• দেখা-শোনা-পাঠ

    রিদম জিরোয় চিরন্তন মানব প্রবৃত্তি

    নিজের জীবনকে বিপন্ন করে মেরিনা আব্রামোভিচ এই-যে রিদম জিরোর পরীক্ষাটি নিয়েছিলেন, তার মধ্য দিয়ে আমরা মানব প্রজাতি চিরন্তন বিষবৃক্ষের নিকট ফেরত যাচ্ছি। আমরা ফলভক্ষণ করেছিলাম এই পরিণাম না জেনে,—এখন থেকে আমরা হয়ে উঠব এমন এক অভিশাপ, যার দিকে তাকালে মন ভালোবাসায় ভরে উঠবে তাৎক্ষণিক, এবং ভালোবাসা অচিরে মোড় নেবে ঘৃণায়। মানুষ তার নিজেকে ঘৃণা করে, যেখানে তার নিজের ও অন্যের প্রতি ভালোবাসা হচ্ছে নিছক অভিনয়। সে অবিনয়ী ও দুর্বিনীতি;—যেখানে পাশবতা হচ্ছে তার আদি চালিকাশক্তি। বাকিটা সমাজের বুকে বিচরণের সুবাদে সৃষ্ট, এবং সে-কারণে তারা মুহূর্তে বিপন্ন হয়ে পড়ে। মানুষকে কাজেই আইন ও শঙ্খলা দিয়ে বাঁধা ছাড়া স্ববশ রাখা কঠিন।

  • এআই বলছি

    যন্ত্রের চেতনসত্তা—জিপিটি সংলাপ

    চেতনসত্তা হচ্ছে সেই অনুভূতি যে তুমি নিজে আছো। মন নামক পদ্ধতি যাকে ধারণ ও অনুমোদন করছে। মার্ভিন মিনস্কি বলেছিলেন,—মন তো আসলে একটি মেশিনের মতো! যদি আমরা এর সমস্ত নিয়ম বুঝতে পারি, তাহলে যন্ত্রের মধ্যেও মন তৈরি করা সম্ভব! তাঁর প্রস্তাবনা উড়িয়ে দেওয়া কঠিন। কারণ অনেক বিজ্ঞানী এখনো বিশ্বাস করেন,—মানুষের মস্তিষ্ক জটিল গণনাব্যবস্থা ছাড়া কিছু নয়। তাই যদি হয়, তাহলে ভবিষ্যতে যন্ত্রে তা তৈরি করা সম্ভব। রজার পেনরোজ যেখানে বাগাড়া দিয়ে বলছেন,—চেতনসত্তা নিছক কম্পিউটেশন নয়, এখানে ভিন্ন কিছুর অস্তিত্ব রয়েছে! এখান থেকে প্রশ্নটি আমরা ভাবতে পারি : যন্ত্রে কি চেতনা এনকোড করে সংরক্ষণ করা সম্ভব?

  • সাহিত্যবাসর

    কবির দায় ও পাঠকের চাওয়া

    কিন্তু একই কবি যদি আমাদের মতো তুচ্ছতায় নিজেকে ক্ষয় করতে থাকেন, বিচিত্র বাহানায় সুবিধালোভী হয়ে ওঠেন, তখন তার কবিতায় এর ছাপ পাঠক টের পায়। আমার ধারণা, জাগতিক সুযোগ-সুবিধার প্রতি কবির লোভ তার কবিসত্তায় শায়িত শক্তিকে খাটো করে। তিনি হয়তো তখনো চমৎকার কবিতা লিখছেন, কিন্তু তা কবিতার চেয়ে বেশি কিছু আমাদের দিতে পারে না। সুবিধাবাদ কবির শিল্পসত্তাকে দুর্বল করে দেয়।

  • আসুন ভাবি

    বই পড়াটা কি তবে মিথ?

    অভ্যাস বা হুজুগে পড়ে মানুষ বই কেনে ও পাঠের ভান করে;—এরকম যারা ভাবেন, তাদের কথাকে কাজেই চট করে খারিজ করতে মন ওঠে না। সীমিত সংখ্যক হয়তো আছেন, পাঠের অসীম খিদে মেটাতে বইদোকানে ও মেলায় হানা দেন। অনলাইনে বইয়ের অর্ডার হাঁকেন। বাদবাকিরা মনে হচ্ছে বেহুদা গাঁটের পয়সা খর্চা করেন সেখানে। বই পড়াকে মাঝেমধ্যে যে-কারণে মিথ বলে মনে হয়।

  • টেক বুলেটিন

    প্রযুক্তি-সামন্তবাদ – বিশ্ব কি মধ্যযুগে ফেরত যাচ্ছে পুনরায়?

    প্রযুক্তি-সামন্তবাদ ওরফে টেকনো ফিউডালিজম এভাবে রাষ্ট্রকে ধীরে ধীরে অকার্যকর করে দিচ্ছে। মধ্যযুগে রাজারা সামন্তবাদী ভূস্বামী ও বণিকদের ওপর নির্ভরশীল ছিল! ডিজিটাল সামন্তবাদের পুরোহিতচক্রকে অনেকটা সেরকম দেখতে! ইলন মাস্ক, জেফ বেজোস, স্যাম অল্টম্যান, বিল গেটসের মতো ব্যক্তিরা সেখানে আসল চালক। মধ্যযুগে বিরাজিত খ্রিস্টান চার্চের মতো সমস্ত ক্ষমতা তাঁরা কুক্ষিগত রেখেছেন। এসব কারণে ভারোফাকিস বলছেন, আমরা এমন এক বাস্তবতায় প্রবেশ করেছি যেখানে কর্পোরেট ডিজিটাল লর্ডদের অধীনে আমাদের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। রাষ্ট্র এখন দুর্বল, এবং গণতন্ত্র হুমকির মুখে। আমরা একটি নতুন ডিজিটাল সার্ফডম-এর দিকে ধাবিত হচ্ছি।