করছে তাকে ইয়াদ করতে!
-
-
কথায় আছে, আগে পেট, তারপরে চেট। এখন পেটে ক্ষুধা রেখে প্রেম ও সেক্স কোনোটাই কাজ করবে না। অভাব যখন আসে, ভালোবাসা জানালা দিয়া পালায়;—প্রবচনটি মানুষ নিজের জীবন-অভিজ্ঞতা থেকে আবিষ্কার করেছে বৈকি। তবে এটি মানতে হবে,—পেটের খিদের মতো মানুষের মধ্যে প্রেমের বাসনা ও যৌনচাহিদা নিতান্ত মৌলিক। এমনকি অভাবের মধ্যেও যৌনরিপু মানুষকে ত্যক্ত করে মারে।
-
সত্য নগ্ন ও খোলামেলা থাকুক,—এটি আমাদের চাওয়া। বাকস্বাধীনতার নাম করে যদি সত্যকে অহরহ মিথ্যা পয়দার কাজে ব্যবহার করা হয়, তাকে সবসময় প্রতিহত করা সম্ভব নাও হতে পারে। বাংলাদেশকে যার সেরা উদাহরণ গণ্য করা যেতে পারে। আমাদের সমাজ আগাগোড়া লাই ম্যাট্রিক্সের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। সত্যকে যেখানে অজস্র মিথ্যার সাহায্যে অবলীলায় বদলে ফেলা যায়, এবং মানুষ তা বিশ্বাস করে। এর পেছনে সক্রিয় রাজনীতিতে পরিবর্তন না এলে জন স্টুয়ার্ট মিলের অন লিবার্টি আমাদের জন্য খামোখা।
-
সারসংক্ষেপ করলে প্রশ্নগুলো এমন : মার্কসের মানি ম্যানেজমেন্ট স্কিল দুর্বল, এপিকিউরিয়ানদের মতো ছিল তাঁর জীবন, সবসময় দেনার ওপর থাকত ইত্যাদি। দুর্বল মানি ম্যানেজমেন্টের কারণে সে বুর্জোয়াদের বিরোধিতা করেছে, ওদিকে জীবনযাপন করেছে বুর্জোয়া পরিবেশে। ছোটবেলা থেকে অগোছালো জীবনে অভ্যস্ত।মদ, সিগারেট টানত, আর গোসল করত না। মার্কসের আর্থিক অবস্থা যদি খারাপ হয়ে থাকে, তাহলে এতোগুলো বাচ্চা নিলো কেন? তার ওপর অনেকে আধ্যাত্মিকতা আরোপ করে থাকেন অথচ বাস্তবে সে ছিল ভোগবাদী;—আধ্যাত্মিকতার লেশমাত্র তাঁর মধ্যে ছিল না... ইত্যাদি... ইত্যাদি। এখন এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর কি হয় আসলে? এভাবে বিচার করা কতটা যুক্তিসংগত?
-
Democracy-কে আফ্রিকান ঢংয়ে বদলে নিছিলেন ফেলা কুটি। Demo Crazy বা উনার ভাষায় Demonstration of craziness বইলা আঘাত হানতেন অহরহ। আফ্রোবিটের জনক পপসম্রাটের এমনধারা রাজনীতির মূলে ছিল আফ্রিকাকে তার আত্মপরিচয় ইয়াদ বিলানো, যেন নিজের স্বকীয়তা সে বুঝতে পারে, যেটি কিনা জাতিসত্তা গঠনের বনেদ বইলা তিনি গণ্য করছেন সবসময়। ফেলার এই পলিটিক্স হয়তো সময়ানুগ ছিল না, কিন্তু এর ভিতরে সেই বারুদ ছিল যা আফ্রিকার কোনো দেশ এখন আর ধারণ করে না। আফ্রিকানিটি প্রকৃতপক্ষে সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদ নয়, বরং এক মিসিং লিংকের তালাশ, যাকে ছাড়া আফ্রিকার জনগোষ্ঠীর পক্ষে নিজস্ব বনেদে দাঁড়ানো সম্ভব হইতেছে না।