নেটালাপ

কামুকী ও কামনিস্পৃহ নারী-২

. . .

নারীবাদের পুরুষবাদী বয়ান  

. . .

গতকাল রাত্রে আলাপটা যেখানে ইতি টানছিল, আমার মনে হয় সেখান থেকে আপাতত একখান উপসংহারের দিতে আমরা যাইতে পারি। নারীর কামস্পৃহা ও কামনিস্পৃহতার সমস্যা নিয়া আলাপে জাভেদ ও বেলাল ভাই পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতায় ফোকাস করছেন। দেখেন ভাই, পুরুষতন্ত্র বা আরো ডিপে গিয়া যদি বলি আলফা মেল টাইপ নারীবিদ্বেষ, অ্যানিম্যাল ছবিতে যেইটা তুলে ধরার কারণে সন্দীপ রেড্ডি বঙ্গা পাবলিকের বিস্তর গালি হজম করছে… এখন এই সমস্যা তো নতুন কিছু না;- সবসময় ছিল বা এখনো আছে। কোন কনটেক্সটে তার উদ্ভব, মানে ওই ন্যারেটিভ কিন্তু আমরা কমবেশি জানি। নারীবাদী আন্দোলনের সূচনা এই জায়গা হইতে অবশ্যই যৌক্তিক। মেরি ওলস্টোনক্রাফট যে-সময়ে বসে A Vindication of the Rights of Woman লিখতেছেন, এবং বৈষম্যের জায়গাগুলা চিহ্নিত করার মধ্য দিয়া নারীবাদের দর্শন কার্যত জন্ম নিতেছে…, কালপর্ব বিবেচনায় সেইটা যথার্থ ছিল। অথবা ধরেন, বেগম রোকেয়ার পরিহাসমাখা রচনা যুগপর্ব বিবেচনায় জরুরি বইলা মানতে হবে আমাদের। যেমন জরুরি ছিল বিদ্যাসাগরের বিধবাবিবাহ আন্দোলন। প্রাসঙ্গিক ছিল রাজা রামমোহন রায়ের সতীদাহ প্রথা বিলোপে সক্রিয় হওয়ার ঘটনা। 

এর কারণ, সমাজ তখন এতটাই একপেশে হয়ে উঠেছিল, পুরুষরা সেখানে এডওয়ার্ড সাঈদের We বা আমরা আর নারীগণ Other বা অপর -এ চিহ্নিত ছিলেন। সময়ের সঙ্গে নারীবাদের বিবর্তন কিন্তু মেরি ওলস্টোনক্রাফট বা বেগম রোকেয়াদের রেখে যাওয়া ফিলোসফি থেকে অধিক দূরে যাইতে পারে নাই। যার ফলে পুরুষ যে-চোখ দিয়া নারীকে এতদিন বিচার করছে বা তার জন্য স্পেস ঠিক করে দিছে,- নারী এখন সমানাধিকার আদায়ের লড়াইয়ে সেই স্পেসটা ফেরত দিতেছেন পুরুষকে। এখানে সমতা/ সাম্য/ ইকুয়ালিটির প্রসঙ্গ যত ব্যাপক, ইকুইটি বা ন্যায্যতার ইস্যু গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার চান্স পায়নি। ফলে নারীবাদ কতটা নারীবাদ আর কতটা পুরুষবাদের আদলে তৈরি একখান জিনিস,- প্রশ্নটা আমরা কিন্তু তুলি না এখন। 

Mary Wollstonecraft; c. 1797; Source: Wikipedia

হ্যাঁ, মানতেছি, নারীবাদ একটা সময় ইকোফেমিনিজমের দিকে মুভ করতে চাইছেন। নারী এবং পুরুষের সমতা বা ন্যায্যতা যথেষ্ট না। সমাজে যারা প্রান্তিক তাদের স্থান সেখানে নির্ণয় করা প্রয়োজন। পরিবেশকে বিবেচনায় অনা গুরুতর। এসব আলাপ উনারা নারীবাদের পরিসরে তুলছিলেন একদিন। ইকোফেমিনিজম কিন্তু উপসংহারে আলাদা কোনো পরিসর তৈরি করতে পারে নাই। এই জায়গা থেকে হুমায়ুন আজাদের বা সিমন দ্য বেভোয়ারের নারীবাদী বয়ানের প্রাসঙ্গিকতা, আমার বিবেচনায়, অনেকটা একরৈখিক। 

ধরেন, সিমন দ্য বেভোয়ার উনার দ্বিতীয় লিঙ্গ -এ চমৎকার একটা কথা বলছিলেন। উনি বলছিলেন, রান্নাবান্না হইতেছে নিখাদ শিল্প। মেয়েরা এই শিল্পে যেহেতু সহজাত, উনাদের উচিত হবে একে ধরে রাখা। তবে হ্যাঁ, শিল্পটা যদি প্রতিদিনের রুটিন হইতে থাকে বা তার উপ্রে চাপিয়ে দেওয়া হয়, তখন এর বিরুদ্ধে দাঁড়াইতে হবে। এখন রন্ধনশিল্পে নারীর ভূমিকা গৃহ-পরিসরে স্থির করে দিছে সমাজ। পাঁচতারকা হোটেলের শেফ কিংবা বিয়েবাড়ির এলাহি রান্নার যজ্ঞে পুরুষের ভূমিকা একচ্ছত্র। শারীরিক সামর্থ্য ফ্যাক্টর সেখানে। যে-কারণে আদিবাসী সমাজ, এমনকি মাতৃতান্ত্রিক সমাজে আমরা কিন্তু কর্ম-বিভাজনটা দেখি। কে কোন কাজের উপযুক্ত তার একটা বোঝাপড়া সেখানে ছিল বা এখনো কতক ক্ষেত্রে আছে। কোনোপ্রকার বৈষম্যের প্রশ্ন কখনো উঠে নাই। কারণ হইতেছে,- কর্মবণ্টনে সমতা ও ন্যায্যতা দুটাই ছিল সেখানে। 

রন্ধনশিল্পের অধুনা জগতে আমরা এই ভারসাম্যকে প্রতিষ্ঠা দিতে পারি নাই। গৃহিনী শব্দটি, ফরহাদ মজহারের নারী বিষয়ক কবিতা ইয়াদ করলে আপনি ব্যবহার যাইতে অস্বস্তিতে পড়বেন। সুতরাং হোমমেকার সেদিক হইতে নিরাপদ। এখন ঘরের কাজে উদয়াস্ত যে-নারী শ্রম ও সময় দুটাই খর্চা করেন, তার আর্থিক ও সামাজিক মূল্য বিরাট, কিন্তু এখানে স্বীকৃতি ও ন্যায্যতার অভাব থেকে যাইতেছে। আমরা পুরুষ অনেকসময় টের পাই না কাজগুলা কী পরিমাণ কঠিন আর ক্লান্তিকর। আদিবাসী বা এখনো অরণ্যচারী কোনো সমাজে একই কাজ যে-নারী করেন, সেখানে আবার এইটা কোনো ব্যাপার না। কারণ, তাদের মধ্যে সভ্যতার ওইসব সংজ্ঞা যেহেতু ঢোকে নাই, এইটা স্রেফ কর্ম বণ্টন ও বিভাজন;- তার বেশি কিছু নয়। 

তুমি ঘরের এই কাজগুলা করবা, আমি বাইরের কাজগুলা দেখতেছি। দিন শেষে একসঙ্গে খানাপিনা, রমণ, শয়ন ও বাচ্চা পালন জারি থাকবে। নারীকে আমরা ধরিত্রী বলি। তিনি ধারণ এবং পালন করেন। এখন ভারতীয় অর্ধনারীশ্বর কিন্তু ন্যায্যতার উপ্রে সৃষ্টি হইছিল। শিব ও পার্বতী একে অন্যে মিশে আছেন, কারণ দুইয়ের মিলন ছাড়া সৃষ্টি হবে না। প্রজনন নাহি সম্ভব। পুরাণে এইটা সমতা না বরং ন্যায্যতার আভাস দিয়া যায়। আমরা সমতায় গিয়া সব ঘাপলা করে ফেলতেছি। নারীবাদের সমস্যা এখানে;- এইটা আমার ব্যক্তিগত অভিমত। এখন এর যৌক্তিকতা নিয়া তর্ক চলতে পারে। 

Baahubali 2: The Conclusion Movie Scene; Source – Netflix India

. . .

প্রাচীন ভারতের পুরুষতান্ত্রিক সমাজ প্রসঙ্গে আপনারা যে-আলাপ তুলছিলেন জাভেদ, এখন সেদিকে আমরা যাইতে পারি। নারী কি নিছক পুরুষতান্ত্রিক সমাজের খেলনা ছিল তখন? থাকলে কোন সময়ে ছিল? এই প্রশ্নটা মনে হয় আসবে। নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ীর ওই-যে মেয়ে জন্ম নিয়া পডকাস্ট, সেখানে উনি তাঁর মেন্টর সুকুমারী ভট্টাচার্যের প্রসঙ্গ টানছিলেন। বলতেছেন,- প্রাচীন ভারতীয় সমাজের ব্যাপারে উনাদের ন্যারেটিভ অনেক ক্ষেত্রে এই কালপর্বকে বোঝার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। মনুসংহিতা আসার আগেকার সমাজ আর পরবর্তী সমাজ কিন্তু এক না জাভেদ। সমাজটাই এমন ছিল না তখন। নারী কিংবা পুরুষের মধ্যে সম্পর্কের আবহ একরৈখিক আদৌ ছিল না। 

নৃসিংহপ্রসাদের কোনো এক বইয়ে পড়ছিলাম, নাম এখন মনে পড়তেছে না, মহাভারত -এ অর্জুনের জানি দোস্ত কৃষ্ণের চরিত্রবীক্ষণ করছিলেন উনি। কৃষ্ণ একদিকে পাণ্ডবদের মিত্র। অর্জুনের সঙ্গে তার পাক্কা দোস্তি। অন্যদিকে দ্রৌপদী পরমপ্রিয় সখা। এ-যুগের ভাষায়, গার্লফ্রেন্ড বলা যাইতে পারে। দ্রৌপদীর সঙ্গে প্রেম অথবা দৈহিক কোনো লেনদেনের ব্যাপার ছিল না কৃষ্ণের। একজন আরেকজনের কাছে ফ্রি ছিলেন। দোস্তি গাঢ় হইলে যেমন হয়, দুজনের সম্পর্কে সেই কেমিস্ট্রি ছিল তখন। দ্রৌপদীর কাছে কৃষ্ণ হইতেছেন বিপদতারিণী মধুসূদন। অ্যা গ্রেট প্রটেক্টর। কৃষ্ণের কাছে দ্রৌপদী মন খুলে কথা বলার একটা স্পেস। তো এক উদাস দুপুরের আলাপ তুলে আনতেছেন নৃসিংহপ্রসাদ। পঞ্চপাণ্ডবদের নিয়া মজলিশ জমাইছেন কৃষ্ণ। দ্রৌপদীও আছেন সেখানে। আড্ডার মধ্যে দ্রৌপদী উনার পা কৃষ্ণের কোলে রেখে আয়েশ করতেছেন। অর্জুনসহ বাকিরা তাতে মাইন্ড করতেছেন না। 

Mallika Sarabhai as Draupadi on Peter Brook’s Play The Mahabarat; Source: Google Image

এই ঘটনার সিগনিফিকেন্স আমাদের ইশারা দিয়া যায়,- মহাভারতপর্ব বা তারো আগে সামাজিক বিন্যাসকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন ছিল। আজকের সঙ্গে তুলনা করলে প্রাগ্রসর মানতে হইতেছে তাকে। নারী বলেন অথবা পুরুষ… সম্পর্কের পটভূমি অন্যভাবে দেখত সমাজ। দেবলোক ও নরলোকে দেবতাদের যত্রতত্র অপ্সরী ও মানবীসম্ভোগকে আমরা এখনকার বয়ান হাতে দেখি বইলা সেইটা অশ্লীল ও একরৈখিক ঠেকে। নৃসিহংপ্রসাদ উনার দেবতার মানবায়ন নামক রসরচনায় এই চোখ দিয়া দেবতাদের কিচ্ছা ফাঁস করছিলেন। পড়তে বেশ উপাদেয়। তখনকার পরিপ্রেক্ষিতে এসব কেলেঙ্কারি স্বাভাবিক জীবনবেদের অংশ বইলা সমাজ গণ্য করছেন। ঝামেলার উৎপত্তি মূলত সনাতন হইতে হিন্দু ধর্মে ভারতীয়রা যখন নিজেকে চিনতে শুরু করলেন,- তখন থেকে। 

বর্ণবিভাজনের সংজ্ঞা যেমন পাল্টাইছে তখন, নারীকে আদার করার খেলাটি শুরু হইল অতঃপর। এখানে আইসা আজকের নারীবাদ প্রাসঙ্গিক হইতেছেন। এই বিষয়গুলা কিন্তু হুমায়ুন আজাদের আলাপে আপনি মিসিং দেখবেন। কারণ, উনি নারীকে আগেই বঞ্চিত ধরে লিখতে বসছেন। যত কিতাব পড়ছেন… সব ওই ছকে পাঠ করছেন হুমায়ুন। যার ফলে নারীবাদী বয়ান সিঙ্গেল স্টোরিতে পর্যবসিত হইতেছে। উনার পক্ষে তখন মহাভারতযুগে কিংবা অনেক পরের বাৎসায়নের কামসূত্র -এ কামক্ষুধার মাত্রা অনুসারে নারীর শ্রেণিকরণ অন্য চোখে দেখার ভাবনা কাজ করে নাই। 

কামসূত্র কিন্তু প্রধানত পুরুষতান্ত্রিক রচনা না। এর মূল লক্ষ্য হইতেছে রতিসুখ উদযাপনের বিচিত্র তরিকা বাতলানো। আজকের সায়েব-মেমরা যেসব রতিআসন ব্যবহার করে সুখ পান, আমরাও হয়েতো যুগপ্রভাবে কিঞ্চিৎ সেগুলা ফলো করি,- কামসূত্র-এ তার অনেকগুলা ভালোভাবে বর্ণিত আছে। সেখানে নারী এবং পুরুষ দুজনকে বাৎসায়ন সম্পৃক্ত রাখছেন। সেক্স পজিশন কেবল একরৈখিক বা পুরুষসুলভ মোটেও নয় সেখানে। দুদিক থেকেই আসনগুলার বর্ণনা আসতেছে। সেইসঙ্গে নারীর ফিজিককে গুরুত্ব দিতেছেন বাৎসায়ন। এইটা এখনকার বিজ্ঞান হাতে নিলে খুব-যে ফালতু… তা কিন্তু না। 

. . .

Kamsutra: Miar Nair Movie Scene; Source: study with Dk YTC

. . .

বড়ো কথা হইতেছে যৌনমিলন এমন এক মহান উদযাপন, প্রকৃতির মতো অবারিত ভাবতে না পারলে তারে এনজয় করা কঠিন। হাঁসের রমণক্রিয়া যদি কখনো লক্ষ্য করেন, আপনার গা শিউড়ে উঠবে। পুরুষ হংস যেভাবে চড়াও হয়, মনে হবে রেপ করতেছে। কিন্তু নারীহংসের তাতেই সুখ। এইটা তার আজব বায়োলজি। তার প্রবৃত্তি ওতেই তৃপ্ত হয়। মানুষ হংসকেলি করতে গেলে সেইটা রেপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। এখন এইটা আবার ডিপেন্ড করতেছে নারী এবং পুরুষ এরকম কিছুতে যদি সম্মত থাকেন,- আমি-আপনি উনাদের হংসকেলিকে নৈতিকতার দোহাই দিয়া রুখব ক্যামনে? মোল্লাগিরি হবে সেইটা। 

বৈবাহিক মিলনকে তো আমরা অনেকসময় ধর্ষণ বা ম্যারিটাল রেপ বলি। কখন বলি? নারীর উপ্রে পুরুষ জবরদস্তি করলে বলি ম্যারিটাল রেপ করছে হারামজাদা। কামসূত্র ওসবের বাইরে গিয়া রচিত। আসল কথা হইতেছে, নারী ও পুরুষ দুজনার মধ্যে কামক্ষুধা ও কামনিস্পৃহতা কাজ করতে পারে। উনাদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিসর এবং সেখানে সক্রিয় ডোজ এন্ড ডোন্টস হইতেছে ফ্যাক্টর। 

তবে, আমরাও চাই, নারী ও পুরুষের কামসম্পর্কে জৈবযৌনতা এমন হোক, যেখানে এইটা তারা এনজয় করবেন। এমন কোনো বয়ান দ্বারা শাসিত হবেন না, যেটি কিনা সম্পর্ককে একরৈখিক করতেছে। নারীর কাজ নয় পটের বিবি হয়ে পুরুষের যৌনসুখ চরিতার্থ করা। পুরুষের কাজ নয় নারীকে কেবল গৃহস্থালির সামগ্রী বইলা ভাবা। ন্যায্যতা এখানে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কোরান-এ  বিষয়টি আছে কিন্তু। আমরা যদিও সেদিকে ইন্টারেপ্রেট করি না। 

আবদুল গফুর হালীর পাঞ্জাবিওয়ালা গান নিশ্চয় শুনছেন। তো এই গানের যে-ভার্সন শিরিনি গাইছেন, সেইটা আমার কাছে যুগ-প্রাসঙ্গিক লাগে। শিরিনের এ্যাপ্রোচ এখানে প্রাচীরকে ভেঙে দিতেছে। হালীর জায়গা থেকে গানটা স্পিরিচুয়াল। আল্লাকে কানাইয়ের উপমায় শানদার ভাবতেছে উনি। তাঁর লগে স্পিরিচুয়াল রোমান্সে বুঁদ আছেন। শিরিনে আইসা আব্দুল গফুর হালীর পাঞ্জাবিওয়ালা নিখাদ সেক্সিজমে শানদার। মর্ডান যুগের রাধা যেন কৃষ্ণকে টিজ করতেছে সেখানে। এইটাও এক ধরনের নারীপ্রগতি,- এবং দরকারি। 

. . .

Panjabiwala by Abdul Gafur Hali – Habib ft. Shireen

. . .

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.

Contributor@thirdlanespace.com কর্তৃক স্বত্ব সংরক্ষিত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *