নেটালাপ - সাম্প্রতিক

ফারুকীনামায় ৩২ নাম্বার

. . .

মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ৩২ নাম্বার সংস্কার 

সাংস্কৃতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের পর মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নাকি বলছেন, উনার একটা বড়ো কাজ হবে ৩২ নাম্বার বাড়িটাকে সংস্কার করা। স্মৃতি-স্মারক ইত্যাদি যা পাওয়া যায় সেগুলা দিয়া জাদুঘর আবার চালু করা। আরো ভালো হয় যদি ড. ইউনূস বাড়িটায় ভিজিট করেন। তাইলে একটা সিগনিফিকেন্স তৈরি হইবে ইত্যাদি। কথাগুলা উনি কোথায় বলছেন তার কোনো অথেনটিক সোর্স পাইলাম না। যে-ভদ্রলোক শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগ নিয়া ফারুকীর অতীত ও বর্তমান বক্তব্য কোলাজ করে এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার দিছেন উনি সোর্স উল্লেখ করে নাই। যাই হোক, ৩২ নাম্বার তো পুরাটাই লুট হয়ে গেছে ভাই। এখন আপনি কী দিয়া জাদুঘর সাজাইবেন? ওরিজিনাল কিছুই তো আর নাই! যেইটা হবে সেইটা তো ফেইক জিনিস হবে। বুঝলাম না কিছু!

. . .

বঙ্গবন্ধুর বাড়ি প্রসঙ্গে রোকেয়া প্রাচী

৩২ নাম্বারকে সংস্কার জনাব মোস্তফা সরয়ার ফারুকী করতে পারবেন ঠিক আছে, কিন্তু ৩২ নাম্বারে গিয়া লাঞ্ছিত হওয়ার আগে রোকেয়া প্রাচী যে-কথাগুলা বলছিলেন সেইটা তো নির্মম সত্য। রক্তমাখা পাঞ্জাবি, টোব্যাকো পাইপসহ আরো শত স্মৃতি… উনি এখন সেগুলা কোনখানে পাবে ? রেপ্লিকা বানাইতে পারবে বড়োজোর। তাতে কি সেই ফিলটা মানুষ পাবে যেইটা এই বাড়ি ধারণ করে আসছে এতটা বছর!

Rokeya Prachy Source : Samakal News

. . .

৩২ নাম্বার নিয়ে ফারুকী যা বলেছেন সেই চিন্তা এখন উনি ধারণ করে কিনা সেটি আসলে দেখার বিষয়। সংস্কৃতি উপদেষ্টার চেয়া‌রে ব‌সে ৩২ নাম্বার সংস্কারের কথা বললে সমন্বয়করা লাফ দেবে। এখন সেটি ইগ‌নোর করার মতো কোমরের জোর কি ফারুকীর আছে? আমার সুযেগ থাকলে উনাকে বলতাম,- ৩২ যেমন আছে তেমন থাকাটাই উত্তম হবে। প্রজ‌ন্মের-পর-প্রজন্ম দেখবে, জেন‌-জি না‌মধারী ক‌তিপয় কুলাঙ্গার আমাদের সমাজে একটা সময় ছি‌ল, স্বাধীনতার স্থপ‌তি‌কে যারা ইতিহাস থেকে মুছে দিতে চেয়েছিল। ধ্বংসের নিদর্শন হিসেবে বা‌ড়িটা ওভাবেই থাকুক। ধ্বংসস্তূপটাই জাদুঘর করে রাখেন।

. . .

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী সাংস্কৃতিক উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণের ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে, সরকার সিলেটের আল হামরা মার্কেটের ফর্মুলা কাজে লাগাচ্ছে। বাংলাদেশে সবগুলো দলের লোক নিয়ে তারা আল হামরার ব্যবসায় হাত দিয়েছিলেন। দেশে যে-দলই ক্ষমতায় যাক, এতে করে ব্যবসায় লস খাওয়ার চান্স নাই। শুধু ফারুকী নয়, এখন মনে হচ্ছে আরো অনেক দলের লোককে শপথ নিতে দেখা যাবে। নির্বাচনের জন্য কেউ আর চাপ তৈরি করবে না। লম্বা সময় ধরে সরকার দেশ চালাতে পারবেন।

হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার কারণে যে-ক্ষতি হয়েছিল, বাচ্চা সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ভাবনা দিয়ে সেটি পুষিয়ে দিয়েছেন। সমস্যা অবশ্য এখন হাসিনা নিজে। ফোনআলাপ দেখে বুঝতে পারলাম,- উনার শুভবুদ্ধির উদয় হয়নি। দলের সিনিয়র কারো সাথে এখনো কোনো বিষয়ে আলাপ করেননি। চ্যাংড়া নেতাদের সাথে রক্তপাতের রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত আছেন। শেখ হাসিনা ঠাণ্ডা মাথায় আগালে এক বছরের মধ্যে দেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের ফেরত আসা সম্ভব, আর যদি ফোনালাপের মেজাজে থাকেন, ফিরে আসতে আরো ২০ বছর লেগে যাতে পারে। তখন দেশ আর দেশ থাকবে না, পাকিস্তান হয়ে যাবে। দুঃখিত, দ্রুত দুকথা বলতে চাইছিলাম, তাই পয়েন্টগুলো বলছি কেবল।

. . .

এখানে সবটাই সূক্ষ্মভাবে পরিকল্পিত

উনাকে সংস্কৃতি উপদেষ্টা করার প্রতিক্রিয়া এখন পর্যন্ত মিশ্র হাসান। একদল খুশি। তারা ভাবছে তাঁকে দিয়ে হবে। অন্যদল আবার উনি আওয়ামীপন্থী ভেবে ক্ষুব্ধ। এর পেছনে মুজিব সিনেমায় ফারুকীর সম্পৃক্তি ও সমাজমাধ্যমে শেখ মুজিবসহ আওয়ামী লীগ নিয়ে অতীত মন্তব্য মনে হচ্ছে ভূমিকা রাখছে। মোল্লাপন্থীরা ওদিকে উনাকে প্রথম আলোর লোক ও নাস্তিক ভাবছে। গতকাল রাতে এক্স হ্যান্ডেলে এরকম প্রচুর মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখলাম লোকজন দিচ্ছেন।

এমতাবস্থায় ৩২ নাম্বার সংস্কার বা এরকম যেসব কাজে উনার সাফল্যের ব্যাপারে আমি সন্দিহান। প্রতিপদে বাধার সম্মুখীন হতে হবে। বাংলাদেশে জনমত বিপজ্জনকভাবে বিভক্ত। পরস্পরের প্রতি সহনশীলতার কিছু আর অবশিষ্ট নেই। মিনিমাম সেন্স যার থাকবে তিনি রাষ্ট্রীয় কোনো দায়িত্ব ও পদপদবী নিতে চাইবেন না। নেওয়া উচিত নয়। কারণ, নিজের পরিকল্পনা মাফিক একটা কাজও করতে পারবে না। মানুষ তার আগে বারোটা বাজিয়ে দেবে।

যেসব লোক শতভাগ রাজনীতিতে সক্রিয় তারা দেশ চালাবেন;- এই ব্যাপারে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হওয়া দরকার। ভালোমন্দ যাই করুক তারা,- এই ম্যান্ডেট তাদেরকে দিতে হবে। এছাড়া দেশ গঠনের পয়লা কদমে আমরা বারবার হোঁচট খেতেই থাকব। রাজনৈতিক দলকে আস্থায় রাখা যাচ্ছে না জেনেও আস্থাটা রাখতে হবে। বাদবাকি যারা থাকবেন তারা অবজারভার ও ক্রিটিকের ভূমিকা পালন করে যাবেন। প্রেশার গ্রুপ হিসেবে রাষ্ট্র পরিচালনায় নিজেকে সক্রিয় রাখবেন তারা। রাজনীতিকের কাজের সমালোচনা করবেন, রাস্তা দেখাবেন, ভুল করলে চাপ দিবেন, যেন লাইনে আসে তারা।

প্রেশার গ্রুপ অনেকসময় বিপথগামী হয়, আমাদের এখানে অতীতে হয়েছেও, তথাপি বিভিন্ন লেভেলে যদি এটি সক্রিয় থাকে তাহলে রাষ্ট্রপরিচালনায় গতি ও জবাবদিহিতা ক্রমশ বাড়বে। রাষ্ট্রগঠনের অনেক ইস্যু নিয়েও তখন সোচ্চার থাকবে সচেতন সমাজ। গণমাধ্যম উক্ত প্রেশার গ্রুপের অন্যতম বড়ো নিয়ামক, কাজেই তাকে প্রভাবমুক্ত করাটা ভীষণ জরুরি।

যাই হোক, ফারুকীদের মতো প্রভাবশালী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরা যদি গোড়া থেকে রাজনীতিবিদ তৈরির আন্দোলন করতেন, সাংস্কৃতিকভাবে যদি করতেন,- এখন আমরা একটি সন্দেহমুক্ত ও বুদ্ধিবৃত্তিক অনুশীলনে প্রখর শিক্ষিতসমাজ পেতাম। নব্বই দশক অবধি এরকম কাঠামো কিন্তু দেশে ছিল। নীরব পক্ষপাত হয়তো আছে কিন্তু সরাসরি রাজনৈতিক দল করেন না, সরকারি পদ ও পরিতোষকের জন্য লোভী না, এবং রাজনীতি সচেতন সমাজে তার কথার গুরুত্ব ও প্রভাব রয়েছে… এরকম লোকজন দেশে ছিলেন একসময়। বাঙালি মধ্যবিত্ত সমাজ থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন তারা। ধারাটি স্তিমিত না হলে ফারুকীরা হয়তো এভাবে পদ পাওয়ামাত্র দৌড় দিতেন না। আমরা কে দেশ চালাবেন আর কে চালানোকে ক্রিটিকের আওতয়া আনবেন, মানুষকে সচেতন ও প্রয়োজনে চাপ তৈরি করবেন… এসব এখনো ঠিক করতে পারিনি। আফসোস!
. . .

Something Like An Autobiography | Chorki

ফুটনোট : হাসিনাপতনকে যারা মেটিকৌলাসলি প্ল্যানড বলে ভাবছি, তাদের অবশ্য মনে রাখা ভালো, মোস্তফা সরয়ার ফারুকীরে নিয়োগ এম্নি-এম্নি হয়নি। ওইটাও ওই সূক্ষ্মভাবে পরিকল্পিত পতন আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ঘটছে। ফারুকীর এফবি অ্যাক্টিভিটি বা ওইসময়কার বক্তব্য অনেকে এখন আমলে নিচ্ছেন। সেখানে এমনসব কথাও আছে যেগুলো বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, উনি ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে জানতেন। নিজ জায়গা থেকে অ্যক্টিভ ছিলেন ওইসময়।

উনারা এরকমই। মুজিব সিনেমায় বউকে ঢোকাবে। টাকাপয়সা কামাবে। পলককে তেল মেরে প্রজেক্টও বাগিয়ে নেবে। আবার এখন উপদেষ্টাও হবে। মেরুদণ্ড সকলের ভেঙে পড়েছে এই দেশে। আহমদ শরীফরা কখনো এই দেশে আর দেখা দিবেন না। হুমায়ুন আজাদের তো প্রশ্নই উঠছে না। নিজের প্রতি কী মর্মান্তিক অনেস্ট ছিলেন এই লোক! দেশের হালত ভালোই আঁচ করতে পারছিলেন তখর, তাই বিরামহীন বলে গেছেন মানুষকে ক্ষিপ্ত করে তোলা সব কথা। অকপটে বলতে পারতেন। যার জন্য জীবন দিতে হলো! আজাদরা বাংলাদেশে আর আসবে না কোনোদিন! আসার পথ বন্ধ করা হচ্ছে সূক্ষ্মভাবে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের সাহায্যে।

. . .

ফারুকী আদৌ কোনো কিছু করার সুযোগ পাবে? উল্লেখযোগ্য কিছু করার যোগ্যতা কি তার আছে?

স‌ত্যি বল‌লে ফরুকী এই উপদেষ্ট প্যানেলে অনেকের থেকে যোগ্য। ইউনুস সাহেবকে শিরদাঁড়া শক্ত করে যে-কোনো বিষয়ে প্রশ্ন করার ক্ষমতা উনার আছে বলে মনে হচ্ছে। কতটা কি করতে পারবেন সেটি ভিন্ন বিষয়। ৭ আগস্টের সেই ভয়ঙ্কর সময়েও তাঁর যৌ‌ক্তিক পোস্ট কিন্তু সেই ইঙ্গিত দেয়। উপদেষ্টা প্যানেলের বা‌কিরা আমলা, NGO কর্মী, আর মধ্যমেধার শিক্ষক। জ্বি স্যারের বে‌শি কিছু করার ক্ষমতা নেই।

. . .

প্রশ্নটা যোগ্যতার নয় বেলাল ভাই,- প্রিফারেন্সের। রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব কান্ধে বহনের আগে নিজেরে কতকগুলা প্রশ্ন করা উচিত। যেমন ধরেন, ১.. যে-কাজে আমারে ডাকা হইতেছে তার জন্য আমি মানসিকভাবে প্রস্তুত আছি কি? ২.. কাজটি কীভাবে করব আমি? ৩.. ওইটা করার পথে সম্ভাব্য অন্তরায় কী হইতে পারে এবং কীভাবে ট্যাকল দিবো? এবং ৪.. আমার কি আদৌ ওই কাজে যাওয়া উচিত হবে?

শেষ প্রশ্নটা ফারুকীর মতো মানুষের জন্য জরুরি। উনি সরাসরি রাজনীতির মানুষ না। সংস্কৃতিকর্মী ও নাগরিক হিসেবে উনার হয়তো দেশ নিয়া অবজারভেশন আছে। ভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি আছে। ফিলোসফিও থাকতে পারে। এখন এর কোনোটাই আমার ধারণা, আপনাকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের উপযুক্ত বইলা প্রমাণ করে না।

রাষ্ট্র একটি রাজনৈতিক কাঠামোর ভিতর দিয়া বিকশিত হয়। যেইটা আবার দেশের সকল জনগণের কাছে কোনো-না-কোনোভাবে দায়বদ্ধ। ফারুকী যখন দায়িত্ব নিবেন তখন উনি জনগণের প্রতিনিধি, জনগণের সঙ্গে সম্পাদিত সামাজিক চুক্তির অধীন, কাজেই উনার প্রতিটি পরিকল্পনা ও অ্যাকশনে এখন থেকে সবাই চোখ রাখবে। ভালোমন্দ সমানে বলবে। এগুলা উনি যদি ট্যাকল দিতে পারে তাইলে ঠিক আছে। না পারলে ব্যর্থ।

হাসানের পোস্টের উত্তর একথাগুলাই অন্যভাবে বলছি আগে। তার খণ্ডাংশ নিচে কোট করি, তার মধ্যে আপনার প্রশ্নের জবাব হয়তো নিহিত আছে।
. . .
যেসব লোক শতভাগ রাজনীতিতে সক্রিয় তারা দেশ চালাবেন;- এই ব্যাপারে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হওয়া দরকার। ভালোমন্দ যাই করুক তারা,- এই ম্যান্ডেট তাদেরকে দিতে হবে। এছাড়া দেশ গঠনের পয়লা কদমে আমরা বারবার হোঁচট খেতেই থাকব। রাজনৈতিক দলকে আস্থায় রাখা যাচ্ছে না জেনেও আস্থাটা রাখতে হবে। বাদবাকি যারা থাকবেন তারা অবজারভার ও ক্রিটিকের ভূমিকা পালন করে যাবেন। প্রেশার গ্রুপ হিসেবে রাষ্ট্র পরিচালনায় নিজেকে সক্রিয় রাখবেন তারা। রাজনীতিকের কাজের সমালোচনা করবেন, রাস্তা দেখাবেন, ভুল করলে চাপ দিবেন, যেন লাইনে আসে তারা।

ফারুকীদের মতো প্রভাবশালী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিরা যদি গোড়া থেকে রাজনীতিবিদ তৈরির আন্দোলন করতেন, সাংস্কৃতিকভাবে যদি করতেন,- এখন আমরা একটি সন্দেহমুক্ত ও বুদ্ধিবৃত্তিক অনুশীলনে প্রখর শিক্ষিতসমাজ পেতাম। আমরা কে দেশ চালাবেন আর কে চালানোকে ক্রিটিকের আওতায় আনবেন, মানুষকে সচেতন ও প্রয়োজনে চাপ তৈরি করবেন… এসব এখনো ঠিক করতে পারিনি। আফসোস!

. . .

ফারুকীর চেয়া‌রে থাকার জন্য আকু‌তি শুরু…

. . .

লাস্ট ডিফেন্ডারস অব মনোগামি
. . .
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নিজেকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে আরেকটা বড়ো ভুল করলেন। উনার প্রথম ভুল, সংস্কৃতি উপদেষ্টার দায়িত্ব গ্রহণ। দ্বিতীয় ভুল, বিতর্কের মুখে নিজেকে ক্লিয়ার করছেন ভেবে এই বিবৃতি। উনার রাজনৈতিক পরিপক্কতা জিরো লেভেলের ধরে নিতে বাধ্য হচ্ছি।

যে নিজের কাছে সৎ তার আসলে এই ধরনের বিবৃতির প্রযোজন পড়ে না। বিতর্কের মুখে উনার জন্য ভালো ছিল আপাতত চুপ থাকা এবং যে-দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন সেদিকে মনোনিবেশ করা। জল কোনোদিকে গড়াচ্ছে সেটি বুঝে দু-একদিন পর ক্লারিফাই করতে পারত। তাৎক্ষণিক এই-যে বিবৃতি দিয়েছেন সেখানে উনাকে দৃঢ়চিত্তের একজন মানুষ বলে মনে হচ্ছে না। পিনাকীর সঙ্গে তাল দিয়ে উনাকে পচানোর মিশনে সক্রিয় সেয়ানা পলিটিশিয়ানগুলার মুখবাজি শুনে বেচারা ঘাবড়ে গেছে। বিবৃতির ভাষায় নার্ভাস ব্রেকডাউনের ছাপ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি। পুওর ফ্যালা! জায়গাটা আপনার না ভাই। মান-সম্মান থাকতে কাট্টি মারেন।

দ্বিতীয় ভুল হলো, উনি অলরেডি আওয়ামী লীগের ওয়াচলিস্টে চলে গেছেন। জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেপথ্য সৈনিক হিসেবে উনার আমলনামা তারা হিসাবের খাতায় টুকে রাখছে। তার মধ্যে আজকের বিবৃতিতে স্নায়ুচাপ সামলাতে না পেরে মারাত্মক একটা পয়েন্ট নিজে গড়গড় করে বলে দিয়েছেন। কী সেটি? সেটি হলো, শাহবাগী গণজাগণের আগে-পরের সময় থেকে উনি সরকার পতনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন। সরকারকে কীভাবে নামানো যায় তার জন্য আমেরিকান ক্লাবে গিয়ে জনৈক আরিফ আর হোসাইনের সঙ্গে শলাপরামর্শ করতেন ইত্যাদি।

এখন ভবিষ্যতে আওয়ামীরা যদি আসে উনাকে দুইটা কেসে ফাঁসাবে। এক নাম্বার : জুলাই আন্দোলনে উনার ভূমিকা; দুই নাম্বার : শাহবাগী আন্দোলনের আগে-পরে সরকারে স্যাবোটাজ ঘটানোর অন্যতম আসামি রূপে ভূমিকা। এখন নিজে তো ফাঁসলেন ভালো কথা। বেচারা আরিফ আর হোসাইনকেও ফাঁসালেন। ওই ভদ্রলোক যদি বুদ্ধিমান হয় উনারে পাইলে জুতা দিয়া পিটাবে।

যাই হোক, আমাদের দেশে সংস্কৃতিসেবীরা মোটা দাগে মেরুদণ্ডহীন প্রাণী। নিজেকে চালাক ভাবলেও তারা আসলে বোকাসোকা মানুষ এক-একজন। ফারুকী ঐতিহ্যটা ধরে রেখেছেন। উনার ক্রেডিবিলিটি, সত্যি কথা বললে, সরকারে ভিতরে যেমন এখন থাকবে না, আওয়ামীদের কাছে থাকার প্রশ্নই আসে না। এরকম ভঙ্গুর বলেই উনার সিনেমা একটা কোথাও যাইতে চায় কিন্তু শেষতক যাইতে পারে না। উনার ওই লাস্ট ডিফেন্ডারস অব মনোগামি ছবিখানার মতো। এইটাকে উনার বায়োপিক বইলা আমি সাব্যস্ত করিলাম।
. . .

Last Defenders of Monogamy | Official Trailer | Chorki

. . .

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

Average rating 0 / 5. Vote count: 0

No votes so far! Be the first to rate this post.

Contributor@thirdlanespace.com কর্তৃক স্বত্ব সংরক্ষিত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *