মার্কিন কবি রবার্ট ফ্রস্টের দ্য রোড নট ট্যাকেন ভীষণ নির্দয় একখান কবিতা। ওভারসিম্পল কবিতা কতটা মর্মান্তিক হইতে পারে সেইটা ফ্রস্টের বহুলপঠিত কবিতাখানা পড়লে টের পাওয়া যায়। কবিতাটি একসময় স্কুলপাঠ্য ছিল মনে পড়ে। আমরা পড়েছি। মুখস্থও করেছি কিছু না-বুঝে। রবার্ট ফ্রস্টের নাম সেই সুবাদে মনে গেঁথে গিয়েছিল। কলেজ লাইফে শামসুর রাহমানের ঘাড়ে চেপে উনি ফেরত আসেন পুনরায়। ফ্রস্টের বেশ কিছু কবিতা রাহমানের তর্জমায় হাতে আসছিল তখন। বিধ্বস্ত নীলিমা-র কবি অবশ্য ষাটের দশকের গোড়ায় কবিতাগুলা তর্জমা করছিলেন। বই আকারে সম্ভবত বাহির হয়। মাঝখানে কোনো প্রিন্ট ছিল না। বাংলা একাডেমি অথবা অন্য কোনো প্রকাশনীর সুবাদে মার্কিন কবিবর পুনরায় আমাদের কাছে ফেরত আসেন।
যাই হোক, ফ্রস্টের মতো বড়ো কবির বাছাই অনুবাদ দুরূহ কাজ। কোনটা রেখে কোনটা বাদ দিবেন সেই গাড্ডায় পড়তে হয়। এদিক থেকে শামসুর রাহমানের বাছাই ও ভাষান্তর বেশ মনকাড়া ছিল। দ্য রোড নট ট্যাকেন কবিতাটি অটোচয়েস হিসেবে ঠাঁই নিয়েছিল তর্জমায়। রবার্ট ফ্রস্টের একাধিক কবিতা, যতদূর মনে পড়তেছে, মাত্রাবৃত্তে বেঁধে তর্জমা করেছিলেন রাহমান। দ্য রোড নট ট্যাকেন যার মধ্যে অন্যতম। আমি ছন্দ ভালো বুঝি না। কবিতা লেখার প্রতিভা নাই;- ছন্দ দিয়া মোর কী কাম! ওসব কবিতা যারা লেখেন উনাদের নিগূঢ় ব্যাপার-স্যাপার। আমরা হইতেছি পাঠক। কবিতা পাঠ করতে বসে যদি ফিল পাওয়া যায় তাতেই খুশি। শামসুর রাহমানের তর্জমায় ওই টেস্টটা ছিল।
রবার্ট ফ্রস্টের বহুলপঠিত কবিতার শিরোনাম রাহমান দিয়েছিলেন,- যে পথে হয়নি যাওয়া। শুনতে বেশ গীতল লাগে কানে। মনে রোমন্থন টোকা দিয়া যায়। স্মৃতিকাতর হইতে ইচ্ছা করে তাৎক্ষণিক। ইংরেজি থেকে বাংলায় আসার পথে কবিতা-হেডিংয়ের এই কোমল রূপান্তর তখন মন কাড়ছিল। এখন যেমন মনে হইতেছে,- রাহমান অতটা গীতল না হইলে ভালো করতেন। কবিতা-পঙক্তিগুলার তর্জমায় আমার ব্যক্তিগত বিবেচনায় উনি হইতেছেন বেস্ট। অন্য যারা করছেন, আমার চোখে যেটুকু পড়ছে, কেন জানি ভালো লাগে নাই। ফিল পাইতে অসুবিধা হইছে। মূলরস বজায় রেখে তর্জমা চাট্টিখানা কথা না। শামসুর রাহমান সেখানে উতরে গেছেন অনেকটাই।
যুবাবয়সে কবিতাখানা পড়ার সুবাদে সৃষ্ট মুগ্ধতার জায়গা হইতে দারুণ শব্দটি এখানে ব্যবহার করতেছি। বুড্ডাকালে আচমকা ফ্রস্টের এই কবিতা মনে উদিত হইছে দেখে আমি নিজে কিছুটা তাজ্জব আছি। শালার মগজ! মগজধারী মানুষ! কোথা থেকে কী ইয়াদ বিলায় তার ঠিকানা নাই! রবার্ট ফ্রস্টকে অবশ্য মাঝেমধ্যে মনে পড়ত। নিবিড়পাঠ ছাড়াই মস্তিষ্কের আন্ধার ঘরে উনি টিকে ছিলেন। বড়ো কারণ বাল্যকাল। ওই স্কুলজীবন! আর ইংরেজির শিক্ষক দরছ আলী। হেডমাস্টর হইলেও স্যার ক্লাসে ইংরেজি পড়াইতেন। দেশে মাস্টারিতে যোগদানের আগে লন্ডনে থাকায় উনার ইংরেজির ধরতাই চোস্ত ছিল। ভালো বুঝিয়ে দিতেন কোন কবিতার কী মানে। ফ্রস্টের কবিতা স্যারের চাপে তখন মুখস্থ করছি আমরা।
বোঝা গেল, বাল্যকাল মস্তিষ্কে স্থায়ী সঞ্চারী। মুরব্বিরা এজন্য বোধহয় বইলা থাকেন,- মানুষ বালেগ হওয়ার পথে তার মানসগঠন পুরা হয়ে যায়। যত বড়ো হইতে থাকে, এবং সেখান থেকে বুড়াকালে পৌঁছায়, লম্বা জার্নিতে রং আর চুনকাম চলে কেবল,- তার বেশি কিছু যোগ হয় না। বুড্ডা হওয়ার পথে ফেরত আসে স্থায়ী সঞ্চারী বাল্যকাল। উড়ে আসে যুবাকালের টুটাফাটা পারিন্দারা। সুগায়ক কৈলাশ খেরের গানখানার মতো : টুটা টুটা এক পারিন্দা অ্যায়সে টুটা/ ক্যা ফের জুড়না পায়ি/ লুটা লুটা কিসনে উসকো অ্যায়সে লুটা/ ক্যা ফির উড়না পায়ি। হায় জীবন! হায় মানবজনম! তারশঙ্করের কবি-র মতো বলতে ইচ্ছা করে,- এই খেদ মোর মনে/ ভালবেসে মিটল না আশ- কুলাল না এ জীবনে।/ হায়, জীবন এত ছোট কেনে?/ এ ভুবনে?
তো ফ্রস্টের যে-পথে হয়নি যাওয়া কবিতাখানা লুট হওয়া পারিন্দার মতো মস্তকে পাক খাইতেছে। ডানাভাঙা পাখির মতো ঘুরিতেছে বেদনার শেষ অভিজ্ঞান বক্ষে নিয়া। এবং যে-কবির সন্দেশ পাখি নিয়া আসতেছে তিনি আর সেই কবিটি নাই। বাল্য বা যুবাকালে চোখের সামনে ভাসতে থাকা বিষাদগ্রস্ত সুস্থির কবিবরকে পাইতেছি না বিলকুল। ত্যক্ত লাগতেছে তারে দেখে। কবি যেন টুটা পারিন্দা;- দুইটা পথের সন্ধিস্থলে খাড়াইয়া আছেন। সিদ্ধান্ত নিতে নাচার,- কোনটা বেছে নিলে জীবনে অনিশ্চয়তার টেনশন খানিক প্রশমিত হইতে পারে।
Poetry Foundation-এর সাইটে ফ্রস্টের বহুলপঠিত কবিতখানা অনেকদিন বাদে পাঠ করতে বসে পৃথক অভিজ্ঞতা হইতেছে এখন। বাল্যকালে এই কবিতার ইনার বিউটির কিছু মাথায় ঢোকে নাই। যে-কনফিউশন কবি হাজির করছেন সেখানে তার দাড়াদিশা দরছ আলী স্যার বোঝানোর পরেও মাথায় আসলে ঢোকে নাই। যুবাকালে কবিতার পঙক্তিচরণ মন দখলে নিলেও কবি যে-সমস্যার অবতারণা করছেন, সেইটা নিয়া ভাবিত হওয়ার মতি ছিল না। এখন পড়তে বসে কবিতাটারে নির্দয় মনে হইতেছে। শামসুর রাহমানের বাংলা তর্জমার তুলনায় ইংরেজিটা অনেক ডিরেক্ট এবং সে-কারণে নির্দয় লাগে পাঠের পর।
বাংলা তর্জমায় কবিতাখানা খুব স্মুথ যাইতে থাকে। বিশ্বাস করেন, ভীষণ স্মুথ যাইতে থাকে রাহমানীয় তজর্মা। কানে ঝংকার দিয়া যায়। ফ্রস্ট কিন্তু প্রথম স্তবকে উনার প্রব্লেমটা পাঠককে বলে দিতেছেন। কবিতার সারমর্ম সিম্পল। হলুদে চোবানো বনপথ ধরে কবি যাইতেছিলেন। যাওয়ার এক পর্যায়ে উনাকে থামতে হয়, কারণ বন এখানে এসে দুটি পথে ভাগ হয়ে দুদিকপানে চলে গেছে। কবি ভাবতেছেন, শালার কপাল! উভয় পথে কিছু-না-কিছু দেখার আছে। দুই পথে ছড়ানো আছে জানা-আজানার রোমাঞ্চভরা অভিজ্ঞতার শিহরন। আমি তো একলা একটা মানু! ইচ্ছা করলেও দুইপথে যাইতে পারব না। ইধার নয়তো উধারে যাইতে হবে। যে-পথে বেশি লোক গেছে সেই পথটা আপাতত বাদ দিতে পারি বড়োজোর। কম জনচলাচল যে-পথে,- সেইটা বেছে নিতে পারি। কবি তাই করেন এবং লাস্ট লাইনে পাঞ্চটা ঢোকান। সে-আলাপে পরে আসতেছি। আরো কিছু কথা বাকি এখনো।
মানুষের জীবনকে আসলে টু-লেন রাস্তার মতো দেখতে লাগে। এক লেন দিয়া আমরা আসি আর বিদায় নেওয়ার সময় দ্বিতীয় লেনটা ধরে টা টা বাই বাই বলি বাকিদের। এখন যে-লেন দিয়া আসলাম, ইচ্ছা করলেও ওই লেন দিয়া বিদায় নেওয়ার চান্স নাই। মাতৃগর্ভ থেকে বাহির হওয়ার পর আমরা চাইলেও মায়ের গর্ভে আর ফেরত যাইতে পারি না। এই অভিমান থেকে হয়তো কবি আবুল হাসান জরায়ু কবিতায় আমায় তুই আনলি কেন ফিরিয়ে নে ইত্যাদি বলে মায়ের উপ্রে রাগ ঝাড়ছিলেন। মাটিমার্গে বায়ুমার্গে জলমার্গে যত গর্ভ আছে তার কোনো একটায় আইসা জীবন অস্ত যায়। দ্য রোড নট ট্যাকেন-এর কবি সেকথা ভেবে পেরেশান, এবং পেরেশান। কবিতার প্রথম স্তবকে লিখতেছেন :
Two roads diverged in a yellow wood,
And sorry I could not travel both
And be one traveler, long I stood
And looked down one as far as I could
To where it bent in the undergrowth;
দুই নাম্বার পঙক্তিটা এখানে আমলে নিতে মন চাইতেছে। কবিতার দ্বিতীয় লাইনে কবি ডিরেক্ট বলে দিতেছেন,- দুখের কথা কী আর কই, বাইছা নিতে হবে একটা পথ, দুইয়ের ভাই নাই সুযোগ। শামসুর রাহমান যেহেতু ইংরেজি থেকে বাংলায় নিয়া আসতেছেন, আমার মতো ইলাবোরেট করে বললে অখাদ্য শুনাবে কানে। কাজেই উনি বাংলা ভাষার নিয়ম মেনে লাইনটারে কোমল করে আনছেন,- একটি হলুদ বনে দু’টি পথ দু’দিকে বিস্তৃত,/ এবং দুঃখিত আমি পারি না উভয় পথে যেতে। রহমান হেনরী উনার তর্জমায় আনছেন এভাবে : হলুদ বনভূমি চিরে দুইখানা পথ, বিভাজিত, দু’দিক চলে গেছে,/ দুঃখ মনে : একলা আমি, দুই পথে আর যাই-বা কেমন করে!
দুজনেই বেশ ভালো তর্জমা করছেন, কিন্তু তবু কেন জানি মন ভরে না। তার কারণ ওই Sorry শব্দটার মধ্যে নিহিত। And sorry I could not travel both;- মার্কিন কবিবর কোনো অলঙ্কার জুড়তে রাজি না। কোনো সংগোপন মৃদুলতা বজায় রাখতে ঘোর অনিচ্ছুক। লাইনটা পড়ার পর মনে হইতে থাকে কবি আসলে নিজেকে নিয়া বিরক্ত ও বিচলিত। বায়বীয় মানব-অস্তিত্বের কথা ভেবে বিরক্ত। মনে প্রশ্নের ঝড়,- একটা মানুষ কেন দুইটা হইতে পারবে না? তার মন চাইলে কেন সে একসঙ্গে দুইটা পথে যাইতে পারে না?। ইংরেজিতে Annoyed বলতে আমরা যা বুঝি তার আভাস কবি যেন দিয়া যান কবিতার প্রথম স্তবকে।
বিরক্তি ও অসন্তুষ্টি দিয়া কিন্তু দ্য রোড নট ট্যাকেন কবিতার শুরুয়াত। পরবর্তী স্তবকগুলায় যোগ হইতেছে অতৃপ্ত হাহাকার। ফাঁদ থেকে বের হইতে কবি নিজেকে বোঝান,- দুইটা পথই ঝাক্কাস! একটা বেছে নিতে হবে তাঁকে। জনচলাচল যে-পথে অল্প, কবি সেইটা বেছে নিতেছেন। মনে অবশ্য সংশয়,- বেছে তো নিলাম ঠিক আছে,- ফেরত আসতে পারব তো? জুয়ার দান কবি খেলতেছেন এইবেলা। যে-পথে জনচলাচল আছে সেইটা তুলানমূলক নিশ্চিত ছিল তাঁর জন্য। জনবিরল পথ বেছে নেওয়ায় কপালে লক্ষ্মী জুটতে পারে, আবার ঝাঁটার বাড়িও বিচিত্র নহে। কুছ পাতা নাই কী আছে নসিবে!
শেষ স্তবকের শেষ দুই লাইনের তর্জমায় রহমান হেনরীকে ভাবানুবাদে গমন করতে দেখি। ধানখেতের প্রসঙ্গে টেনে ফ্রস্ট কী বুঝাইতে আকুল তার সুরাহা খুঁজছে উনি। ভুল খুঁজছে এমন না, তবে আমার ধারণা, কবিতার শেষ স্তবকে মার্কিন কবিবর জীবন নামের তামাশার কথা ভেবে রুষ্ট। উনার টোন থেকে যদিও সেইটা বোঝার উপায় থাকে না। মনে হবে সমাহিত জেনসাধক হাইকু না লিখে হাইকুর এসেন্স ঝাড়তেছেন কবিতায়। শেষ স্তবকে চোখ বোলানো যাইতে পারে একঝলক :
I shall be telling this with a sigh
Somewhere ages and ages hence:
Two roads diverged in a wood, and I—
I took the one less traveled by,
And that has made all the difference.
পড়ার পর মনে হইতে থাকে ঋষিসুলভ মার্কিন কবি হায় আমার নসিব বইলা কপাল থাবড়াইতেছেন। আমাদের এটুকু করার থাকে আসলে! এর বেশি কিছু করার জন্য আমরা তৈরি বা পারমিডেট না। অচেনা পথে গমনের ঝুঁকি ছাড়া জীবন স্থবির মহাজাতক। কলম্বাস যেমন ভাবছিল,- সে ভারতে চলে আসছে। পরে দেখে কী, আম্রিকা আবিষ্কার করে বসছে! মানবজীবন হইতেছে অনিশ্চয়তায় ভরা গোলকধাঁধা। আপাতদৃষ্টে নিশ্চিত জীবনের মধ্যে অনিশ্চয়তা হইতেছে এমন এক লহর যেটি আমাদের জুয়াড়ি বানাইছে।
I took the one less traveled by,/ And that has made all the difference.;- ফ্রস্ট যত সহজে উনার মাতৃভাষায় লাইন দুখান ডেলিভারি দিলেন, তর্জমায় ওই দুইটা লাইন পিক করা পাহাড় ঠেলার শামিল। ধকল সামাল দিতে রহমান হেনরী তর্জমা করছেন : কম-হাঁটা পথ অনায়াসে বাছলো যে-জন, হঠাৎ, নিমেষেই,/ এবং তাতেই ভিন্ন ফলন, এক জীবনের চর্চিত ধানক্ষেতে। মিনিংয়ের জায়গা হইতে ভুল তর্জমা উনি করে নাই। মানুষ যখন ভিন্নপথ বেছে নেয় তখন একটা কিছু পয়দা হয়। চেনাপথে ঘুরতে থাকলে পুনারাবৃত্তি ছাড়া কিছু জন্মে না। এদিক হইতে ভাবলে তর্জমা সঠিক। আমার বিবেচনায় রবার্ট ফ্রস্ট অন্যকিছু বুঝাইছেন এখানে। কম চলাচলের পথ বেছে নেওয়ার কারণে উনার সঙ্গে অন্যদের পার্থক্য তৈরি হইতেছে সেইটা ঠিক আছে, কিন্তু আসলে তৈরি হইছে অথবা হয় নাই তার ব্যাপারে কবির আত্মবিশ্বাসকে নড়বড়ে লাগে চোখে। নিজের আরেকখানা বিখ্যাত কবিতায় রবার্ট ফ্রস্ট জেনুসলভ সন্ন্যাসমন নিয়া লিখছিলেন :
Some say the world will end in fire,
Some say in ice.
From what I’ve tasted of desire
I hold with those who favor fire
মজার ব্যাপার হলো, ফ্রস্ট প্রায়শ তুলনা টানবেন, তুলনাকে লজিক দিয়া জাস্টিফাই করবেন,- এভাবে একটা রিডল বানানোর পর নিজের পক্ষপাত বইলা দিবেন পাঠককে। এর তাৎপর্য অনেক গভীর;- যদি ভাবি দিয়া মন। ঋষিসমতুল সন্ত কবি যেন আমাদের এইটা বুঝাইতে চান, দেখো চয়েজ ইজ লিমিটেড। ধা করে ফরেস্ট গাম্প ছবির সিনটা ইয়াদ হয় তখন!
ভিয়েতনাম যুদ্ধের নারকীয় অভিজ্ঞতা শেষে দেশফেরত হাবা হাসমত ফরেস্ট গাম্পকে পার্কের বেঞ্চে বসে এক রমণীর সঙ্গে আলাপে মগ্ন দেখা যায়। সেখানে সে তাকে বলা মায়ের কথাখান আরেকবার ইয়াদ করে,- Life is like a box of chocolates, you never know what you’re gonna get মানে সিম্পল,- আমার মা বলতেন, জীবন হইতেছে চকলেটের বাকশো, তুমি কিন্তু জানো না কোনটা তোমার কপালে জুটবে। রুশোর কুখ্যাত বচনে অগত্যা ফেরত যাইতে হয় আমাদের। সোশ্যাল কক্ট্যাক্ট-এ উনি বলছিল বটে,- মায়ের পেট থেকে যখন বাহির হও, তখন তুমি স্বাধীন, তারপর হইতে তোমার পায়ে শিকল। সুতরাং স্বাধীন ইচ্ছার আলাপ যারা করেন তারা অফ যাইতে পারেন। রবার্ট ফ্রস্টের দ্য রোড নট ট্যাকেন-এর এইটা হইতেছে সারকথা;- বাকিটা যার যেমন ইচ্ছা ভাবতে ক্ষতি নাই।
. . .
. . .