ফ্যাসিজম আদতে যমরাজ হয়ে মানুষের উপ্রে নিজের কাজবাজ চালাইতে থাকে। কাজেই এখানে ইজম-এ নিহিত প্রতীকী অর্থটারে ভাঙতে ফ্যাসিযম লেখা যাইতে পারে। যম কে বা কী-কারণে তার এহেন নামকরণ, সেইটা হয়তো কলিম খান ও রবি চক্রবর্তী জীবিত থাকলে ঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারতেন, তবে যম শব্দের ক্রিয়াভিত্তিক বুৎপত্তি বাদ দিলেও হিন্দু পুরাণের সুবাদে তার যে-বয়ান আমরা জানি, সেখান থেকে তার কাজের ধারা ভালোই ঠার করা যায়। সুতরাং ফ্যাসিজম নয়, আমরা অনায়াস লিখতে পারি ফ্যাসিযম। জুকারবার্গের অ্যালগরিদমকে এই ব্যাপারে ইনপুট দিলে তখন আবার শব্দটাকে ধরবে সে। অসুবিধা নাই, ফ্যাসিযম-এর মাঝখানে গাণিতিক অথবা অন্য চিহ্ন বসিয়ে নতুন অপিরিচিতকরণে আমরা যাবো তখন।
-
-
দার্শনিক দেকার্তেও বিষয়টি নিয়ে আলাপ তুলেছেন। যেখানে তিনি বলছেন,- মিথ্যা হচ্ছে মানুষের চিন্তা ও উপলব্ধির বিকৃত প্রতিফলন। দার্শনিক কান্ট বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছিলেন। যে-কারণে কান্টের নীতিশাস্ত্র এখন পর্যন্ত বহুল প্রভাবস্তিারী। কান্ট বলেন, সত্যের ধারণা আমাদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে। সত্য একটি সুস্থ সমাজের জন্য অপরিহার্য। সত্য বলা একটি নৈতিক বাধ্যবাধকতা।
-
নিখাদ মিথ্যা বলতে কি কিছু আছে? মিথ্যা বলার পর বমি বমি, মানসিক যন্ত্রণা, অসম্ভব অস্বস্তি কেন হয়? মিথ্যার অস্ত্রে অনেক মানুষ চোখের পলকে নাই হয়ে গেলে কেন আফসোস হয় অথবা তখনও কেউ কেউ নির্বিকার থাকি? মিথ্যা উদ্ভাবনের পরই তো বলা হলো আমাদেরকে সত্য বলতে হবে। সত্য বই…. যা বলা যাবে না তা আবিষ্কারই বা কেন? তবে কি আমরাই সেই ঈশ্বর- যে সত্যি মিথ্যাকে নিয়ে খেলতে ভালোবাসে? অনেকে বলে স্বর্গ হলো সত্যের আর মিথ্যা হলো নরকের প্রতীক। একবার স্বর্গে, আরেক বার নরকে যাওয়া আসার মানসিক আনন্দের অথবা যন্ত্রণার এই খেলার উদ্ভাবক কে বা কারা?
-
কিন্তু প্রশ্ন সেখানে নয়, প্রশ্ন প্রাচীন ইহুদি সমাজের উদাহরণ এবং যুক্তির দোহাই দিয়ে যে বিচার পদ্ধতির কথা বলা হচ্ছে তা নিয়ে। অতিরিক্ত একমত মানেই যে ভুল বিচার যুক্তিগত দিক থেকে তার ভিত্তি নাই যতক্ষণ না তা প্রমাণিত হয়। ফলে আপাত যৌক্তিকতার মধ্যেই জন্ম হয় অযৌক্তিক আচরণ। ঘটনার বর্ণনা আদতে কিছুই উৎপাদন করে না একটা বিভ্রম ছাড়া। তবে ঘটনার বর্ণনাকে আক্ষরিকভাবে না নিয়ে ভিন্নভাবে পাঠ করা যেতে পারে । মতামত, ভিন্নমত এসব থাকবেই। মার্কসের ভাষায় এই দ্বান্ধিকতাই সময়কে গতিশীল করে, সমাজব্যবস্থা নতুন রূপ পায় ।
-
ফরহাদ মজহারের বিষয়টিকে আমার সাম্রাজ্যবাদের গোপন আঁতাত বলে মনে হয় না। তিনি তাঁর ব্যক্তিবিশ্বাসের স্থান থেকেই হয়তো ইসলামি বিপ্লবের আশায় আছেন, যেমন এককালে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের স্বপ্ন দেখতেন। এটি স্ববিরোধীতা। বামদলগুলো ফরহাদ মজহারের কাছে থেকে কি নিতে পেরেছে জানি না, কিন্তু ইসলামি সংগঠনগুলো জঙ্গীবাদ লালনের নৈতিক শক্তি লাভ করবে তাতে সন্দেহ নেই। ...