. . .
খালেদ মুহিউদ্দীন মনে হয় ঠিকানার ব্যানারে নয়া আঙ্গিকের পডকাস্ট নিয়া আসতেছেন হাসান। এতদিন প্রশ্ন করছেন, আগামীতেও করবেন, তার মধ্যে নিজের জায়গা থেকে সংযুক্ত করবেন নিজকথা। মন্দ না। আইডিয়াটা ভালো। দেশে এই মুহূর্তে প্রবাস থেকে যারা ইউটিউবে সক্রিয় উনারা বেশ সৃজনশীল। গণমাধ্যম তো কিছু নাই দেশে। সবগুলা পটল তুলছে জাস্ট তিন মাসের ভিত্রে। একাত্তর এখন আগের একাত্তরের ছায়া। যমুনা, চ্যানেল 24, সময়… সবগুলার হালত খারাপ। যাই হোক, জাভেদের কী মত? উনার স্যাটায়ার মিশ্রিত এবং কথা কি নেওয়া যাইতে পারে? নাকি প্রশ্ন তোলার জায়গা থেকেই যাইতেছে…?
. . .
ভালোই হবে মনে হচ্ছে, তবে আমার কাছে উনার স্যাটায়ার কেমন যেন রসকষহীন লাগে। প্রথম পর্বে জমাইতে পারেননি মনে হচ্ছে।
হ্যাঁ, এইটা আমারও মনে হইছে হাসান। খালেদ এতদিন যে-ভঙ্গিতে প্রশ্ন করতেন এখানে সেই টোনটা চলে আসায় জমেও জমতেছে না যেন। তবে স্যাটায়ারে ফ্যাক্ট ধরে খোঁচা উনি দিছেন, প্রশ্নও রাখছেন, কিন্তু ফ্যাক্টগুলার ভিত্রে উনি ঢোকেন নাই, ঢুকতে পারেন নাই। আমরা তো একসময় ফয়েজ আহমেদের মধ্যরাত্রের অশ্বারোহীর মতো বিদ্রুপের হুলমাখানো জীবন-অভিজ্ঞতার নির্যাস নিয়মিত বিচিত্রায় পড়ে বড়ো হইছি। সাপ্তাহিক সন্ধানীতে শফিক রেহমানের যায় যায় দিন ও পরে উনার সম্পাদিত সাপ্তাহিক যায় যায় দিন-এ দিনের পর দিন শিরোনামে ডেলি ইস্যু নিয়া মঈন-মিলার পরকীয়াঘন ফোনালাপে রাজনীতির আগাপাশতলা উন্মোচিত হইতে দেখছি। খালেদকে ওই মানে যাইতে হলে বিস্তর পথ পাড়ি দিতে হবে।
উনি ভালো খোঁচাইতে পারেন, যদিও সেখানে উত্তরদাত্তাকে আগে বিশেষ স্কোপ দিতেন না, ইদানীং ধৈর্য দেখান অবশ্য। তবে আরো গভীরে ঢুকতে না পারলে ফ্যাক্ট থেকে চটকদার কিছু বাহির হয়, দর্শকের বোধোদয় ঘটে বইলা মনে হয় না। তারপরেও উনি অন্যদের তুলনায় আগাইয়া আছেন নানা কারণে। দেখা যাক কতদূর যাইতে পারেন।
আর হ্যাঁ, আবু সাঈদসহ হাসিনা ইস্যুতে উনার স্যাটায়ার বিরক্তিকর মনে হইছে। ট্রাম্পকে পরিহাস করা যাইতে পারে কিন্তু মনে হইতেছে উনার এই ব্যাপারে স্টাডি এখনো ডিপে যায় নাই। স্যাটায়ার করতে গেলেও তথ্য ফালাফালা করতে না পালে বেশিদিন বাকোয়াজি করে পার পাবেন না। সাংবাদিকদের পড়াশোনায় এখন ঘাটতি ব্যাপক।
ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দামের সাক্ষাৎকার নিতে গিয়া খালেদ মুহিউদ্দীনের ভিন্নমাত্রিক যে-অভিজ্ঞতা হইছে, যে- সকল উপলব্ধি হইছে, তারই অন্যরকম একটা বিস্ফার হইতেছে আজকের পডকাস্ট। অনেকটা আত্মকথোপকথন ধরনের বলা যায়। এই সরকারের আমলে মুক্ত-সাংবাদিকতার জায়গা যে আসলে বেশি নাই সেটা তিনি বুঝে গেছেন এক ধাক্কায়। যদিও সরাসরি সরকারের বিরুদ্ধে যান নাই, দোষ চাপাচ্ছেন সমন্বয়কদের ওপর, তারপরেও সরকারের ওপর ক্ষোভটা চাপা থাকে নাই, বের হয়ে আসছে। এই ক্ষোভ প্রকাশের উছিলায় শুরুতে যে-ভূমিকা টানছেন, সেখানে আওয়ামী রাজনীতি, হাসিনার কাণ্ডকীর্তি নিয়া ঝাড়তে হইছে উনাকে। কিছুক্ষেত্রে একপাক্ষিক ও বিদ্বেষপরায়ণ মনে হইছে, আবার কিছুক্ষেত্রে যৌক্তিক।
মানসিক অস্থিরতার জায়গা থেকে মুক্ত থাকা আসলে অনেক কঠিন। তবে খালেদ মুহিউদ্দীনের সুবিধা হইল দেশের বাইরে থেকে কাজ করেন। সুযোগ আছে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখার। চিহ্নিত হয়ে যাওয়ার ভয়ে গুটিয়ে যাওয়ার চেয়ে নিজের মতামত বলিষ্ঠভাবে তুলে ধরার সুযোগ তাঁর আছে। এখন সামনের দিনগুলিতে কী ভূমিকা রাখেন সেটা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
. . .
উচিত কথা কইত নারি খালেদ মুহিউদ্দীন ও আমাদের মতিভ্রম
হাসিনার পতন ও তৎপরবর্তী ঘটনাগুলা নিয়া উনার স্যাটায়ার পুরাটাই রাবিশ হইছে। বেসিক পয়েন্টগুলা উনার মতো পপুলার জার্নালিস্টের গোনায় না নিয়া স্যাটায়ারে যাওয়াটা সস্তা কাজ হইছে। শুনে মনে হইতেছিল জেনারেল ওয়াকার উনাকে সব বলে দিছে আর উনি এখন মজা নিতেছেন। বিরক্তিকর। খুবই বিরক্তিকর!
আপনার এই কথাগুলা হাসানকে খানিকটা ভিন্নস্বরে একটু আগে বলতেছিলাম জাভেদ। আওয়ামী জামানার একটা পর্যায়ে এসে খালেদ মুহিউদ্দীনকে আমি শোনা বাদ দিয়া দিছিলাম। তার দুটো কারণ ছিল তখন, এক. উনি খোঁচা দিয়া প্রশ্ন করতেন ঠিক আছে, কিন্তু যে-লোক উত্তর দিতে যাবে তার মুখের কথা কেড়ে নিয়া পাল্টা প্রশ্নে চলে যাইতেন। এইটা আমার ভালো লাগে নাই। দুই. প্রশ্নের মধ্যে ফ্যাক্ট থাকলেও ডেপথের অভাব শেষের দিকে পীড়াদায়ক মনে হইত। হাসিনাপতনের পর উনার প্রশ্নের ধরন, খোঁচা দিয়া কথা বাহির করার কায়দা আগের মতোই আছে, তবে উত্তরদাতার আনসার শোনার ধৈর্যটা বাড়াইতে পারছেন উনি। এইটা ভালো দিক।
উচিত কথা র ব্যানারে পঁচিশ মিনিট ধরে উনি কথা বলছেন। হাসানের অবজারভেশন সঠিক, হুল ফুটাইতেছেন কিন্তু সেই পরিমাণ রস না থাকায় শোনার ধৈর্য বেশিক্ষণ থাকে না। আমার ক্লান্তি লাগতেছিল শুনতে। আশা করি এই দিকটা নিয়া উনি ভাববেন। স্টুডিও সেটআপ অনুষ্ঠানের ধরন বিবেচনঅয় অন্যরকম হইতে পারত। খালেদের জেশ্চারেও কিছু চেঞ্জ আনা লাগবে। অন্যথায় জমাইতে পারবেন না।
যাই হোক, এবার মূল প্রসঙ্গে আসি। হাসিনাকে হুল মারছেন তাতে অসুবিধা নাই, মারতেই পারেন। কিন্তু উনি যেভাবে লঘু করলেন পুরা ব্যাপারটা তাতে জিনিসটা স্ক্রিপ্টেড মনে হইছে আমার। ঠিকানাপার্টি আগেই সেট করে দিছে, পয়লা হাসিনারে একচোট ঝাড়বেন আপনি। পিনাকী স্টাইলে ঝাড়বেন। তারপর ইউনূস সরকারকে খোঁচাইবেন। এমনভাবে খোঁচাইবেন যেন সমন্বয়ক ও ছাত্রশক্তিগুলারে কিছুটা হইলেও পচানো যায়। সুযোগে ইউনূস সরকারের বাকি যারা আছেন, তাদেরকেও অম্লমধুর পুলটিশটা দিবেন। বোঝাই যাইতেছে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দামের সঙ্গে আলাপ আপত্তির মুখে করতে না পারার প্রব্লেম থেকে উচিত কথার ভাবনায় গেছেন উনারা।
ভিউব্যবসা এখানে বড়ো ফ্যাক্টর জাভেদ। আপনারা ফলো করছেন কিনা জানি না, ঠিকানায় খালেদ এ-পর্যন্ত যতগুলা টকশো করছেন তার মধ্যে জামায়াতে ইসলামির আমিরের সঙ্গে করা অনুষ্ঠানটা সবচেয়ে বেশি ভিউ পাইছে। ম্যাসিভ হিট বলতে পারেন। সাদ্দামের সঙ্গে করতে পারলে ওইটাও বড়োসড়ো হিট পাইত। সো বিজনেস ম্যাটারস। খালেদ এখানে আপস করতে বাধ্য।
হাসিনার পতন ও তৎপরবর্তী ঘটনাগুলা নিয়া উনার স্যাটায়ার পুরাটাই রাবিশ হইছে। উনি ক্যামনে কনফার্ম হইলেন যে হাসিনা ভাগা দিছে। সত্যি ভাগা দিছে নাকি ভাগা দিতে বাধ্য ছিল, না দিলে কী হইতে পারত… বেসিক পয়েন্টগুলা উনার মতো পপুলার জার্নালিস্টের গোনায় না নিয়া স্যাটায়ারে যাওয়াটা সস্তা কাজ হইছে। শুনে মনে হইতেছিল জেনারেল ওয়াকার উনাকে সব বলে দিছে আর উনি এখন মজা নিতেছেন। বিরক্তিকর। খুবই বিরক্তিকর!
আবু সাঈদের জায়গাটা তো সিম্পলি রাবিশ লাগল শুনে। আরে ভাই, সে কে, কী তার পরিচয়, কীভাবে মারা হইছে তাকে, এগুলা নিয়া ফ্যাক্ট ধরে অনেকে কথা বলছে, পরিষ্কার যুক্তিও তুলে ধরছে, আপনি সেগুলা বিবেচনায় রাখবেন না? নির্মোহ সাংবাদিক যদি হয়ে থাকেন তাইলে আপনি তারে শহিদ ভেবে গদগদ হওয়ার তো কারণ নাই। আবু জোহাকে কোট করছে বইলা কি তার মারা যাওয়ার নেপথ্যের ফ্যাক্টগুলা বেহুদা হয়ে গেল। যদি হয়ে থাকে, আপনি সেইটা যুক্তি দিয়া প্রমাণ করেন, তারপর এগুলা যারা হাজির করতেছে তাদেরকে ঝাড়েন আচ্ছামতোন। এই জায়গায় উনাকে আমার আবাল লাগল শুনে।! বোঝা যাইতেছে, উনার সেই হ্যাডম নাই যে সকলের সামনে এসে এসব ডিসেকশন করবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধা করে উনি রায় দিয়া দিলেন। যেন চায়ের স্টলে বসে আমরা যেমন করি আর কি, যারে যা ইচ্ছা বলি, উনি এখন চাস্টলে বসে স্যাটায়ার মারাইতেছেন! প্রথমবার ক্ষমতায় আসা ট্রাম্প আর এবারের ট্রাম্প এক বিষয় নাহে জনাব খালেদ মুহিউদ্দীন। এবার আপনার ওই আস্ত পশ্চিমা গণমাধ্যম তারে সিরিয়াস কেস হিসেবে নিতে বাধ্য হইছে। প্রথমবার যারা তারে জোকার সাজাইছিল এবার তারাই ট্রাম্পের সিগনিফিকেন্সকে নানা মাত্রায় বোঝার তালে আছে। যেভাবে এবারের ইলেকশন জিতছে সেইটা হুদা হাইপ তুলে জেতা যায় না। পপুলার ভোটে দলকে জিতাইছে, ইলেকটোরাল জিতছে, নিম্নকক্ষেও জিতছে। কমলা সুবিধা করতে পারেন নাই কোনোখানে। ট্রাম্পু মামার এবারের শোডাউনের বৈশ্বিক তাৎপর্য বিচারে সামনে অনেক বেশি মারাত্মক হইতে থাকবে। আমলে না নিলে পস্তাইবেন।
এই ট্রাম্পের হোমওয়ার্ক অনেক পাক্কা। পেছনে তার পরিবারের লোকজনের অবদান আছে। ভাইস প্রেসিডেন্ট জি ডি ভান্স হওয়ার কথা। যদি হয় তাইলে উনাকে গোনায় রাখেন। পরিস্থিতি যদি নাটকীয়ভাবে খারাপ মোড় না নেয় বা এমন কোনো মিসটেক ট্রাম্প সরকার করে বসে যার জন্য দলকে সামনে ভুগতে হইতেছে,- ওসব কিছু না ঘটলে এইটা লিখে রাখতে পারেন,- পরবর্তী মার্কিন নির্বাচনে রিপাবলিকানের হয়ে ভান্স বাজিমাত করবে।
খালেদ মুহিউদ্দীন কি ট্রাম্পের পেছনে পুরা ইলেকশন জুড়ে সক্রিয় PBD Podcast দেখেন নাই? ইলেকশনের হপ্তা দুই আগে ট্রাম্পের সঙ্গে প্যাট্রিক বেট-ডেভিডের প্রায় দেড় ঘণ্টার আলাপটা উনার চোখে পড়ে নাই? এই পডকাস্টে খুব পরিষ্কারভাবে ট্রাম্পের ব্যক্তিত্বের গঠনটা আমরা ধরতে পারতেছি। যেইটা ট্রাম্পের প্রথমবার বিজয়ী হওয়ার আগে ন্যাশনাল জিয়োগ্রাফির তৈরি তথ্যচিত্র কিংবা নেটফ্লিক্সে তৈয়ার ডকুসিরিজে অতটা আসে নাই। সেখানে টাকা বানাইতে মরিয়া আর উপস্থিত বুদ্ধিতে প্রখর এক জোচ্চরকে পাইতেছি আমরা। সে ক্যাপিটালিস্ট। পায়ের নখ হইতে মাথার চুল পর্যন্ত ক্যাপিটালিস্ট। আবার সে তীব্র আম্রিকান। যেইটা ওইসময়, যখন তারে কেউ চিনত না তখন থেকে তার মধ্যে ছিল।
আর্লি জামানায় এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট নিক্সনের বউয়ের সঙ্গে ট্রাম্পের মোলাকাত হইছিল। সেখানে উনি অন্যদের বলছিলেন,- এই ছেলেটা একদিন হোয়াইটহাউজে গিয়া বসবে। নিক্সন তাঁকে বেশ পরে ঘটনাটি নিজ মুখে বলছেনও। তো বুঝে নেন, সে যখন কিছু না, কেবল টাকা বানানো আর নেমফেমের ধান্ধায় রেসলিংয়ের কমেন্ট্রি দিতেও রাজি, তখনো তার মধ্যে ইন ফিউচার প্রেসিডেন্ট হওয়ার বীজ নিহিত ছিল। সেইটা ধরে আগাইছে। আম্রিকার সবটাই তার নখদর্পণে। এইটা মার্ক করা প্রয়োজন।
এবং, তার এই কথা, আমি যুদ্ধ করতে আসি নাই, বন্ধ করতে আসছি;- স্রেফ পলিটিক্যাল রেটোরিক ভাইবেন না। এইটা দেশভিত্তিক নয়াজাতীয়তাবাদের জায়গা থেকে সে ভাবতেছে। নিজে শক্তিশালী হও আগে, তারপর অন্য শক্তিশালী দেশগুলার সঙ্গে মিলে Oligarchical Nationalism-এ আমরা যাবো। পৃথিবীর কর্তৃত্ব এভাবে একটা গোষ্ঠীভিত্তিক দেশীয় জাতীয়তাবাদের আবরণে আমাদের হাতেই থাকতেছে তখন।
যাই হোক, পডকাস্টে আমেরিকাসহ পুরা বিশ্বকে নিয়া সে কীভাবে আগাইতে ইচ্ছুক তার পরিষ্কার চিত্র ট্রাম্প তুলে ধরছেন। ডিপ স্টেটকে পয়লাই অন্য দেশে ছায়া সরকার বসানোর শয়তানি খেলা বইলা নাকচ করছেন সেখানে। ট্রাম্পের বিদেশনীতি ডিপ স্টেটকে যে-চোখে দেখে সেইটা কমলা হ্যারিসদের পেছনে মার্কিন বিদেশনীতিকে প্রভাবিত করতে সক্রিয় জর্জ সোরস বা উনার পুত্র অ্যালেক্স সোরসদের থেকে ভিন্ন। ভাবুক কার্ল পপারের ভয়ানক ভক্ত জর্জ সোরস যেমন শেয়ার বাজার ম্যানিপুলেট করে টাকা বানাইতে ওস্তাদ ছিলেন, সেইসঙ্গে উনার উপ্রে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ছাপ গভীরভাবে সক্রিয়। বিশ্ব জুড়ে দেশের ভিতর দেশ, সরকারের ভিতর সরকার তৈরির মধ্য দিয়া নতুন হিটলার হওয়ার খোয়াবে তাঁকে আজো তাতায়।
জর্জ সোরস একইসঙ্গে মেধাবী, দূরদর্শী, ধূর্ত ও বিপজ্জনক এক ধাঁধা। ট্রাম্পের সঙ্গে উনার বিবাদ বহুদিনের পুরোনো। এবং সংগতকারণে সোরস বা সোরসপুত্র অ্যালেক্সের ডিপ স্টেট মিশনে তাঁর সায় নাই। ট্রাম্পের মতলব এখানে সকলের থেকে আলাদা। নাম্বার ওয়ান, আম্রিকার অটোমোবাইল সাম্রাজ্যকে পুনরায় শক্তিশালী করা। অটোমোবাইলের যে-বিরাট ফ্যাক্টরি আম্রিকা এখন মেক্সিকোয় শিফট করছে ও নিজের গাড়ি উৎপাদনের সক্ষমতা হারাইছে, ট্রাস্প সেইটা নিজ দেশে পুনরায় সক্রিয় করার মতলবে আছেন। ইলন মাস্ক যার মূল ভিত্তি। ইলনের ধান্ধা একটাই,- রকেট ও গাড়ির বাজারে মার্কিনের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ফেরত আনা।
নাম্বার টু, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে ডিল সেটলড করা। নাম্বার থ্রি, ইরানকে টাইট দেওয়া ও ইসরায়েলকে লাইনে রাখা। নাম্বার ফোর, চীনসহ বাকি যারা মার্কিন বাজারে আছেন উনাদের উপ্রে ট্যারিফ বাড়ানো, যেন দেশের কলকারখানা পুনরায় গতিশীল হইতে পারে ও কাজের ক্ষেত্র তৈরি হয়। নাম্বার ফাইভ, অভিবাসীর প্রশ্নে আম্রিকা আগে দেখবে এখানে ড্রাগ লর্ডসদের কোনো ধান্ধা আর সন্ত্রাসীরা ঢুকতেছে কিনা, সেইটা যদি কন্ট্রোল করতে পারে তাহলে দেশ বুঝে অভিবাসন বাড়াবে ও কমাবে।
এবং, তার এই কথা, আমি যুদ্ধ করতে আসি নাই, বন্ধ করতে আসছি;- স্রেফ পলিটিক্যাল রেটোরিক ভাইবেন না। এইটা দেশভিত্তিক নয়াজাতীয়তাবাদের জায়গা থেকে সে ভাবতেছে। নিজে শক্তিশালী হও আগে, তারপর অন্য শক্তিশালী দেশগুলার সঙ্গে মিলে Oligarchical Nationalism-এ আমরা যাবো। পৃথিবীর কর্তৃত্ব এভাবে একটা গোষ্ঠীভিত্তিক দেশীয় জাতীয়তাবাদের আবরণে আমাদের হাতেই থাকতেছে তখন। এখানে প্রব্লেম হইতেছে চীন, যার সঙ্গে ট্রাম্প এই টর্মেও ঝামেলা করবে। ভারত ও রাশিয়ার মধ্যস্থতা হয়তো থাকবে সেখানে।
বিশ্ব পরিস্থিতি ট্রাম্পের পাল্লায় পড়ে এবার নয়া মোড় নিতে পারে। এখন সেইটা কতটা ভালো অথবা জঘন্য… এর জন্য আমাদের ওয়েট করতে হইতেছে। তবে হ্যাঁ, এইটা ঠিক, সৌদি আরবসহ অন্য আরব রাষ্ট্রের সঙ্গে ট্রাম্পের নেগোসিয়েশন নতুন মাত্রায় উপনীত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও ফিলিস্তিন ইস্যুর সুরাহা হবে না। উল্টা হামাস ও হিজবুল্লাহর জন্য কঠিন সময় অপেক্ষা করতেছে। মুসলমানরা নিজের দিমাগ যদি না খাটান, পরিবর্তীত বিশ্বে ক্রমাগত বলদা এক সম্প্রদায়রূপে বিপুল বাচ্চা পয়দা করার ক্ষমতা নিয়া গর্বিত থাকেন, বলতে বাধ্য হইতেছি,- বিপুল বাচ্চাকাচ্চা নিয়াও উনারা নিষ্প্রভ আর গুরুত্বহীন হইতে থাকবেন। যেমন গুরুত্বহীন হবে ফরহাদ-এবাদ গংয়ের সাজানো খেলাফতে বাংলা। সামনের পৃথিবীতে এসবের বেইল নাই।
. . .
. . .