ডিপসিক রিলিজের পর চীন সম্প্রতি বাজারে এনেছে নতুন এআই এজেন্ট ম্যানাস (Manus)। নিজের কাজ নিজে করতে সক্ষম এজেন্টকে পরীক্ষামূলকভাবে বাজারে অবমুক্ত করেছে দেশটি। ম্যানাসের প্রযুক্তি-কৌশল বাজারে প্রচলিত এআই এজেন্ট থেকে ভিন্ন হতে যাচ্ছে বলে প্রযুক্তিবিদরা ধারণা করছেন। এর নকশায় একাধিক এআই এজেন্ট সংযুক্ত থাকার আভাস চীন আগে দিয়ে রেখেছিল। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী কোনো কাজ কীভাবে করতে হবে এই ব্যাপারে তথ্য সরবরাহ করে সে বসে থাকবে না। কাজটি সারতে নিজে হাত লাগাবে। গ্রাহক তাকে একবার কোনো কাজ দিলে সেটি সম্পন্ন করতে তার সঙ্গে গ্রাহকের বারবার যোগাযোগ করার প্রয়োজন থাকবে না। কাজ বুঝে নেওয়ার পর ম্যানাস তা সম্পাদনে নেমে পড়বে, এবং কাজটি শেষ হলে গ্রাহককে ফলাফল জানাতে বিলম্ব হবে না তার।
তথ্য অনুসন্ধান ও যাচাই-বাছাইসহ বিশ্লেষণের ঘটনায় ম্যান্যাসের নকশা ওপেন এআই প্রযুক্তিনির্ভর চ্যাটজিপিটি বা কিছুদিন আগে বাজার তোলপাড় করা ডিপসিক থেকে ভিন্ন ও অধিক ফলাদায়ক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাজারে এই মুহূর্তে জনপ্রিয় এআই এজেন্টগুলো গ্রাহকের চাহিদা বুঝে তথ্য সরবরাহ করে। কাজটি করার জন্য তাদেরকে অবিরত ইনপুট দিয়ে যেতে হয়। প্রশিক্ষণের মধ্যে রাখতে হয় ব্যাপক। মানুষ ও অন্যান্য প্রযুক্তি নির্ভর প্লাটফর্মের সহায়তা এআই এজেন্টের ক্ষেত্রে এখনো অন্তিম। যে-কারণে এগুলোকে টেক্সট ওরিয়েন্টেড বা চ্যাটনির্ভর এজেন্ট বলা হচ্ছে। ম্যানাসকে সেখানে অ্যাকশন ওরিয়েন্টেড হিসেবে তৈরি করা হয়েছে।
তথ্যের চাহিদা মিটানো ম্যানাসের একমাত্র কাজ নয়; এর পাশাপাশি তথ্য ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় কাজটি কীভাবে সারতে হবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতা তার থাকছে। গ্রাহক চাইলে তার হয়ে কাজটি করেও দেবে সে। যেমন, রোবট পরিচালনা থেকে আরম্ভ করে প্রতিষ্ঠানে জনবল নিয়োগে যেসব আনুষ্ঠানিকতা অনুসরণ করা হয়, ম্যানাসের ভূমিকা সেখানে আগামীতে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। জীবনবৃত্তান্ত অনুসারে উপযুক্ত প্রার্থী বাছাইয়ের কাজটি সে অনায়াসে করে দেবে। তাকে দিয়ে চাকরিপ্রার্থীর সাক্ষাৎকার নেওয়ার আনুষ্ঠানিকতকা সেরে ফেলাও অবান্তর থাকবে না। কোন প্রার্থীকে চাকরি দিলে প্রতিষ্ঠান লাভবান হবে সেই বিষয়ে নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানকে তার সঙ্গে শলাপরামর্শ করতেও দেখা যেতে পারে!
প্রচলিত এআই এজেন্টকে হালনাগাদ রাখতে প্রচুর তথ্য সরবরাহ করতে হয়। তথ্যের ভিত্তিতে তারা অনেকসময় নিজেকে স্বকীয় ও বুদ্ধিমত্তার অধিকারী প্রমাণের চেষ্টা করে। নিজস্ব অ্যালগরিদম কাজে লাগিয়ে তথ্যকে যাচাই ও বিশ্লেষণ করে হামেশা। স্বকীয়তা অর্জনের ঘটনাটি যদিও তাদের ক্ষেত্রে এখনো পরীক্ষিত বা নিশ্চিত নয়। ম্যানাস এই সমস্যায় ইতি টানতে যাচ্ছে। নতুন কোনো তথ্য পাওয়া মাত্র এজেন্টটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজেকে হালনাগাদ করার পাশাপাশি স্মৃতি সংরক্ষণ পদ্ধতিতে তা ধরে রাখবে। তাকে যে-কারণে বাজারচলতি ন্যারো এআইয়ের বিপরীতে মাল্টি টাস্কিংয়ের গুণে গুণান্বিত জেনারেল এআই হিসেবে প্রযুক্তিবিদরা স্বীকৃতি জানাতে কুণ্ঠা বোধ করছেন না।
যেমন ধরা যাক, ম্যানাস-এ সংযুক্ত অ্যালগরিদমের সাহায্যে চালিত কোনো গাড়ি অচেনা রাস্তায় গিয়ে পড়েছে। রাস্তাটির বিষয়ে তার কাছে আগে থেকে কোনো তথ্য বা ডেটা নেই। ম্যানাস এখন মানুষের মতো নিজ বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে পরিস্থিতি মোকাবিলায় চেষ্টা চালিয়ে যাবে। অচেনা রাস্তার ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহে লিপ্ত হবে তাৎক্ষণিক। তথ্য পাওয়া না গেলে কী করতে হবে এই সিদ্ধান্ত নিতেও সে দেরি করবে না। বিষয়টি অভিনব তাতে সন্দেহ নেই! রোবট থেকে পাওয়ার প্লান্টের মতো জটিল ব্যবস্থাপনায় ম্যানাস ভূমিকা নিভাতে চলেছে বলে চীনা প্রযুক্তিবিদরা মত দিচ্ছেন। এরকম কাজ সম্পাদনে তাকে ব্যবহারের প্রবণতা আগামীতে ব্যাপক বৃদ্ধি পাবে বলেই মনে হচ্ছে।
ম্যানাসের আরেকটি অনন্য দিক হলো প্রচলিত এআই এজেন্টের মতো এটি কেবল অনলাইন বা ক্লাউড নির্ভর নয়। অনলাইনে সংযুক্ত না থেকেও নিজের কাজ সে চালিয়ে যেতে সক্ষম। তথ্য বিশ্লেষণ ও সংরক্ষণে লোকাল ডিভাইসকে এক্ষেত্রে ব্যবহার করবে সে। অনলেইনে তাকে সংযুক্ত করা হলে উক্ত তথ্য ক্লাউডে জমাও করবে। প্রযুক্তিবিদরা যারপরনাই এআই প্রযুক্তি ক্লাউডে কেন্দ্রীভূত কেন্দ্রীয় সার্ভার ব্যবস্থা থেকে এজ কম্পিউটিং (Edge Computing) ভিত্তিক নেটওয়ার্ক মডেলে পা রাখতে যাচ্ছে বলে নিদান হাঁকছেন।
সোজা কথায় ম্যানাস কেবল বাক্যনবাবের ভূমিকা মিটিয়ে বসে থাকবে না, কথার সঙ্গে কাজেও করে দেখাবে সে। এই যেমন, যে-খাবারটি আপনার রান্না করতে মন চাইছে, এখন তার রেসিপি চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে চালিত কোনো রোবট চমৎকার বলে দিতে পারবে। ম্যানাস চালিত রোবট আরো একধাপ এগিয়েছে। আপনি চাইলে রেসিপিটি সে রান্নাও করে দেবে। জটিল কোনো গাণিতিক অথবা রসায়নিক সমস্যার সমাধান ডিপসিক বা জিপিটি ভালোই দিতে জানে। ম্যানাস এখানেও ভিন্ন পথ ধরেছে। গাণিতিক ও রাসায়নিক সমস্যার ধরন বুঝে স্বয়ংক্রিয় ল্যাব তৈরি করা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ফলাফল হাজির করার সক্ষমতায় সে অনন্য হতে যাচ্ছে।
কারখানায় ব্যবহৃত যন্ত্র কোনো কারণে বিগড়ে গেছে। সমাধানের আশায় কারখানা কর্তৃপক্ষ চ্যাটজিপিটির দ্বারস্থ হলেন। জিপিটি তখন বলবে,—সম্ভবত বেয়ারিং নষ্ট হয়ে গেছে, টেকনিশিয়ানকে ডাকুন। ম্যানাসের দ্বারস্থ হলে ছবি সম্পূর্ণ বদলে যাবে। সে কী করবে মনে হয়? প্রযুক্তিবদরা বলছেন,—বিগড়ে যাওয়ার যন্ত্রের ত্রুটি সারাতে ম্যানাস তার অ্যালগরিদমে সংযুক্ত সেন্সর ডেটা ব্যবহার করবে প্রথমে। সমস্যা নিয়ে প্রয়োজনীয় গাণিতিক বিশ্লেষণ ও অনুমান করতে দেরি করবে না। সমস্যা ধরা পড়েছে বলে নিশ্চিত হলে নিজের রোবোটিক সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে ত্রুটি সারাই করতে নামবে চটজলদি। এরকম শত-শত কাজবাজ ভবিষ্যতে তাকে দিয়ে করানো কোনো ব্যাপার থাকবে না! জীবনধারায় যেটি গুণগত পরিবর্তন ঘটানোর পাশাপাশি কর্মসংস্থানের বিন্যাসে ঝড় বয়ে আনবে। মানব প্রজাতির সেক্ষেত্রে ব্যাপক চাপ মোকাবিলায় আগেভাগে প্রস্তুত থাকা সমীচীন। ম্যানাসের মতো এজেন্টের পাল্লায় পড়া বিশ্বে মানবিক কর্মসংস্থান ও অর্থনীতির ইতিনেতি প্রভাব মারাত্মক হবে বলে অনেকে শঙ্কা প্রকাশ করছেন।
ম্যানাসকে, যতদূর বোঝা যাচ্ছে, বৃহৎ পরিসরে যেসব পেশাদার কাজ করা হয়ে থাকে, সেগুলো এখন চটজলদি ও কম খর্চায় সেরে ফেলার কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হচ্ছে। ভারী শিল্পকারখানা থেকে আরম্ভ করে রকেট পরিচালনার মতো জটিল কাজগুলো তাকে দিয়ে করানোর মামলা যেখানে অগ্রাধিকার পাচ্ছে। এর ফলে কর্মসংস্থানের জ্যামিতি ঝুঁকির মুখে পড়তে যাচ্ছে ভেবে বিশেষজ্ঞরা যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। উন্নত ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্র বলে কথা নেই, সকলের ক্ষেত্রে ম্যানাসের মতো এজেন্টরা অর্থনৈতিক সাবলম্বনের নতুন দরোজা খুলে দেবে;—অন্যদিকে মানবসম্পদ ব্যবহারের ভাবনায় নতুনতর বিন্যাস নিয়ে আসার যজ্ঞ সরকারি ও অ-সরকারি পর্যায়ে অনিবার্য হতে থাকবে। নতুন শ্রমবিন্যাস কাজেই সামনে অনিবার্য বলে মত ঠুকছেন তাঁরা। ম্যানাসের মধ্য দিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজেকে হালনাগাদ করতে সক্ষম প্রযুক্তি, অর্থাৎ সেল্ফ অটোমেশনের নয়া দিগন্তে পা রাখবে বিশ্ব। মানব প্রজাতির জন্য যেটি প্রতিদ্বন্দ্বীতায় পূর্ণ এক বিশ্বের ছবি তুলে ধরছে। যন্ত্রে সচেতন মন সৃষ্টির যে-নিদান মার্ভিন মিনস্কি তাঁর The Society of Mind বইয়ে দিয়েছিলেন, আগামী বিশ্ব কি তাহলে সেদিকে পা বাড়াচ্ছে? প্রশ্নটি উঠতে শুরু করেছে ইতোমধ্যে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নতুন উদ্যোগ সফল করতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি কৌশলকে এআই হাব তৈরির প্রয়াস বললে হয়তো ভুল হয় না। চলমান বছরের মার্চে এর পরীক্ষামূলক সংস্করণ বাজারে এনেছে চীন। ঢেঁড়া পিটিয়ে সারা বিশ্বের জন্য তাকে উন্মুক্ত ও বহুমুখীন করতে আরো কিছুদিন লাগবে মনে হচ্ছে। ম্যানাস আপাতত ক্লোজড বেটা পর্যায়ে অবমুক্ত সংস্করণের আওতায় পরীক্ষাধীন রয়েছে। এজেন্ট তৈরিতে ব্যবহৃত কোডগুলিকে যাচাই ও পুনর্বিক্রয় সাইটগুলোয় বেশ চড়া মূল্যে তালিকাভুক্ত করার প্রবণতা নজরে পড়ছে বেশ! এজেন্টকে কার্যকর করতে সি++ ও লিস্পকে প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। সহজ সিনট্যাক্স আর সমৃদ্ধ লাইব্রেরির জন্য জনপ্রিয় পাইথন তো আছেই! সব মিলিয়ে শক্তপোক্ত অ্যালগরিদম ও কম্পিউটিং সক্ষমতা তার থাকছে ধরা যায়।
ম্যানাসের নকশায় চীনা প্রযুক্তিবিদকে সৃজনশীল ভাবনায় তাড়িত ও উদ্দীপ্ত মনে হয়েছে। মানব মস্তিষ্ক যেভাবে সচরাচর কাজ করে, ম্যানাস তৈরির ক্ষেত্রে একে তাঁরা ভালোই আমলে নিয়েছেন। চ্যাটজিপিটির সহযোগী অ্যাপস হিসেবে ওপেন এআই প্রায় শতাধিক এআই এজেন্ট বাজারে এনেছিল। ল্যাঙ্গুয়েজ বেসড আর্কিটেকচার যেখানে অ্যাপস ভেদে ভিন্ন ও পৃথক পদ্ধতিতে কাজ করে থাকে। চীনা প্রযুক্তিবিদরা এরকম এআই এজেন্টগুলাকে ম্যানাসে সরাসরি জুড়ে নিয়েছেন। এর ফলে একটি নেটওয়ার্ক হাব-এর অধীনে নিজেকে সে সক্রিয় রাখতে পারছে। আলাদা করে সার্চ অ্যালগরিদম নিয়ে কাজ করার ঝামেলা থাকছে না।
মানুষ যখন কোনো ব্যাপারে তার সাহায্য চাইবে, সে তখন সরাসরি তার নেটওয়ার্কে সংযুক্ত অন্য এআই এজেন্টগুলোকে ব্যবহার করতে থাকবে। তাকে সহায়তা দিতে পেছন থেকে মানব নির্ভর প্লাটফর্মে সংযুক্ত রাখার প্রয়োজন হ্রাস পাবে। গুগল-এর মতো অ্যাপসের জন্য ম্যানাস এদিক থেকে চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠবে। জিপিটি বা ডিপসিক যে-মাত্রায় গুগলকে ব্যবহার করে, ম্যানাসে সেটি অপরিহার্য হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলা চলে। কারণ, তথ্য অনুসন্ধান থেকে আরম্ভ করে রকমারি কাজগুলো তার নকশায় সংযুক্ত এআই এজেন্টদের সাহায্যে সে অনায়াস করে নিতে পারছে।
এখন একে নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হবে মানুষের জন্য! এমন সব কাণ্ড সে ঘটিয়ে বসতে পারে যেটি বিশ্ব জুড়ে বিশৃঙ্খলাকে হয়তো ব্যাপক করে তুলবে সামনে। গুজব ছড়ানোর কাজে তাকে ব্যবহার করা হলে, তাতে কীভাবে রাশ টানবে কোম্পানি? এসব কারণে অনেকে আগাম মত ঠুকছেন,—ম্যানাসের কারণে পেশা ও জীবিকায় হুমকি প্রবল হবে দিনদিন। একাধিক পেশায় কাজের ধরন স্বয়ংক্রিয় হয়ে পড়ায় মানবসম্পদ ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে আসবে। কায়িক শ্রম নির্ভর প্রচুর পেশা রয়েছে যেখানে মানুষের পরিবর্তে ম্যানাসচালিত রোবট জায়গা নিতে পারে। বিপুল এই জনসংখ্যাকে কীভাবে বিকল্প উপায়ে বঁচিয়ে রাখা সম্ভব, সেটি নিয়ে ভাবনা জরুরি হবে তখন।
ডেটা বা তথ্যের গোপনীয়তা বজায় রাখা মোটেও সহজ হবে না। তার ওপর কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি ও শাসনব্যবস্থার বাড়বাড়ন্ত ঘটার সম্ভাবনা থাকছে। গণতান্ত্রিক পথে জবাবদিহিতার সংস্কৃতিকে যেটি ধ্বংস করে দিতেও পারে। সর্বত্র সেন্সর ও এআই নজরদারির কাজে ম্যানাসকে শাসকগোষ্ঠী ব্যবহার করবে তা একপ্রকার নিশ্চিত বলা যায়।
সাইবার নিরাপত্তা অধিকতর নাজুক হবে সামনে। হ্যাকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এজেন্টকে বাজে কাজে লাগানোর সম্ভাবনা প্রতিরোধ করার সমস্যাটি মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মামলা নতুন করে ঢেলে সাজানো ছাড়া উপায় থাবে না তখন। সর্বোপরি, নৈতিক দ্বন্দ্ব অচিরে তীব্র হতে থাকবে। এআই নিজে সিদ্ধান্ত নিলে নৈতিকতা ও মানবিক অধিকারের জায়গা কতটা কী থাকছে, এই প্রশ্নটি সামনে চলে আসবে। তাকে এই ব্যাপারে ভাবনা করার সেখানে সবক কে বা কারা দেবেন? প্রশ্নটি প্রবল তর্ক বহাবে সমাজে। মানুষের সঙ্গে সেক্ষেত্রে তার সংঘাত কোথায় গিয়ে ঠেকতে পারে তার আগাম অনুমান এই মুহূর্তে কঠিন।
সেইসঙ্গে একথা মিথ্যে নয়,—আগামী বিশ্ব স্লাভয় জিজেক ও ইয়ানিস ভারোফাকিসের সতর্কবাণী উপেক্ষা করে প্রযুক্তি-সামন্তবাদের গর্তে পা দিতে চলেছে। পুঁজিবাদের খোলনলচে পালটে দেওয়া পালাবদলের তোড়ে মানব প্রজাতি হয়তো মধ্যযুগে প্রচলিত সামন্তপ্রভু ও তার হয়ে কামলাখাটা মানুষজনে বিভক্ত সমাজে প্রবেশ করবে পুনরায়! যদি না বহুজাতিক কোম্পানির শিরদাঁড়া ভেঙে দিতে প্রযুক্তির ব্যাপক ও উন্মুক্ত পরিসর এখন থেকে গড়ে উঠতে থাকে।
. . .
. . .